শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
স্মৃতির নেপথ্যে একটি ডুব
অপেক্ষমান নদীটি; বুকের ভেতরে
কামনার থৈ থৈ জল। প্রগাঢ় গভীরে
যখনই ছুঁড়েছি ঢিল, পুলকিত ঢেউ
তার শরীর দুলিয়ে চোখ মেরেমেরে
নিকটে এগোত খুব! হাঁটুপথে নেমে
দু› হাতে ছুঁতাম বুক, আঙুলের নিবে
এঁকেছি পানের পাতা; প্রিয় সুষমার
শরীরের ভাঁজেভাঁজে। গোপন শক্তিরা
কানে কানে যেত বলে খেলবে কি আগুনে?
অন্তত একবার ডুব? আনাড়ি সময়
সংশয়ে খুলেনি বলে ঠোঁটের কপাট
কিছু স্বর্গীয় শব্দেরা বাতাসের বুকে
মেলতে পারেনি পাখা! অভিমানে তাই
অনূঢ়া নদীটি আজ হয়েছে অদেখা।
আলী এরশাদ
চিরসত্যের ডাক
হঠাৎ গভীর রাতে ভেঙে গেলে আরামের ঘুম
বড় বেশি একা লাগে চারিপাশে কেমন নিরব;
যদিও পাশেই শুয়ে আদরের বউ আর বাচ্চা
নিজের বিছানা খাট কিছুটা অচেনা মনে হয়।
বিছানা বালিশ রেখে বের হয়ে বসি বারান্দাতে
ভোরের নদীর মতো পৃথিবীটা লাগে বড় শান্ত;
বাড়ির সম্মুখে থাকা পারিবারিক কবরস্থানে
অনেক স্বজন শুয়ে, ভয়ে ভয়ে সেদিক তাকাই।
আমার হৃদয় থেকে সব ভয় দূর করো প্রভু
সত্যের সম্মুখে যেন হাসিমুখে সমাসীন হই
যেকোন সময় যদি যমদূত এসে বলে চল
অবিচল থাকি যেন চিরসত্যের কঠিন ডাকে।
জীবের জীবনে জানি জগতের নিয়ম জটিল
খেলা শেষে সকলেরই যেতে হবে রাজার নিকট;
বাঁধন ছেড়ার দুখে কেঁদে যেন বুক না ভাসাই
সে সাহস দাও প্রভু সে সাহস দাও সর্বদায়।
নূরনবী সোহাগ
চাষি
আকাশ সম্পর্কিত আমার ভাবনাটা বিদঘুটে
আমার ধারণা, আকাশ চাষিদের নগরী
তারাগুলো একেক ফালি চাষের জমি
চাঁদ ও সূর্য কোষাগার।
সেখানে রোদ চাষি, মেঘ চাষি
বৃষ্টি চাষি, জোছনা চাষির বাস
ঋতু গুনে গুনে সেখানে চাষ হয়
রকম ভেদে ফসলের
বোধকরি, কতকাল ধরে
পৃথিবীর সংকট দূর করে আসছে সেই সকল চাষিরাই।
লুৎফুন্নাহার
ইচ্ছে ফুল
মধ্যরাতের তোপধ্বনি আকাশে বাতাসে তোলে কম্পন
ভোরের আলো ফুটবার আগেই উৎসব আয়োজন
কেউ কেউ থেমে যায় অথবা ঘরের কোনে লোকায় মুখ
আবার বুঝি গর্জে ওঠে একাত্তোর
ওদের মনেতো শকুনের বসবাস
ওরা তৈরি করে বিকৃত ইতিহাস
অনেক পিপাসা বুকে নিয়ে
দূরে চোখ রাখে মা যেখানে পতাকা উড়ে
যেখানে ভালোবাসায় মানুষের ভীড়
কত যে বেদনা মনের পাহাড়ে
আজকাল পাহাড়টাকে ছুঁয়ে দিতে খুব ইচ্ছে করে
খোকাটাযে কোথায় আছে কেইবা
জানে বিষণ্ন মনে মা
সবুজ পতাকার বুকে লাল সূর্য দেখে
আর ভাবে এইতো স্বাধীনতা আমার খোকার
ফোটানো ভালোবাসার ইচ্ছেফুল।
আফরীন মুক্তি
প্রতীক্ষা
আজকাল বড্ড বেশি মনে পড়ছে তোমাকে
আর ভাবতে গিয়েই আনমনা হয়ে উঠি বারবার,
রাত জাগা পাখির ডানা ঝাপটানোর শব্দ
পড়ন্ত বিকেলে ঘরে ফেরা পাখির মতো বেসামাল হয়ে উঠি।
নির্ঘুম আবেশী রাত্রী
সবই আগের মতন শুধু দেখিনা তোমাকে,
এই জীবনে হবে কি দেখা তোমার সাথে
কোন এক বিরহী ফাগুন বাতাসে?
রঙ ছড়ানো শাড়ির আঁচল আরও রঙিন,
আবির রাঙা মুক্ত আকাশ শুধু তোমাকে দেখিনা।
এক মুঠো অভিমান ভেসে যায় মেঘের বাড়ি
সকাল, দুপুর, সন্ধ্যা, নিশি
মেঘমেদুর বৃষ্টি রঙে মিশে যায়,
আমি প্রতীক্ষায় শতযুগ বসে থাকি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।