পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এ, কে, এম, ফজলুর রহমান মুনসী
হযরত ঈসা (আঃ)-এর আমলে রোজা
হযরত দাউদ (আঃ)-এর পর আসমানী কিতাবধারী (ইনজিল) বিখ্যাত নবী ও রাসূল হচ্ছেন, হযরত ঈসা রুহুল্লাহ (আঃ)। তাঁর আমলে এবং তাঁর জন্ম গ্রহণের পূর্বেও সওম ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। আল কুরআনে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে যে, “হযরত ঈসা (আঃ) এর জন্ম হয় খেজুরবিথী পূর্ণ একটি নির্জন স্থানে। তাঁর জন্মের পর তার মাতা হযরত মারইয়াম (আঃ) হযরত ঈসা (আঃ)কে কোলে নিয়ে বাইতুল মুকাদ্দাসে চলে আসেন। এতে জনগণের বিস্ময়ের অবধি রইল না। তারা বলল, হে মারইয়াম, তুমি তো এক অদ্ভুত কা- করে বসেছ। হে হারুন ভগ্নি! তোমার পিতা অসৎ ব্যক্তি ছিল না এবং তোমার মাতাও ব্যভিচারিণী ছিল না। তাদের কথা শুনে মারইয়াম সন্তানের প্রতি ইঙ্গিত করল। জনগণ বলল, যে কোলের শিশু তার সাথে আমরা কেমন করে কথা বলব ? শিশু ঈসা (আঃ) বললেন, আমি তো আল্লাহর বান্দা। তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন, আমাকে নবী করেছেন। যেখানেই আমি থাকি না কেন তিনি আমাকে বরকতময় করেছেন। তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যতদিন জীবিত থাকি ততদিন সালাত ও যাকাত আদায় করতে। আর আমাকে আমার মায়ের অনুগত করেছেন এবং তিনি আমাকে উদ্ধত ও হতভাগ্য করেননি। আমার প্রতি শান্তি, যেদিন আমি জন্মলাভ করেছি, সেদিন আমার মৃত্যু হবে এবং যেদিন আমি জীবিত অবস্থায় পুনরুত্থিত হবো।”
হযরত মারইয়াম (আঃ) জনতার উদ্দেশে বললেন, ‘‘আমি দয়াময়ের উদ্দেশে মৌনতা অবলম্বনের মানত করেছি (রোজা রেখেছি)। সুতরাং আজ আমি কিছুতেই কোন মানুষের সাথে বাক্যালাপ করব না।’’ ফলে, তিনি রোজা অবস্থায়ই দিন কাটালেন। (সূরা মারইয়াম: ১৯ ঃ ২৬)।
এই আয়াতে কারীমার দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, হযরত ঈসা (আঃ)-এর জন্মের পূর্বে মানুষের মাঝে রোজার প্রচলন ছিল। হযরত মারইয়াম (আঃ)ও রোজা রেখেছিলেন, এমন কি হযরত ঈসা (আঃ)ও রোজা রাখতেন। আল্লামা আবু দাউদ (রহঃ) বলেন, বর্ণিত আছে যে, রমজানের সিয়াম ইয়াহুদী ও নাসারা উভয়ের উপরে ফরজ ছিল। কিন্তু ইহুদীরা সব রোজা বাদ দিয়ে গোটা বছরের যে কোন একটি দিনে রোজা রাখতে থাকে। তারা মনে করে যে, ওই দিন ফেরাউন ডুবে মরেছিল। তবে, এ বিষয়ে বলা যায় যে, ইহুদীরা একান্তই মিথ্যাবাদী। কারণ, ফেরাউনের ডুবে মরার দিনটি ছিল আশুরার দিন, বছরের যে কোন একটি দিন নয়। অপরদিকে খ্রিস্টানরা রমজানের রোজা পালন করতে থাকে। তারপর একবার তাদের রমজানে প্রচ- ক্ষুধার তাড়না বৃদ্ধি পায়। ফলে তাদের বিশিষ্ট আলীম ও পাদ্রীরা গ্রীষ্ম ও শীতের মাঝখানে একটি ঋতুতে ওই সিয়ামকে সীমাবদ্ধ করতে একমত হয়। অতঃপর তারা ওকে বসন্তকালে রেখে দেয়া এবং সেই সাথে আরো ১০টি সিয়াম বাড়িয়ে দেয়, তাদের যত্তসব মনগড়া কার্যকলাপের কাফফারা হিসেবে। তারপর তাদের এক বাদশাহ অসুখে পড়ে অথবা তাদের মধ্যে দু’টি মৃত্যু সংঘটিত হয়, তখন তারা আরো ১০টি রোজা বৃদ্ধি করে দেয়। ফলে সিয়ামের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫০টিতে। (তাফসীরে আবুস সউদ, ১ম খ-, ৪৬৪ পৃষ্ঠা)।
উপরোক্ত বর্ণনার আলোকে জানা যায় যে, খ্রিস্টানদের রোজার কোন দিক-দিশা মোটেই নেই। তাদের আচরিত সিয়াম সাধনায় ১ দিন হতে শুরু করে ৫০ দিন পর্যন্ত ব্যয় করা যায়। এর নির্ধারিত কোন সীমা রেখা নেই। তাছাড়া তাদের সিয়াম পালনের সময়েরও কোন ধরাবাধা নিয়ম নেই। বরং ইচ্ছামত তা অনায়াসে হেরফের করা যায় বিধায় তা “যার মনে যেমন, সে করে তেমন” এর রূপ পরিগ্রহ করে আছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।