পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এ কে এম ফজলুর রহমান মুন্শী
সদকাতুল ফিতরের বিধান
সদকাতুল ফিতর সকল মুসলমানের ওপর ওয়াজিব। এটি জাকাত ফরজ হওয়ার পূর্বেই ওয়াজিব হিসেবে স্থিরীকৃত হয়। অতঃপর জাকাত ফরজ হওয়ার পর এর অপরিহার্যতা এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে এবং পরবর্তীতেও থাকবে।
প্রত্যেক মুসলমানের নিজ ও নিজের অধীনদের পক্ষ হতেÑযেমন স্ত্রী, সন্তান ও যাদের ভরণপোষণ তার ওপর ন্যাস্ত এদের পক্ষ হতে সদকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব। স্ত্রী-সন্তান যদি কর্মজীবী হয়, অথবা সম্পদশালী হয়, তাহলে তাদের প্রত্যেকের নিজের পক্ষ থেকে সদকাতুল ফিতর আদায় করা উত্তম। কেননা তারা সকলেই সদকাতুল ফিতর আদায়ের হুকুমের সাথে জড়িত। তবে হ্যাঁ, তাদের অভিভাবক যদি স্বেচ্ছায় তাদের সদকাতুল ফিতর আদায় করে দেয়, তবে তা জায়েজ আছে, যদিও তারা সম্পদশালী হয়।
সদকাতুল ফিতর শরীরের জাকাত। কেননা আল্লাহ পাক দীর্ঘ একটি বছর সুস্থ রেখেছেন এবং সিয়াম সাধনায় তাওফিক প্রদান করেছেন। সদকাতুল ফিতর বান্দার রোজাকে অশ্লীলতা থেকে পবিত্র করে। হাদীস শরীফে এসেছেÑসদকাতুল ফিতর রোজাদারকে অশ্লীলতা থেকে পবিত্র ও নির্মল করে। সদকাতুল ফিতর দ্বারা ফকির-মিসকিনদের প্রতি অনুগ্রহ ও তাদেরকে ভিক্ষাবৃত্তি থেকে মুক্তি দেয়া হয়। যেন ঈদের দিন তারাও অন্য মুসলিমদের মতো আনন্দ ও বিনোদনে অংশগ্রহণ করতে পারে। সদকাতুল ফিতর দ্বারা রোজাদারকে অনুগ্রহ ও অনুদানের প্রতি উৎসাহী করা হয় এবং তাকে লোভ ও কৃপণতা থেকে রক্ষা করা হয়।
হকদার ফকির-মিসকিনদের সদকাতুল ফিতর দিতে হবে। কারণ রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নিজ রক্তের সম্পর্কিত জনদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। নিজ এলাকার বা দেশের অভাবীদের সদকাতুল ফিতর দেয়া উত্তম। যদি এমন হয় যে, নিজ এলাকায় বা দেশে অভাবী লোক মোটেই নেই, তাহলে অন্য দেশের অভাবীদের সদকাতুল ফিতর দেয়া জায়েজ আছে। একজন মিসকিনকে এক পরিবার বা একাধিক ব্যক্তির সদকাতুল ফিতর দেয়া বৈধ, যেমন বৈধ একজনের সদকাতুল ফিতর কয়েকজনকে ভাগ করে দেয়া। কর্মচারী ও ভাড়াটে মজুরদের পক্ষ থেকে সদকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব নয়। তবে চুক্তির মধ্যে তাদের সাথে অনুরূপ শর্ত থাকলে আদায় করতে হবে।
হযতর ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, গোলাম, স্বাধীন, পুরুষ, নারী, ছোট, বড়, সকল মুসলিমের ওপর রাসূলুল্লাহ (সা.) এক ‘সা’ তামার (খেজুর) অথবা এক ‘সা’ দাম সদকাতুল ফিতর ধার্য করেছেন এবং সালাতের পূর্বে তা আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। (সহীহ-বুখারী : হাদীস নং ১৪৩২; সহীহ মুসলিম : হাদীস নং ৯৮৪) সহীহ বুখারীর অপর এক বর্ণনায় আছে, নাটে বলেছেন : ইবনে ওপর ছোট-বড় সবার পক্ষ হতে তা আদায় করতেন। তিনি আমার সন্তানদের পক্ষ হতেও তা আদায় করতেন। যারা তা গ্রহণ করত ইবনে ওমর তাদের তা প্রদান করতেন। তিনি ঈদুল ফিতরের এক দিন অথবা দু’দিন পূর্বে তা আদায় করতেন। (সহীহ বুখারী : হাদীস নং ১৪৪০)।
আবু সাঈদ-সুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার সদকাতুল ফিতর আদায় করতাম এক সা’ খানা অথবা এক সা’ গম, অথবা এক সা’ খেজুর, অথবা এক সা’ পনির অথবা এক সা’ কিশমিশ দ্বারা। (সহীত বুখারী : হাদীস নং ১৪৩৫; সহীহ মুসলিম : হাদীস নং ৯৮৫)।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে সা’লাবাতা ইবনে ছুগাইর তার পিতা হতে বর্ণনা করেছেন : রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর এক ভাষণে বলেছেন : তোমরা প্রত্যেক স্বাধীন, ক্রীতদাস, ছোট কিংবা বড়র তরফ হতে অর্ধ সা’ গম কিংবা এক সা’ যব কিংবা এক সা’ খেজুর ফিতরা বাবদ আদায় কর। (আবু দাউদ, মুসান্নাকে আবদুর রাজ্জাক, দারা-কুতনী, তাবারানী, মুস্তাদরেকে হাকেম)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।