শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
পৃথ্বীশ চক্রবর্ত্তী
নতুনের বার্তা শুনি
নতুনের বার্তা শুনি আমি -এই বুকের ভেতর
সেখানে আকাশ আছে, আলো-আঁধারের তাতে খেলা
আছে মেঘ, আছে বৃষ্টি, আছে মেলা, বেলা ও অবেলা
সেখানে নির্ধণ-ধনী কিংবা নেই ব্রাহ্মণ-মেথর।
সেখানে ঐ দিন ভোরে হয় পান্তা-ইলিশ খাওয়া
পিঠা খাওয়ার আড্ডা হয়, মিষ্টি হয় বিতরণ
শুধু হয়না রমণা বটমূলে বোমা বিষ্ফোরণ
দেখিনিতো সবুজের বুক চিরে রক্তের যাওয়া।
প্রতি পয়লা বোশেখে সেখানেও নববর্ষ আসে
কবিতাও পাঠ হয়, জমে নাচ-গানের আসর
নাটক মঞ্চস্থ হয়, বেঁজে ওঠে ঝাঝর-কাসর
সেখানের বাংলাদেশ লাল-সাদা-নীল রঙ হাসে।
সেখানেও এখানের মতো হয় প্রেম লেনদেন
যেখানে জীবনানন্দ আর থাকে বনলতা সেন।
**
শাহীন ভূঞা
শহীদ স্মরণে
এ-মাটিতে শুয়ে হাসে শহীদেরা নিভৃত গোপনে,
যেমন পবিত্র আত্না আলোর মিছিলে এসে হাসে,
যেমন আঁধার থেকে ভাষ্কর উন্মেষ হয়ে আসে,
তেমনি এ-শহীদেরা ফিরে আসে আত্নার বন্ধনে।
শহীদেরা ফিরে আসে এ-জীবনে বিপুল স্পন্দনে,
ফিরে আসে বারেবার প্রাণবন্ত অগ্নির আভাষে;
মুক্তির আনন্দ নিয়ে এ-মাটির বুকে প্রাণোচ্ছাসে,
দুর্গমের অভিযাত্রী লক্ষ কোটি সত্তার ক্রন্দনে।
এ-আত্নার মৃত্যু নেই;- নিলো যারা শহীদী শপথ
মৃত্যু-বিভীষিকা পথে জীবনের আনন্দ বিছিয়ে,
সেখানে উজ্জ্বল দীপ ক্ষণে ক্ষণে হয় ছায়া-ম্লান;
অন্ধকারও খুলে দেয় মুক্ত জীবনের দীপ্ত পথ।
নিঃশেষে জীবন দিলো যারা মুক্তির ঢেউ ছড়িয়ে,
জীবনের তীরে আজ সে ঢেউ উচ্ছল বহমান।
**
মোহাম্মদ অংকন
নববর্ষের মত সেও আমাকে ডাকছে
এবার বসন্তটা সংক্ষিপ্ত লাগলো কেমন যেন; হয়তো নববর্ষকে সেও ভালোবাসে বলে দ্রæত তার কাছে চলে যাচ্ছে। তবুও আমি মেনে নিতে পারি না বসন্ত যতই নিজেকে বিসর্জন দিক। নববর্ষ এলে জেগে ওঠে আমার ফেলে আসা কিছু মূহুর্ত্ব যা হাজারো বসন্তের চেয়েও মূল্যবান। প্রতিবার যখন বসন্ত শেষে নববর্ষ আসে; সে আমাকে ডাকে। নববর্ষকে পাই; পাই না আমি তাকে। তাই আমি চাই না বসন্ত শেষ হয়ে নববর্ষ আসুক! দীর্ঘায়িত হোক একটি ঋতু যত দিন না আমি তার কাছে চলে যাই। কথা দিচ্ছি, হয়তো আমিও খুব একটা কাল বিলম্ব করব না; আমাকেও ক্যান্সার ধরেছে। বুঝতে পারছি- নববর্ষ ধেঁয়ে আসছে আর বসন্তকে বিলীন করতে টানছে। আর নববর্ষের মত সেও আমাকে ডাকছে।
**
হাসান নাজমুল
আকাক্সক্ষার নদীগুলো
আমি তো শ্রমের জগতের খেটে খাওয়া মানুষ
জীবনের প্রতিকূল স্রোতে ভেসে যেতে যেতে
জীবন-কাজের মাঝে ডুবে থাকি;
দুর্বল দমও সবল হয়ে ফিরে আসে-
জীবন-শ্বাসের ঘরে,
প্রশান্তির নামে বিশ্রামও ভুলে যাই!
আকাক্সক্ষার নদীগুলো তীব্র ঢেউ তুলে-
ছুটে চলে মোহনার পথে;
মহা মিলনের পথে চলতেই মৃত্যুর আগেই
এতো দম নিতে হয়
কখনো জখম হতে হয় আপাদমস্তক,
এতো শ্রম দিতে হয় মিলনের নিমিত্তেই,
এ জীবনটাই শ্রমের; তাইতো ঘুমের দরিয়া ভেঙে-
আমি জেগে থাকি- শ্রমের আশ্রয়ে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।