Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুবারক হো মাহে রমজান

প্রকাশের সময় : ২৬ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এ.কে.এম ফজলুর রহমান মুন্সী
একুশের রাতে লাইলাতুল কদর তালাশ করা
আজ ২০ রমজান। আজকের দিবাগত রাতটিই হলো ২১ রমজানের রাত। এ রাতটি বেজোড় তারিখসমূহের প্রথম রাত। এরাতে লাইলাতুল কদর তালাশ করা একান্ত দরকার। এ প্রসঙ্গে আবু সালামা ইবনে রহমান থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমরা লাইলাতুল কদর সম্পর্কে আলোচনা করলাম। তারপর আমি আবু সাঈদ খুদরী (রা:)-এর নিকট গেলাম। তিনি আমার একান্ত বন্ধু ছিলেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, চলুন না খেজুর বাগানে গমন করি? তিনি বের হলেন। গায়ে ছিল উলের কালো চাদর। আমি জানতে চাইলাম, আপনি কি রাসূলুল্লাহ (সা:)-কে লাইলাতুল কদর সম্পর্কে কিছু বলতে শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আমরা প্রিয়নবী (সা:) এর সাথে রমজানের মধ্যদশম ইতিকাফ করলাম। তিনি একুশের সকালে বের হয়ে আমাদেরকে খুতবা দিলেন। তিনি বললেন, “আমি লাইলাতুল কদর দেখেছি। কিন্তু আমি তা ভুলে গেছি অথবা আমাকে তা ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। সুতরাং তোমরা তা শেষ দশকের প্রত্যেক বেজোড় রাতে তালাশ কর। আমাকে দেখানো হয়েছে আমি মাটি ও পানিতে সেজদাহ করছি। যে রাসূলের সাথে ইতিকাফ করেছিল সে যেন ফিরে আসে।” তিনি বলেন, আমরা ফিরে গেলাম কিন্তু আকাশে কোন মেঘ দেখিনি। তিনি বলেন, মেঘ আসলো ও আমাদের উপর বর্ষিত হলো। মসজিদের ছাদ টপকে বৃষ্টির পানি পড়ল। ছাদ ছিল খেঁজুর পাতার। সালাত কায়েম হলো, আমি রাসূলুল্লাহ (সা:) কে দেখলাম, পানি ও মাটিতে সেজদাহ করছে। তিনি বলেন, আমি তার কপালে পর্যন্ত মাটির দাগ দেখেছি। (সহীহ বুখারী: হাদীস নং-১৯১২; সহীহ মুসলিম ঃ হাদীস নং-১১৬৭)।
আবু সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত অপর এক বর্ণনায় আছে, তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর সাথে মধ্যম দশক ইতিকাফ করেছি। যখন বিশ রমজানের সকাল হলো আমরা আমাদের বিছানাপত্র স্থানান্তর করলাম। তারপর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমাদের নিকট আসলেন। তিনি বললেন, যে ইতিকাফ করেছিল সে যেন তার ইতিকাফে ফিরে যায়। কারণ আমি আজ রাতে (লাইলাতুল কদর) দেখেছি। আমি দেখেছি, আমি পানি ও মাটিতে সেজদাহ করছি। যখন তিনি তার ইতিকাফে ফিরে যান, তখন আকাশ অশান্ত হয়ে গেলো। ফলে, আমাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষিত হলো। সে সত্তার শপথ! যে তাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, সে দিন শেষে আকাশ অশান্ত হয়েছিল। তখন মসজিদ ছিল চালাঘর ও মাচার তৈরী। আমি তাঁর নাক ও নাকের ডগায় পানি ও মাটির আলামত দেখেছি। (সহীহ বুখারী ঃ হাদীস নং ১৯৩৫; সহীহ মুসলিম: হাদীস নং ১১৬৭)।
অপর এক বর্ণনায় আছে আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মধ্যম দশম ইতিকাফ করতেন। যখন তিনি প্রস্তানরত বিশের রাতে সন্ধ্যা করে একুশের রাতে পদার্পণ করতেন নিজ ঘরে ফিরে যেতেন। সে তাঁর সাথে ইতিকাফ করতো সেও ফিরে যেতো। তিনি কোন এক রমজান মাসে যে রাতে সাধারণতঃ ইতিকাফ করে ফিরে যেতেন সে রাতে ফিরে না গিয়ে ফিয়াম করলেন। তারপর খুতবা প্রদান করলেন। আল্লাহর যা ইচ্ছা ছিল তাই তিনি লোকদের নির্দেশনা করলেন। অতঃপর বললেন, আমি এ দশক থেকে ইতিকাফ করতাম। অতঃপর আমার নিকট স্পষ্ট হলো যে, আমি ইতিকাফ করব এ শেষ দশক। অতএব, যে আমার সাথে ইতিকাফ করেছে, সে যেন তার ইতিকাফ বহাল রাখে। আমাকে এ রাত্রে (লাইলাতুল কদর) দেখানো হয়েছিল। অতঃপর তা ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। তোমরা তা তালাশ কর শেষ দশকে। আর তালাশ কর বেজোড় রাতে। আমি দেখেছি, আমি পানি ও মাটিতে সেজদাহ করছি। সে রাতে আকাশ গর্জন করে বৃষ্টিবর্ষণ করল। একুশের রাতে রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর সালাতের জায়গায় মসজিদে ফোটা ফোটা বৃষ্টিতে পানি ফেলল। আমার দু’চোখ রাসূলুল্লাহ (সা:)-কে দেখেছে। আমি তাঁর দিকে দৃষ্টি দিলাম। তিনি সকালের সালাত থেকে ফিরলেন। তখন তাঁর চেহারা মাটি ও পানি ভর্তি ছিল। (সহীহ বুখারীঃ হাদীস নং-১৯১৪)।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুবারক হো মাহে রমজান
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ