পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এ কে এম ফজলুর রহমান মুনশী
আল্লাহ পাকের অসীম করুণা ও দয়া
সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা পরম কৌশুলী আল্লাহ পাকের করুণার শেষ নাই, দয়া ও অনুগ্রহের অন্ত নাই। তিনি সিয়াম সাধনার ক্ষেত্রে ও মুসাফির, গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারীদের প্রতি অনুকম্পার দ্বার সুপ্রশস্ত করে দিয়েছেন। এই শ্রেণীর লোকেরা মাহে রমজানের রোজা নির্ধারিত দিনগুলোতে না রেখে পরবর্তী সময়ে কাজা আদায় করতে পারেন। হযরত আনাস বিন মালেক আলকাবি (রা:) বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর বাহিনী আসার গোত্রের ওপর আক্রমণ করেছিল। তখন আমি রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর খেদমতে হাজির হলাম।
তখন তিনি খানা খাচ্ছিলেন। তিনি বললেন, কাছে এসো, বসো, খাও। আমি বললাম : আমি রোজাদার। তিনি বললেন, বসো আমি তোমাকে রোজা অথবা সিয়াম সম্পর্কে বলছি। মহান আল্লাহ তায়ালা মুসাফির থেকে অনেক সালাত হ্রাস করেছেন। আর মুসাফির, গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারীদের জন্য রোজা অথবা সিয়াম স্থগিত করেছেন। বর্ণনাকারী বলেন, হায় আফসোস। সেদিন যদি আমি রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর খানা থেকে কিছু অংশ ভক্ষণ করতাম! (সুনানে আবু দাউদ : হাদিস নং- ২৪০৮, মুসনাদে আহমদ : খ- ৪, পৃষ্ঠা ৩৪৭; জামে তিরমিজী : হাদিস নং-৭১৫, সুনানে ইবনে মাজাহ : হাদিস নং-১৬৬৭; তাবরানী ফিলকাবীর : খ- ১, পৃষ্ঠা ২৬৩; হাদিস নং-৭৬৫, বায়হাকী : খ- ৪ পৃষ্ঠা ২৩১)
উপরোক্ত হাদিস থেকে জানা যায় যে, মহান আল্লাহ পাক মুসাফিরের জন্য রোজা ভঙ্গ করা ও নামাজ কসর করা বৈধ করেছেন। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে রুখমত। আল্লাহ পাক যেমন আজিমত পছন্দ করেন তেমনি রুখমতও তাঁর পছন্দনীয় বিষয়। গর্ভবতীর জন্য আল্লাহ পাক রমজানে সিয়াম সাধনা স্থগিত করে দিয়েছেন। কারণ গর্ভে বিদ্যমান শিশু মায়ের খাদ্য থেকে খাবার গ্রহণ করে। মা যদি সিয়াম পালন করে, তবে তার কষ্ট হতে পারে বা তার ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আল্লাহ পাক তার থেকে সিয়াম স্থগিত করেছেন। সে সময়-সুযোগ মতো তা কাজা আদায় করে নেবেন। অনুরূপভাবে স্তন্যদানকারীর ওপর থেকেও মহান আল্লাহ পাক সিয়াম স্থগিত করে দিয়েছেন। কারণ স্তন্যদানকারী মায়ের বারবার খাবার গ্রহণ করা জরুরি। অন্যথায় তার বা তার সন্তানের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। মোটকথা, গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী যদি নিজের জানের ভয়, অথবা নিজের ও সন্তানের ক্ষতির ভয়ে সিয়াম ভঙ্গ করে, তাহলে তাদের শুধু কাজা আদায় করাই যথেষ্ট। এতে কারো দ্বিমত নেই। কারণ তারা অসুস্থ ব্যক্তিদের ন্যায়। অসুস্থ ব্যক্তিদের সিয়াম পালন সম্পর্কে আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে : ‘তোমাদের মধ্যে কেউ পীড়িত হলে বা সফরে থাকলে অন্য সময় এই সংখ্যা পূরণ করে নিতে হবে। (সূরা বাকারাহ : আয়াত ১৮৪) সুতরাং মুসাফির, গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারীগণ আল্লাহ পাকের দেয়া সুবিধা ভোগ করবে। এর কোনো ব্যত্যয় হবে না। (আল মুগলী : খ- ৪, পৃষ্ঠা ৩৯৩-৩৯৪; জামিয়াতুল উকবা : পৃষ্ঠা ২১১-২১৪)।
যদি কোনো রোজদারের জ্বলন্ত ব্যক্তিকে বাঁচানো, পানিতে নিমজ্জিত ব্যক্তিকে উদ্ধার করা অথবা নিষ্পাপ শিশুকে মুক্ত করার জন্য সিয়াম ভঙ্গ করা জরুরি হয়ে পড়ে, তবে সে রোজা ভঙ্গ করতে পারবে এবং গর্ভবতী, স্তন্যদানকারী ও অসুস্থ ব্যক্তির ন্যায় উক্ত রোজার কাজা আদায় করবে। (আশশারহুল মুফতি : খ- ৬, পৃষ্ঠা ৩৫০-৩৫১; মুসতাকা মীন ফাতাওয়া : খ- ৩, পৃষ্ঠা ১৪১।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।