নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : র্যাংকিংয়ের সেরা ৮ দল। একটি শিরোপা। লড়াইটা হবে সেয়ানে সেয়ানে। তবে অন্য ৭ দল প্রতিবারই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশগ্রহণ করলেও দীর্ঘ এক যুগ পর খেলার সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ। অন্যান্য দলের চেয়ে তাই বাংলাদেশ দলের এটি ‘অগ্নীপরীক্ষা’ই বলা চলে। আর থাকবে না-ই-বা কেন? এই দলে মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিক, রিয়াদ ও রুবেলদের সম্মিলিত যেমন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার রয়েছে তেমনি রয়েছে সাব্বির, সৌম্য, মুস্তাফিজের মতো তরুণ ক্রিকেটারও। সিনিয়র, জুনিয়র মিলে দারুণ কম্বিনিশন এই দলে। আজ উদ্বোধোনী ম্যাচে তাদেরই প্রতিপক্ষ স্বাগতিক ইংল্যান্ড।
এই বিরুদ্ধ কন্ডিশনে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া, দুর্দান্ত ফর্মে থাকা স্বাগতিক ইংল্যান্ড ও র্যাঙ্কিংয়ে ওপরে থাকা নিউজিল্যান্ডের গ্রæপে বাংলাদেশের কাজটা শুধু কঠিনই নয়, বাস্তবতার বিবেচনায় ভীষণ রকম চ্যালেঞ্জিং। ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা যেন বোঝাতে চাইলেন সেটিই।
তার বোলিং, তার নেতৃত্বগুণ, হাজারও প্রতিকূলতার সঙ্গে নিত্য লড়াইয়ের প্রশংসা তো কতই হয়। প্রায় এক যুগের বেশি সময় পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলছে বাংলাদেশ। শুরুর সময়ের মতো কোনো কোটায় নয়, বাংলাদেশ খেলছে র্যাঙ্কিংয়ের উন্নতি করে নিজেদের যোগ্যতা দিয়েই। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ফেরার প্রশ্নে তাই মাশরাফি গর্ব ভরে বলেছেন, এই টুর্নামেন্টে অংশ নিতে কতটা যোগ্য দল বাংলাদেশ। তুলে ধরেছেন নিজেদের উন্নতির সোপান। সাবেক তিন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাকে টপকে র্যাঙ্কিংয়ের ছয়ে ওঠার কৃতিত্ব নিয়ে কথা বলেছেন। আনুষ্ঠানিক আলোচনার বাইরে এমনি আলাপচারিতায়ও দারুণভাবে তুলে ধরেছেন বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের অবস্থান ও এগিয়ে চলা।
লোকের প্রত্যাশার ভার তার চেয়ে বেশি আর কে অনুভব করেন! চোখ নাচিয়ে ট্রফির দিকে ইঙ্গিত করে অধিনায়ক বললেন লোকের প্রত্যাশার কথা। আর আশার বেলুন ফুলিয়ে বসে আছেন যারা, তাদেরকেও অনুরোধ করলেন বাস্তবতা অনুধাবন করতে, ‘প্রত্যাশা তো অনেক। লোকে ভাবছে এবার আমরা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে দেশে ফিরব! প্রত্যাশার শেষ নেই। তবে লোকের বুঝতে হবে বাস্তবতা। আমাদের বুঝতে হবে আমরা কোথায় আছি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমরা উন্নতি করছি কি না। র্যাঙ্কিংয়ে যেমন একটু একটু করে আমরা এগিয়েছি। দশ থকে নয়ে, আট-সাত হয়ে এখন ছয়ে। মানে গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। এটাই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’
পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচটিতে হারলেও ইতিবাচক ছিল অনেক কিছুই। ম্যাচ জুড়ে ভালো খেলেও বাংলাদেশ হেরে গিয়েছিল শেষ ১০ ওভারে। কিন্তু ভারত ম্যাচ থেকে তো নেওয়ার আছে সামান্যই! সেই ম্যাচও আবার মূল টুর্নামেন্ট শুরুর মাত্র একদিন আগে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামার সময়ও এই বিপর্যয়ের অভিজ্ঞতা টাটকা থাকার কথা। টুর্নামেন্টের দুয়ারে দাঁড়িয়ে এমন পারফরম্যান্স, দুর্ভাবনা যে কিছুটা আছে, মেনে নিচ্ছেন হাথুরুসিংহে, ‘অবশ্যই এটা একটু দুশ্চিন্তার। আত্মবিশ্বাসে একটু হলেও চোট লাগছে। যদিও এটি ¯্রফে প্রস্তুতি ম্যাচ। তার পরও এই ধরনের পারফরম্যান্সে আত্মবিশ্বাসে একটু ধাক্কা লাগেই।’
তবে এই ধাক্কা মানেই দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া নয়। গুঁড়িয়ে যাওয়াও নয়। ক্রিকেটীয় বাস্তবতা আর ক্রিকেটীয় দর্শন, দুটি মিলিয়েই এই বিপর্যয়কে সহজভাবে নেওয়ার চেষ্টা করছেন কোচ, ‘নাহ, হতাশ নই। এরকম হতেই পারে। আমরা সবাই মানুষ। ভুল হতেই পারে। ভারতীয় বোলাররা অনেক ভালো বোলিং করেছে। ক্রিকেটে এরকম হয়েই থাকে। মেঘলা আকাশ, ঠাÐা বাতাস- শুরুতে দ্রæত ২-৩ উইকেট হারালে ধস নামা অস্বাভাবিক নয়। ওরা দুর্দান্ত বোলিং করেছে। আমরা ভালো করতে পারিনি অবশ্যই। তবে শেষ কয়েকটি ম্যাচে আমাদের ব্যাটসম্যানরা ভালো করেছে। আজকে ¯্রফে একটি বাজে দিন ছিল।’
¯্রফে একটা বাজে দিন বলে উপেক্ষা করছেন দিনটিকে, তবে ভুলে যাচ্ছেন না কোচ। এরকম ব্যাটিংয়ের পুনরাবৃত্তি হলে যে সেটি মেনে নেওয়ার মত নয়, সেই বার্তাও দিয়ে রেখেছেন দলকে, ‘আমাদের বুঝতে হবে ভুল কি কি হয়েছে। মাঠে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কন্ডিশন বিবেচনায়, প্রতিপক্ষের বোলিং বিবেচনায় সঠিক শট নির্বাচন করতে হবে। কন্ডিশনটাকে কাজে লাগাতে হবে। প্রস্তুতি ম্যাচে যা হয়েছে, মূল ম্যাচে যেন আরও বেশি সচেতন থাকি আমরা।’
ঘরের মাটিতে ইংল্যান্ডকে হারানো বাংলাদেশের জন্য কঠিন হলেও ইতিহাস বলছে অন্য কথা। ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপে অচেনা কন্ডিশনে এই ইংল্যান্ডকেই হারিয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় করে দিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে সেই সময়ের ইংল্যান্ড দল এবং বর্তমান ইংল্যান্ড দলের মধ্যে রয়েছে অনেক ফারাক। জেসন রয়, অ্যালেক্স হেলস, ইয়ন মরগ্যান, জস বাটলাররা হয়েছেন আগের চেয়ে আরো অভিজ্ঞ। অন্যদিকে ইংল্যান্ডকে একাই ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা রাখে বর্তমান সময়ের সেরা অল-রাউন্ডার বেন স্টোকস। তাদের হারিয়ে মাশরাফির বাংলাদেশ পারবে কী নতুন আরেকটি ইতিহাস লিখতে?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।