পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এ কে এম ফজলুর রহমান মুনসী
সাহরী খাওয়ার ফজিলত
দৈহিক শক্তি সঞ্চয়ের জন্য পানাহার করা একান্ত অপরিহার্য ব্যাপার। রোজাদার সিয়াম সাধনার মানসে রাতের শেষাংশে যা কিছু পানাহার করেন, তাকে সাহরী বলা হয়। সাহরী আল্লাহর পক্ষ হতে রুখসত ও বরকত। এ জন্য আল্লাহর শোকর আদায় করা প্রত্যেক রোজাদারেরই উচিত। রুখসত কথাটির ব্যাখ্যা হচ্ছে এই যে, রোজাদারকে আল্লাহপাক সুবহে সাদেক পর্যন্ত পানাহার গ্রহণের অনুমতি প্রদান করেছেন। আর রুখসত কথাটির মর্ম হচ্ছে এই যে, আল্লাহপাক সাহরী ভক্ষণকারীদের ওপর রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতাগণ তাদের জন্য ইস্তেগফার করেন। (কাসিদাহ : ইবনুল কাইয়্যেম, পৃষ্ঠা ২০; ফাতহুল বারী : খ--১১, পৃষ্ঠা ১৫৬, ফায়জুল কাদির : খ--৩, পৃষ্ঠা-১৩৭) রাসূলল্লাহ (সা.) সাহরী ত্যাগ করতে নিষেধ করেছেন। সামান্য বস্তু দ্বারাও সাহরী খাওয়া
যায়। যদিও তা এক ঢোক পানি হোক না কেন। তিনি এ কথাও বলেছেন যে, খেজুর হলো উত্তম সাহরী।
এ প্রসঙ্গে হযরত আবু সাঈদ খুজরী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সাহরী বরকতময় খাদ্য, তোমরা তা ত্যাগ করো না। যদিও তোমাদের কেউ এক ঢোক পানি গলাধঃকরণ করে। কারণ আল্লাহপাক সাহরী ভক্ষণকারীদের ওপর রহমত বর্ষণ করেন ও ফেরেশতাগণ তাদের জন্য ইস্তেগফার করেন। (মুসনাদের আহমাদ খ--৩, পৃষ্ঠা-১২; জামে সগীয় : হাদীস নং-৪৮০১) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে হারেস রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জনৈক সাহাবী থেকে বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট আগমন করলে তখন তিনি সাহরী গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বললেন, নিশ্চয় সাহরী বরকতময়। আল্লাহপাক তা তোমাদের দান করেছেন। অতএব তোমরা তা ত্যাগ করো না। মোসনাদে আহমাদ : খ--৫, পৃষ্ঠা-৩৭০; সুনানে নাসাঈ : খ--৪, পৃষ্ঠা-১৪৫; সহীহুল জামে : হাদীস নং-১৬৩৬) হযরত আবু সাঈদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘হে আল্লাহ! সাহরী ভক্ষণকারীদের ওপর রহমত বর্ষণ করুন।’ এতদ সম্পর্কে ওবাদা দিন নাসি বলেন : মুখে মুখে এই কথাটি প্রচলিত ছিল, ‘সাহরী খাও, যদিও পানি দ্বারা হয়, কারণ একথা প্রসিদ্ধ ছিলÑসাহরী বরকতের খানা।’ (ইবনে আবি হাতেম : আল আহাদ ওয়াল মাসানী : হাদীস নং-২৭৫৮; বাযযার : পৃষ্ঠা-৯৭৪; তাবরানী : খ--২২, পৃষ্ঠা-৩৩৭, হাদীস নং-৮৪৫; মুখতাসার যাওয়ায়েদে মুসনাদিল বাসযার : পৃষ্ঠা ৬১১) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : ‘নিশ্চয় আল্লাহপাক সাহরী ভক্ষণকারীদের ওপর রহমত প্রেরণ করেন ও তার ফেরেশতাগণ তাদের জন্য ইস্তেগকার করেন।’ (সহীহ ইবনে হিব্বান : হাদীস নং-৩৪৬৭; আবু নাঈম : হিলইয়া, খ--৮, পৃষ্ঠা-৩২০; সিলসিলাতুস্্ সহীহা : হাদীস নং-১৬৮৪)। হযরত আবু হুয়ায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : ‘খেজুর মুমিনদের জন্য উত্তম সাহরী।’ (সুনানে আবু দাউদ : হাদীস নং-২৩৪৫; বায়হাকী : খ--৪, পৃষ্ঠা-২৩৬; সহীহ ইবনে হিব্বান : হাদীস নং ৩৪৭৫)। হযরত আমর ইবনে আস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : ‘আমাদের রোজা ও আহলে কিতাবীদের রোজার পার্থক্য হচ্ছে সাহরী ভক্ষণ করা।’ সহীহ মুসলিম : হাদীস নং-১৯৬)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।