চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
শেষ
কিন্তু তোমাদেরকে তো আমার নিকট ফিরে আসতেই হবে। হিন্দুদের ধর্মশাস্ত্র বেদে মহাপাপ, উপপাপ, অনুপাপ উল্লেখ করে মানুষদের সংযত আচরণ করে চলার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। পৃথিবীর প্রতিটি ধর্মগ্রন্থে মানুষকে সৎ কাজে আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ করা হয়েছে। একটি প্রশ্নের সৃষ্টি হতেই পারে যে, ধর্মশিক্ষা যদি অপরাধপ্রবণতা দমনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে তবে বিভিন্ন মাদরাসায় শিক্ষক কর্তৃক শিক্ষার্থী নিপীড়নের ঘটনা কেন ঘটছে? এটির উত্তরে একটি ইংরেজি প্রবাদ বলা যায়, ঊীপবঢ়ঃরড়হধষ রং ধহ বীধসঢ়ষব. অর্থ্যাৎ ব্যতিক্রম কোনো ঘটনা উদাহরণ হতে পারেনা। ধর্মশিক্ষার তিনটি দিক রয়েছে। মুখে স্বীকার করা, অন্তরে বিশ্বাস করা ও সে অনুযায়ী কাজ করা। কেউ যদি ধর্মশিক্ষা অর্জন করে শুধুমাত্র কাগজের সার্টিফিকেট অর্জন করার জন্য তবে তার শিক্ষা পূর্ণতা লাভ করেনা। ফলে তার দ্বারা যেকোনো অপরাধকর্ম সংঘটিত হতে পারে। আবার দু-একটি উদাহরণ দিয়ে সামগ্রিক বিষয়টিকে বিবেচনা করা সমুচীন হবে না। শিক্ষা লাভের সাথে সাথে যদি মানুষ নৈতিক শিক্ষায় দীক্ষিত হতে না পারে তবে সে শিক্ষা কখনো মানবসভ্যতার কল্যাণ করতে পারে না। বরং এতে যে যত বেশি মাত্রায় শিক্ষিত হয়, সে তত বড় অপরাধকর্মে জড়িয়ে পড়ে। মানুষের ভেতরে উচ্চাভিলাষ, ক্ষমতার অপব্যবহার, রাজনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণতা, অন্যকে দমিয়ে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের অপচেষ্টা প্রভৃতি অপরাধ মাত্রাকে বৃদ্ধি করে। আমাদের দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি অপরাধপ্রবণতার অন্যতম কারণ হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় অনেক অপরাধীকে যথাযথ শাস্তি প্রদান তো দূরের কথা; অনেক সময় বিচার আওতায় আনা সম্ভব হয়না। আবার মামলার দীর্ঘসূত্রতা এবং স্বাক্ষীর অভাবেও বিচার কার্য যথাযথভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয় না। কোনো ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা পরবর্তীতে বিভিন্নভাবে হেনস্তার শিকারের ভয়ে স্বাক্ষী দিতেও চান না। ফলে অপরাধীরা যেন নির্ভয়েই তাদের অপকর্ম চালিয়ে যেতে থাকে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য আমাদের সবাইকে একসাথে উন্নয়ন মহাযজ্ঞে যোগ দিতে হবে এবং দূর্নীতি ও অপরাধকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। দেশকে দূর্নীতিমুক্ত করতে হলে আগে ব্যক্তি পর্যায়ে নিজেকে দূর্নীতিমুক্ত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। শিশুকাল থেকেই অন্যের খাতা দেখে লেখা অন্যায়, ক্ষুদ্র মিথ্যা বলাও পাপ এই শিক্ষায় প্রতিটি শিশুকে দীক্ষিত করে আমাদের দেশেকে উন্নয়নের মহাসাগরে নিয়ে যেতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।