শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
মজুরের মজুরি
জাফর পাঠান
সৃষ্টির প্রারম্ভে যুগে যুগে- তোমরা ছিলে যেমন
সভ্য-শিক্ষিত দাবীর যুগে এখনো আছ তেমন।
এখনও শোষণ-পেষণ-চলছে সমানতালে
সেই কাল আর এই কাল ভালো নেই কোনকালে।
অমানুষিক শ্রমে তোমরা গায়ের ঘাম ঝরাও
নিত্যনতুন এনে সমাজ থেকে পুরনো সরাও।
হাট-ঘাট-মাঠ, আকাশচুম্বি অট্টালিকাও দাও
হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমেও তার কি প্রাপ্যটুকু পাও!
আজও অবহেলিতÑ শোষিত-পীড়িত-নির্যাতিত
ভাগ্য চাকা কেন রয় অচল-এখানো অবিদিত।
কি নির্মম পরিহাস, যারা ঘুরায় ধরণীর চাকা
অভাবের অমানিশায় তারাই পড়ে থাকে ঢাকা।
কিসের আবার মে দিবস-সেমিনার, কিসের কি
যত যা হয়েছে আজ অবধি-সবই লাগে মেকি।
জীবিকার অজুহাত
ইসমাইল রফিক
উদয়কালের আকাশে রঙিন ভোর
উঠোনে আমার আলোর বন্যা ওঠে।
জীবিকার টানে দু’হাতে সরাই দোর
বলাকার দল সাগরের টানে ছোটে।
ভাঙি জীবনের কুটিল প্রভেদ রোজ
দু’চোখে আমার কৌলিন্যের আভা।
বুকে বয়ে চলি নীল দরিয়ার মৌজ
ডিঙিয়ে চলছি সাত নরকের লাভা।
কালের দোলকে ওঠে কত খুনসুটি
এগিয়ে চলেছি কাল ও কালান্তরে।
ব্রাত্য আমার দু’মুঠো ভাত ও রুটি
ঈভ-আদমের কথা খুব মনে পড়ে।
সামনে দাঁড়ালে আবিরবেলার খত্
নড়বে তখন পারলৌকিক তরী?
কিভাবে পেরুব জাগে না তো হিম্মৎ
পকেটে নেই যে নদপারানীল কড়ি।
ভাগ্যের লেখা আসে সেই ঘুরে ঘুরে
উদয়-অস্তে খালি থাকে দু’টি হাত।
কত পেরেশানী বয়ে চলি কত দূরে
মাঝখানি টানি জীবিকার অজুহাত।
পরাজিত সন্ধ্যা
জাহিদ হোসেন
যে ছায়া তোমাকে ঘিরে রেখেছে বহুদিন
যে মেঘ সকালের অস্তিত্ব হারিয়ে-
ধরে রেখেছে রোদের ব্যক্তিত্ব ;
যে কথাগুলো তুমি বলতে পারোনি কোনদিন
সেই রোদ-ছায়াগুলো চুপিচুপি দেখা করে
ঠিক আগের মতো...
তবুও বলা হয় না কত কথা
দেখা হয় না রোদ আর ছায়ার
কতদিন...
সময়গুলো চলে যায় কোন এক সংগীত সন্ধ্যায়।
আবার যদি কখনো দেখা হয় রোদ আর ছায়ায়
সেদিন সারা আকাশ তোমার নামে লিখে দেবো।
নির্জনতার সাতকাহন
আনোয়ারুল ইসলাম
বহুবার বলেছো তুমিÑ দূর থেকে দূরে নিয়ে চলো
নির্জনতায় ঢেকে দিও নশ্বর দেহ আর মন।
কিন্তু কোথায় সে নির্জনতাÑ
যেখানে দাঁড়িয়ে শুধু দু’দ- শান্তির কথা হয়
অথবা দু’হাত বাড়িয়ে দিয়ে মানবতার কল্যাণে
অঙ্গীকার করা যেতে পারে,
অরণ্যানীর সুনসান নীরবতায়
নির্বাক পাহাড়ের সুদৃশ্য পাদদেশ জুড়ে
আটলান্টিকের সুগভীর তলদেশে
কিংবা গর্বিত হিমালয়ের সুউচ্চ শিখরেও নেই
অবগুণ্ঠিত এতোটুকু নিরাপদ নির্জন ঠাঁই।
অতএব কোথায় খুঁজবে তুমি
অনাঘ্রাত হৃদয়ের পুষ্পিত সুরভি সতেজ!
না, কোথাও সেই স্পর্শহীন এক টুকরো ভূমি-চিহ্ন নেই।
তারচেয়ে হাতে রাখো হাত
রাতের সীমানা মুছে খুঁজে ফিরি আলোর প্লাবন,
পাখিদের আশাবরী সুরের মূর্ছনায়
নিজেকে ভিজিয়ে নিয়ে গড়ে তুলি যাপিত জীবন।
এখানে হৃদয় আছে
আছে অমলিন ভালোবাসা সোনালি স্বপন,
আছে প্রাপ্তির অনুপম ¯ন্গিগ্ধ বিলাস।
যদি রাজি থাকো-
তাহলে তোমাকে সেই
আকাক্সক্ষার নির্যাসমাখা এমনি এক নির্জনতায়
নিতে পারি সহেলী আমার!
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।