Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুবারক হো মাহে রমজান

প্রকাশের সময় : ৩০ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্্শী
পঁচিশে রমজান লাইলাতুল কদর তালাশ করা
আজ চব্বিশ রমজান। অদ্য দিবাগত রাতটি পঁচিশে রমজানের বিজোড় রাত। এই রাতে লাইলাতুল কদর হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই এই রাতে বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগী করা সকল মুসলমানেরই উচিত।
হযরত আবু হুরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন : ‘লাইলাতুল কদরে যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের আশায় কিয়াস বা রাত্রি জাগরণ করবে, তার পূর্বের সকল পাপ মোচন করা হবে।’ (সহীহ বুখারী : অনুচ্ছেদ ৩৫; সহীহ মুসলিম : পৃষ্ঠা ৭৬০)। এই হাদীসটি অন্য শব্দ সহযোগে এভাবে বর্ণিত আছে। রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন : লাইলাতুল কদরে যে ব্যক্তি ঈমানসহ সওয়াবের আশায় রাত্রি জাগরণ করবে, তার পূর্বের সকল পাপ মোচন করা হবে।’ (সহীহ বুখারী : হাদীস নং-১৮০২; সহীহ মুসলিম : হাদীস নং-৭৬০)। হযরত আবু হুরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা: লাইলাতুল কদর সম্পর্কে বলেছেন : লাইলাতুল কদর সাতাশ অথবা ঊনত্রিশের রাত, সে রাতে পৃথিবীতে ফেরেশতাদের সংখ্যা কঙ্করের চেয়ে অধিক হয়। (মোসনাদে আহমাদ : খ--২, পৃষ্ঠা-৫১৯; তায়ালিসি : হাদীস নং-২৫৪৫; সহীহ ইবনে মুযাই-মাহ হাদীস নং-২১৯৪)। সুতরাং মুসলমানদের উচিত লাইলাতুল কদর তালাশ করা। এ জন্য শেষ দশকের বেজোড় রাতসমূহে কিয়াস, সালাত, দোয়া ও যিকরে অধিক মশগুল থাকা জরুরি। মাহরূম বা বঞ্চিত ব্যতীত কেউ ফজিলতপূর্ণ এই রাত থেকে গাফেল থাকে না। এই রাতে যে কিয়াস করল ও জাগ্রত থাকল সে অবশ্যই আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাতের উপযুক্ত হলো। এই রাতে অধিক পরিমাণ আজাব থেকে নিরাপত্তা নাজিল হয়। কারণ, এতে বান্দাহগণ অধিক পরিমাণ ইবাদত করে। যার ফলে আল্লাহ পাক তাদেরকে রহমত, মাগফিরাত ও জাহান্নাম থেকে মুক্তিদান করেন।
হযরত উবাদাহ ইবনে সামেত (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ সা: আমাদেরকে লাইলাতুল কদরের সংবাদ দেয়ার জন্য বের হয়েছেন। অতঃপর দু’জন মুসলিম ঝগড়ায় লিপ্ত হলো। তিনি বলেন : আমি তোমাদেরকে লাইলাতুল কদরের সংবাদ দেয়ার জন্য বের হয়েছি। কিন্তু অমুক অমুক ঝগড়া করল, ফলে তা উঠিয়ে নেয়া হয়। খুব সম্ভব এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। তোমরা তা নবম, সপ্তম ও পঞ্চম রাতে তালাশ কর। (সহীহ বুখারী : হাদীস নং -১৯১৯; নাসাঈ ফিল কুবরা : হাদীস নং-৩৩৯৪; মুসনাদে আহমাদ : খ--৫, পৃষ্ঠা-৩১৩)।
হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা:) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ সা: লাইলাতুল কদর অন্বেষণে রমজানের মধ্যম দশক ইতিকাফ করেন, যখন তা প্রকাশ করা হয়নি। যখন ইতিকাফ শেষ হয়, তিনি তাঁবু ওঠানোর নির্দেশ দেন। অতঃপর তাকে বলা হয়Ñ নিশ্চিয়ই তা শেষ দশকে। ফলে পুনরায় তিনি তাঁবু টানাতে নির্দেশ দেন। পুনরায় তাঁবু টানানো হয়। অত:পর তিনি মানুষের নিকট এসে বলেন : হে লোক সকল! আমাকে লাইলাতুল কদর বলা হয়েছিল। আমি তোমাদেরকে তার সংবাদ দিতে বের হয়েছি। ইত্যবশরে দু’জন ব্যক্তি ঝগড়া নিয়ে উপস্থিত হয়। তাদের সাথে ছিল শয়তান। ফলে আমাকে তা ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। তোমরা তা রমজানের শেষ দশকে তালাশ করো। তোমরা তা নবম, সপ্তম ও পঞ্চম রাতে তালাশ করো। (সহীহ বুখারী : হাদীস নং-১৯১২; সহীহ মুসলিম : হাদীস নং-১১৬৭)। সুতরাং লাইলাতুল কদরের প্রতি গভীর আগ্রহ থাকা ও তা অন্বেষণ করা রাসূলুল্লাহ সা:-এর আদর্শ, যা শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে জাগ্রত থাকা ব্যতীত অর্জিত হয় না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুবারক হো মাহে রমজান
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ