পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্শী
সিয়াম সাধনা পাপ মোচন করে
সিয়াম সাধনার দ্বারা পাপ মোচন হওয়া একটি স্বতঃসিদ্ধ ব্যাপার। মহান আল্লাহপাক আল-কুরআনে ইরশাদ করেছেন, “নিশ্চয়ই নেক আমলসমূহ গোনাহসমূহকে মিটিয়ে দেয়, এটি উপদেশ গ্রহণকারীদের জন্য একটি উপদেশ।” (সূরা হূদ : আয়াত-১১৪)। এতে কোনই সন্দেহ নেই যে, অধিক পরিমাণ নেক আমল গোনাহ ও পাপের শৃঙ্খল হতে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করে এবং তার নেক আমলের কারণে মহান আল্লাহপাক তাকে তাওবাহ করার তাওফিক এনায়েত করেন।
বান্দাহর পাপ মোচন সম্পর্কে আল-কুরআনে বিশদ আলোচনা করা হয়েছে। মহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন : “তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি তো কেবল পরীক্ষা বিশেষ, আর আল্লাহপাকের নিকট রয়েছে সুমহান প্রতিদান।” (সূরা তালাবুন : আয়াত-১৫)।
তিনি আরও ইরশাদ করেছেন : “আর ভালো এবং মন্দ দ্বারা আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করে থাকি এবং আমার কাছেই তোমাদেরকে ফিরে আসতে হবে।” (সূরা আম্বিয়া : আয়াত-৩৫)।
উপরোক্ত আয়াতদ্বয়ে “ফিতনা” শব্দটি পরীক্ষা অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) ফিতনার বিশ্লেষণ করে বলেছেন : “আল্লাহপাকের ফরমান হলো এই যে, আমি তোমাদেরকে সুখ-দুঃখ, সুস্থতা-অসুস্থতা, প্রাচুর্য-দারিদ্র্য, হালাল-হারাম, পাপ-পুণ্য এবং হেদায়েত ও গোমরাহীর মাধ্যমে পরীক্ষা করব।” (তাফসীরে ইবনে কাসীর : খ--৩, পৃষ্ঠা-২৮৬)।
একবার হযরত ওমর ফারুক (রা:) সাহাবায়ে কেরামকে লক্ষ্য করে বললেন : ফিতনা সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা:) এর হাদীস কার মনে আছে? হযরত হুযাইফা (রা:) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা:)কে বলতে শুনেছি- ব্যক্তির ফিতনা তার পরিবার-পরিজনে, মাল-সম্পদে ও তার প্রতিবেশীর মধ্যে যার কাফফারা হয় সালাত, সিয়াম ও সদকাহ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১৭৯৬; সহীহ মুসলিম : হাদীস নং-১৪৪)।
হযরত আবু হুরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা:) আল্লাহর বাণী উচ্চারণ করে বলেছেন : “আল্লাহপাক ফরমান, প্রত্যেক আমলের কাফফারা রয়েছে। আর সাওম হচ্ছে আমার জন্য আমিই তার প্রতিদান দেব।” (সহীহ বুখারী : হাদীস নং-৭১০০; মুসনাদে ইবনে হাম্বল : খন্ড-২, পৃষ্ঠা ৫০৪)। মুসনাদে আহমাদে আরও আছে : আল্লাহপাক ফরমান “প্রত্যেক আমল কাফফারা, আর সাওম আমার জন্য। আমি তার প্রতিদান দেব।” (মোসনাদে আহমাদ : খ--২, পৃষ্ঠা-৪৫৭; তায়ালিসি : হাদীস নং-২৪৮৫)। হযরত আবু হুরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন : “পাঁচ ওয়াক্ত সালাত এক জুমা থেকে অপর জুমা, এক রমজান হতে অপর রমজান, মধ্যবর্তী সময়ের জন্য কাফফারা স্বরূপ, যদি করীবা গোনাহ থেকে বিরত থাকা হয়। (সহীহ মুসলিম : হাদীস নং-২৩৩)। হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা:) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন: “যে রমজানের সাওম পালন করল, তার সীমারেখা ঠিক রাখল, যা থেকে বিরত থাকা দরকার তা থেকে সে বিরত থাকল, তার পূর্বের পাপ মোচন করা হবে।” (মোসনাদে আহমাদ : খ--৩, পৃষ্ঠা-৫৫, মোসনাদে-আবু ইয়ালা : হাদীস নং ১০৫৮; বায়হাকী : খ--৪, পৃষ্ঠা ৩০৪; সহীহ ইবনে হিব্বান : হাদীস নং ৩৪৩৩)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।