পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এ, কে, এম, ফজলুর রহমান মুনশী
রোজাদারের গোসল ও শীতলতা অর্জন
সিয়াম সাধনায় ক্ষুধা-পিপাসার জ্বালা সম্বরণ করে চলতে হয়। প্রচ- গরম বা বুক ফাটা তৃষ্ণা হালকা করার জন্য পুরো শরীর অথবা কোন অংশে পানি দেয়া রোজাদারের জন্য জায়েজ আছে। এটা ওয়াজিব গোসল অথবা মুস্তাহাব গোসল অথবা বিনা প্রয়োজনেও হতে পারে। (আউসুল মা’বুদ, পৃঃ ২ কঃ ১ খ- ৬, পৃষ্ঠা ৩৫২)।
সিয়াম পালনকারীর বা ইবাদতকারীর কষ্ট হলে বৈধ উপায়ে তা’লাঘর করা মোটেই দোষের নয়। এটাকে অবৈধ গণ্য করা যাবে না এবং এর থেকে বিরত থাকা ঠিক হবে না। কেননা, মানুষ দুর্বল ও অপারগ হলে তার উচিত কষ্ট দূর করার জন্য বৈধ উপায় গ্রহণ করা এবং স্বাচ্ছন্দ্য লাভের চেষ্টা করা। একান্ত প্রয়োজনে রোজাদারের জন্য পানিতে ডুবে থাকা বৈধ, তবে সতর্ক থাকতে হবে পেটে যেন পানি প্রবেশ না করে। (মিরশাতুল মাফাতিহ, খ- ৪, পৃষ্ঠা ৪৪১)। সাওম অবস্থায় গোসলখানায় গরম পানি ব্যবহার করা বৈধ। অনুরূপভাবে সুগন্ধি ও তৈল ব্যবহার করা, মাথায়, দাড়িতে চিরুনী ব্যবহার করা বৈধ। মনে রাখতে হবে যে, ঘ্রাণজাতীয় বস্তুর কারণে রোজা নষ্ট হয় না। এগুলো রোজাদারের জন্য মাকরূহ নয়। কিন্তু ধোঁয়াযুক্ত সুগন্ধি ব্যবহার করা মাকরূহ।
ঠা-া ও পবিত্রতা অর্জনের জন্য রোজাদার হাউজ, ট্যাংকি, পুকুর ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারবে। একারণে সাওম নষ্ট হবে না। প্রয়োজনে রোজাদার বাবুর্চিখানায় রান্নার স্বাদ পরীক্ষা করতে পারবে। তবে, সতর্ক থাকতে হবে যে তা যেন পেটে প্রবেশ না করে। ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহ.) বলেন, আমার কাছে পছন্দনীয় হলো সাওম অবস্থায় খাবারের স্বাদ পরীক্ষা না করা। তবে কেউ তা করলে সমস্যা নেই।
হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) নাপাক অবস্থায় প্রত্যুষ করতেন। তার পর গোসল করে মসজিদে গমন করতেন। তখনো তার মাথা থেকে পানি টপ টপ করে পড়তে থাকতো। তারপর সেদিনের সাওম তিনি পালন করতেন। (মুসনাদে আহমাদ, খ--৬, পৃষ্ঠা ৯৯; নাসাঈ ফিল কুবরা, হাদীস নং ২৯৮৬; আবু ইয়ালা, হাদীস নং ৪৭০৮, বাযযায়, হাদীস নং ১৫৫২, তায়ালেমী, হাদীস নং ১৫০৩;)।
আবু বকর ইবনে আবদুর রহমান নবী করীম (সা.) এর সম্পর্কে জনৈক সাহাবী থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)কে ‘আরজ’ নামক স্থানে দেখেছি; তিনি রোজা অবস্থায় মাথায় পানি দিচ্ছেন, পিপাসার কারণে অথবা গরমের কারণে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ২৩৬৫; মুসনাদে আহমাদ, খ- ৩, পৃষ্ঠা ৪৭৫; মুয়াত্তা ইমাম মালেক, খ--১, পৃষ্ঠা ২৯৪); মুস্তাদরকে হাকেম, খ--১, পৃষ্ঠা ৫৯৮)।
ইমাম বুখারী (রহ.) বলেন, হযরত ইবনে ওমর (রা.) সাওম অবস্থায় কাপড় ভিজিয়ে গায়ে রেখেছেন। ইমাম শাবি রোজা অবস্থা গোসলখানায় প্রবেশ করেছেন। হাসান (রহ.) বলেন, রোজাদারের কুলি ও শীতলতা অর্জন দোষের নয়। ইবনে মাসউদ (রহ.) বলেন, যখন তোমাদের কারো সাওমের দিন হয়, সে যেন সকালে তেল দেয় ও চিরুনী করে। হযরত আনাস (রা.) বলেছেন, আমার ছোট একটি হাউজ আছে তাতে আমি সাওম অবস্থায় ডুব দেই। (সহীহ বুখারী, খ--২, পৃষ্ঠা ৬৮১)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।