Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুবারক হো মাহে রমজান

প্রকাশের সময় : ২১ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এ কে এম ফজলুর রহমান মুনসী
সফরে রোজা ভঙ্গ করার বিধান
রহমত, মাগফেরাত ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও নিষ্কৃতি লাভের মাস মাহে রমজান। এই মাসে সফর করা বৈধ। পিয়ারা নবী তাজ দায়ের দো আলম (সা.) মক্কা বিজয়ের বছর রমজান মাসে সফর করেছেন। (আত্্তামহিদ : খ- ২২, পৃষ্ঠা ৪৮)। ইসলামী শরীয়তে মুসাফির ওই ব্যক্তিকে বলা হয় যিনি স্থায়ী বসবাসের স্থান থেকে কমপক্ষে ৪৮ মাইল দূরত্বের স্থানে ভ্রমণ করার জন্য বের হন। সফরের নিয়তকারী ব্যক্তির মুমিন অবস্থায় রোজা ভঙ্গ করা বৈধ নয়। যতক্ষণ না সে সফর আরম্ভ করে বা যানবাহনে আরহণ করে ততক্ষণ সে মুসাফির বলে গণ্য হবে না। আত্্তামহীদ : খ- ২২, পৃষ্ঠা ৪৯; তাহযিবুস সুনান : খ- ৩, পৃষ্ঠা ২৮৪ : শারহু ইবসুল মুলাকিন : খ- ৫, পৃষ্ঠা ২৬৮-২৭২) যদি কেউ আগামীকাল সফর করবে এমন নিয়ত করে, সে রাত থেকে রোজা ভঙ্গ করার নিয়ত করবে না। কারণ শুধু নিয়ত দ্বারা মুসাফির হয় না, যতক্ষণ না সে সফর আরম্ভ করে। (আত্তামহিদ : খ- ২২, পৃষ্ঠা ৪৯)।
মুসাফির রোজা রাখা ও ভঙ্গ করার ক্ষেত্রে ইচ্ছাধীন তার পক্ষে যা সহজ তাই সে পালন করবে। এটাই সুন্নাত। সফরে যার পক্ষে রোজা রাখা কষ্টকর তার জন্য রোজা না রাখা উত্তম। আর যার পক্ষে কাজা আদায় করা কষ্টকর, সফরে রোজা রাখা কষ্টকর নয়। তার জন্য সফরে রোজা রাখা উত্তম। আর যে ব্যক্তি লাগাতার সফর করে অথবা অধিকাংশ সময় সফরে থাকে, চাকরি বা পেশাধারীর জন্য সফর করতে হয়, তার পক্ষে সফরে রোজা রাখা উত্তম, যদি কষ্ট না হয়। আর যদি সফরকালে রোজার কাজার সময় না মেলে, যেমন যাদের সারা বছর সফরে অতিবাহিত হয়, তাদের পক্ষে সফরে রোজা রাখা ওয়াজিব। বস্তুত, সফরে রোজা রাখা ও রোজা ভঙ্গ করা উভয়টিই প্রিয়নবী (সা.) থেকে প্রমাণিত। যখন যার দাবি ছিল তিনি তখন তা-ই করেছেন। যেমন হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, একদা হামজা ইবনে আমর আসলামি (রা.) পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহকে (সা.) বললেন, আমি কি সফরে রোজা রাখব? তার রোজা রাখার খুব অভ্যাস ছিল। তিনি বললেন, যদি চাও রাখো, অন্যথায় ইফতার কর। (সহীহ বুখারী : হাদীস নং ১৮১৪; সহীহ মুসলিম : হাদীস নং ১১২১)।
হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) রমজানে সফর করে রোজাবস্থায় উসফান নামক স্থানে পৌঁছেন। তারপর পানির পাত্র চেয়ে নিলেন ও দিনে পান করলেন, যেন লোকেরা তাকে দেখে। তিনি ইফতার করে মক্কায় আগমন করেন। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলতেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) সফরে রোজা রেখেছেন ও ইফতার করেছেন। সুতরাং যার ইচ্ছা রোজা রাখো, যার ইচ্ছা রোজা ভঙ্গ কর। (সহীহ বুখারী) : হাদীস নং ৪০২৯; সহীহ মুসলিম : হাদীস নং ১১১৩)। হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাথে সফর করতাম। রোজাদার রোজাভঙ্গকারীকে বা রোজাভঙ্ককারী রোজাদারকে কোনো তিরস্কার করেননি। হজরত আবু সাঈদ খুদবী (রা.) বর্ণনা করেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর মাসে রমজানে যুদ্ধ করতাম। আমাদের মধ্যে কেউ হতো রোজাদার কেউ হতো রোজাভঙ্গকারী। রোজাদার রোজাভঙ্গকারীকে ও রোজাভঙ্গকারী রোজাদারকে তিরস্কার করত না। তবে তারা মনে করত, যার শক্তি আছে সে রোজা রাখবে। এটা তার জন্য উত্তম। আর যে দুর্বল সে রোজা ভাঙবে, এটা তার জন্য ভালো। সহীহ মুসলিম : হাদীস নং ১১১৬, জামে তিরমিজী : হাদীস নং ৭১৩; মুসনাদের আহমাদ : খ- ৩, পৃষ্ঠা ১২)।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুবারক হো মাহে রমজান
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ