পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : রাজধানীর কুড়িল থেকে শাহজাদপুর হয়ে রামপুরা পর্যন্ত যানজট এখন নিত্যদিনের ঘটনা। প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু করে রাত ৮টা পর্যন্ত ভয়াবহ এ যানজটের কবল পড়ে মানুষ অতিষ্ঠ হলেও এ নিয়ে ট্রাফিক পুলিশ ও সিটি কর্পোরেশনের কোনো মাথাব্যাথা নেই। বরং দিন যতো যাচ্ছে যানজটের ভয়াবহতা ততোই বাড়ছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে কুড়িল থেকে মালিবাগ পর্যন্ত অন্তত ৩০টি পয়েন্টে যানজট লেগেই থাকে। আর এ যানজটের কারণ রাস্তার উপর ময়লার ডাস্টবিন, সুয়ারেজ লাইন, অপরিকল্পিত ইউটার্ন, রিকশাগুলোর লেন ব্যবহার না করা, বাস স্টপেজের পাশাপাশি ফিলিং স্টেশন, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংসহ ফুটপাত ও রাস্তা দখল। সংশ্লিষ্ট জোনের ট্রাফিক পুরিশের সিনিয়র সহকারি কমিশনার মোঃ আবু ইউসুফ গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, কুড়িল থেকে রামপুরা পর্যন্ত যানজটের প্রধান কারণ রাস্তার উপর বসানো ডাস্টবিনগুলো। এগুলো সরানোর জন্য গত দেড় বছরে সিটি কর্পোরেশনকে অন্তত: এক হাজার বার বলা হয়েছে। তারা কিছুতেই সেদিকে কর্ণপাত করছে না। এ ছাড়া অপরিকল্পিত সূয়ারেজ লাইনের কারণে শীতকালেও এই রাস্তায় পানি জমে থাকে। এতে করে গাড়িগুলো ঠিকমতো চলতে পারে না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কুড়িল থেকে শাহজাদপুরের দিকে আসার সময় যমুনা ফিউচার পার্কের প্রথমে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। যমুনা ফিউচার পার্কের পাশ দিয়ে বসুন্ধরায় প্রবেশের রাস্তাটিতে গাড়ির ভিড়ে সকাল থেকেই যানজট লেগে থাকে। প্রধান সড়কে যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে শত শত গাড়ি আটকা পড়ে। ভুক্তভোগিদের মতে, সকালে এই যানজট এমন ভয়াবহ আকার ধারণ করে যে এক ঘন্টায় এক কদমও গাড়ি নড়ে না। ট্রাফিক পুলিশ ও তখন যানজট নিয়ন্ত্রনে হিমশিম খায়। এর সামনে শাহজাদপুরে সুবাস্তু টাওয়ারের সামনে রিকশা লেনসহ রামপুরাগামী সড়কে দীর্ঘ যানজট নিত্যদিনের সঙ্গী। সুবাস্তুর সামনেই বাস স্টপেজের পাশাপাশি এসটি ফিলিং স্টেশন। আরেকটু সামনেই ইউটার্ন। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, এই তিন কারণেই পুরো শাহজাদপুর এলাকাজুড়েই যানজট লেগে থাকে। দিনের বেশিরভাগ সময় এই এলাকায় থেমে থেমে চলে যানবাহন। আবার শাহজাদপুরে রিকশার লেনে প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন যানবাহন ঢুকে পড়ায় বাড়তি বিড়ম্বনা সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। গতকাল সোমবার দুপুরে এখানে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশকে অনেকটা নির্বিকার মনে হয়েছে।
শাহজাদপুরের পরে উত্তর বাড্ডা কাঁচাবাজারের সামনে সারি সারি রিকশা আর যত্রতত্র বাসসহ টেম্পো, অটোরিকশা দাঁড় করানোর জন্য তীব্র যানজট লেগেই থাকে। রাস্তার দুপাশের মার্কেটগুলোতে আসা যানবাহনগুলোকেও যেখানে সেখানে দাঁড় করানো এই যানজটের অন্যতম কারণ। রাস্তার দুপাশের এ অব্যবস্থাপনা দেখার কেউ নেই। ট্রাফিক পুলিশ আছে মোড়গুলোতে। যানজটের চাপে সেখানেই তারা ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করতে পারে না।
জানা গেছে, কুড়িল বিশ্বরোড থেকে শাহজাদপুর, বাড্ডা, রামপুরা হয়ে মালিবাগ রেলগেট পর্যন্ত অন্তত ৩০টি স্পটে কমবেশি যানজটের সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে রয়েছে আটটি ফিলিং স্টেশন, ছয়টি বিশালাকার ময়লার ভাগাড়, একটি সাতটি ওভার ব্রিজ ও ১৫টি ইউটার্ন। এসব পয়েন্টেই মূলত যানজট লেগেই থাকে সারাদিন।
মধ্য বাড্ডা এলাকার বাসিন্দা মনিরুজ্জামান মজনু জানান, বাড্ডা লিংক রোডে আজহার কমফোর্ড কমপ্লেক্সের সামনে রয়েছে একটি ময়লার ভাগাড়। সেখানে দিনের বেলায় ময়লা অপসারণের জন্য সিটি কর্পোরেশনে ট্রাক আসে। রাস্তায় বন্ধ করে ট্রাকগুলো ময়লা অপসারণ করে। এতে করে যানজট আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে। মজনু বলেন, বেলা ১১টার পর থেকে যানজট মূলত কুড়িল থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত বেশি থাকে। তখন ওই রাস্তার দুদিকেই গাড়ি নড়ে না বললেই চলে। নতুন বাজারের আগে ইউটার্ন আর বাস স্টপেজ থাকায় একবার যানজট সৃষ্টি হলে সহজে মুক্তি মেলে না।
এই রাস্তায় বিভিন্ন কোম্পানীর বাস সার্ভিস রয়েছে। এদের গাড়ি সংখ্যা কতো তাও কেউ জানে না। একটার পর একটা বাস রাস্তায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকে। সেগুলোর মধ্যে কোনটা কোন স্থানে থামে তাও বোঝার উপায় নেই। পরিবহন ব্যবসায়িদের সাথে কতা বলে জানা গেছে, এই রুটে জাবালে নূর, বিহঙ্গ, জাবালে তুর, আকিক, কনক, রাজপথ, ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্টসহ মিরপুরগামী সিটিং সার্ভিস গাড়ি চলে। সবগুলো মিলে সঠিক সংখ্যা জানা সম্ভব হয়নি। তবে পরিবহন মালিক সমিতির এক নেতা বলেন, লাভজনক রুট বলে এই রুটে সরকারি দলের প্রভাবশালীদের গাড়ি বেশি। একই রুটে অতিরিক্ত গাড়িও যানজটের অন্যতম কারণ বলে ওই নেতা দাবি করেন। এর সাথে সায়েদাবাদ, মৌচাক, মালিবাগ রুটের গাড়িও আছে।
মধ্যবাড্ডা এলাকার ব্যবসায়ী সিরাজ মিয়া বলেন, কুড়িল থেকে রামপুরার দিকে যেতে যে ঝামেলা রামপুরা থেকে কুড়িলের দিকে যেতে তারচেয়েও বেশি ঝামেলা। রাস্তার উপর মার্কেট। সে সব মার্কেটের মালামাল বা মালামালবাহী গাড়িগুলোও দাঁড়ানো থাকে রাস্তার উপরই। এর মধ্যে হাজার হাজার রিকশার ভিড়ে যতোদুর চোখ যায় কোথাও ফাঁকা দেখা যায় না। অভিজাত এলাকার পাশের একটা গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা এরকম হওয়া উচিত না। ট্রাফিক পুলিশের সিনিয়র এসি মোঃ আবু ইউসুফ এ প্রসঙ্গে বলেন, আসলেই কুড়িল থেকে রামপুরার এই রাস্তাটিকে গুরুত্বহীন করে রাখা হয়েছে। এই রাস্তাটিকে একটু গুরুত্ব সহকারে দেখলে বনানীর রাস্তায় চাপ কম হতো। এটাকে এ্যাপ্রোচ রোড হিসাবে ব্যবহার করানো যেতো। কিন্তু রাস্তায় যানবাহনের চাপ দেখে কেউই সহজে এই রাস্তা ব্যবহার করতে চায় না। বলতে গেলে সে কারণেই রিকশা আর লোকাল বাসের দখলে চলে গেছে এই রাস্তাটি। ট্রাফিক পুলিশের এই কর্মকর্তা তার দেড় বছরের অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করে বলেন, এখানকার ড্রেনেজ সিস্টেমটা উন্নত করা গেলে যানজটের প্রভাবটা কমানো যেতো। শীতকালেও রাস্তায় পানি জমে থাকে। আর পানি জমলে সেই রাস্তায় যানবাহন চলাচলে ব্যাঘাত ঘটাই স্বাভাবিক।
রামপুরা ব্রিজ, মেরুলবাড্ডা, হাতিরঝিল মোড় ও সিএনজি পাম্পের কারণে মেরুল বাড্ডা এলাকায় যানজট লেগে থাকে। মালিবাগ চৌধুরী পাড়ায় দুদিকে দুটি ডাস্টবিনের কারণে সৃষ্ট যানজট এই রুটের যাত্রীদের প্রতিদিনের সঙ্গী। এ ছাড়া দুটি সিএনজি স্টেশনও এখানকার যানজটের কারণ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।