নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : বৃষ্টির চোখ রাঙানি আর মেঘের গর্জনকে উপেক্ষা করে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে গতকাল রানের ফোয়ারা ছোটালেন ব্যাটসম্যানরা। হলো তিনটি সেঞ্চুরিও। একজন বাদে জায়ের রঙে রেঙেছে বাকি দু’জনের তিন অঙ্কের স্কোরে। সেটিও হয়ত হতো না, শুধু মাত্র একটি ম্যাচেই দুটি শতকের কারণে উল্টো স্বাদ গ্রহণ করতে হয়েছে দুই সেঞ্চুরিয়ানকে। লিটন দাসের সেঞ্চুরি গড়ে দিল জয়ের ভিত। নাঈম ইসলামের সেঞ্চুরিতে ¯্রফে কমল হারের ব্যবধান। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আবাহনী লমিেিটডের কাছে ৪৯ রানে হেরে গেছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ।
এক ম্যাচের ব্যবধানে আরও একটি ঝড়ো সেঞ্চুরি করেছেন লিটন। সাদমান ইসলামকে নিয়ে উদ্বোধনী জুটিতেই তুলেছেন দুশর বেশি রান। আবাহনী তোলে ৩৩৩। টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় রান তাড়ায় শুরু থেকেই ছিটকে পড়ে রূপগঞ্জ। নাঈমের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির পরও শেষ পর্যন্ত তুলতে পারে তারা ২৮৪।
বিকেএসপিতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে আবাহনী উদ্বোধনী জুটিতেই অনেকটা গড়ে দেয় ম্যাচের ভাগ্য। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা লিটন রূপগঞ্জের বোলারদের তুলোধুনো করেন সাদমানকে নিয়ে। ৩৮ বলে অর্ধশতক করেন লিটন, ৭৮ বলে সেঞ্চুরি। এক ম্যাচ আগেই সেঞ্চুরি করেছিলেন ৭৯ বলে। মাঝের ম্যাচটিতে ৫০ করেছেন ৩৮ বলে। আরেক পাশে সাদমানই খেলেছেন সমান তালে। ৭ চার ও ৫ ছক্কায় ৮৩ বলে ৮৫ রানে সাদমানের বিদায়ে ভাঙে জুটি। দুজনে তুলে ফেলেছেন ততক্ষণে ১৭১ বলে ২০৭! এবরের লিগে উদ্বোধনী জুটিতেই এটিই প্রথম দুশ রান। খানিক পর বিদায় নেন লিটনও। নামের পাশে তখন ১০১ বলে ১৩৬! ২০ চারের সঙ্গে মেরেছেন ৩টি ছক্কা। শেষ ১০ ওভারে ৮ উইকেট হাতে নিয়ে শুরু করেও আবাহনী রান তুলতে পারে মাত্র ৬৪। তার পরও সংগ্রহ ৩৩৩!
রান তাড়ায় ৮ ওভারের আগেই রূপগঞ্জ হারায় ৩ উইকেট। নাঈম চেষ্টা করেছেন নিজেকেও ছাড়িয়ে। টানা দুটি জুটিতে তুলেছেন শতরান। ৯৯ বলে সেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন নাঈম। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ষষ্ঠ সেঞ্চুরিটি তার ক্যারিয়ার সর্বোচ্চও। ১১৯ বলে ১১ চার ও ৩ ছক্কায় ১২৩। তবুও জয়ের সম্ভাবনা জাগাতে পারেনি রূপগঞ্জ।
এই ম্যাচের দুই সেঞ্চুরিয়ান এখন লিগের সফলতম দুই ব্যাটসম্যান। ৯ ইনিংসে ৬৪.২২ গড়ে ৫৭৮ রান লিটনের। সমান ইনিংসে ৬১.৩৩ গড়ে নাঈমের রান ৪৯১। দুটি করে সেঞ্চুরি দুজনেরই। তবে এই ম্যাচের মতোই অবস্থা দুজনের দলের। ১০ ম্যাচের ৮টি জিতল আবাহনী। রূপগঞ্জের জয়-হার সমান ৫টি করে।
এদিকে, গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের অন্যতম আলোচিত নাম ছিলেন ইমতিয়াজ হোসেন। এবারও দ্বিতীয় ম্যাচেই করেছিলেন ৯৯ রান। এরপর আর সুবিধা করতে পারছিলেন না। অবশেষে ফিরলেন ফর্মে। রানে ফেরা উদযাপন করলেন দারুণ সেঞ্চুরিতে। খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতিকে ১০ উইকেটে হারিয়েছে প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব। এবারের লিগে ১০ উইকেটের জয় এটিই প্রথম। ১০ ম্যাচে দোলেশ্বরের জয় ৭টি। ফতুল্লায় দারুণ বোলিংয়ে খেলাঘরকে বেধে ফেলে তারা ১৭৮ রানেই। সেই রান তাড়া করে ফেলে তারা তুড়ি বাজিয়েই। ১০৭ রানে অপরাজিত থাকেন ইমতিয়াজ। এমনিতে ধীরে-সুস্থে খেলার জন্য পরিচিত হলেও অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান এদিন খেলেছেন বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। চতুর্থ লিস্ট ‘এ’ সেঞ্চুরিটি করেছেন ৯১ বলে!
বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে দিনের অপর ম্যাচটিও রোমাঘ্চ ছড়িয়েছে বেশ। সেঞ্চুরি না হলেও দু’জন গেছিলেন খুব কাছাকাছি। ইরফান শুকুর (৯৫) ও সাজ্জাদুল হকের (৭৫) ব্যাটে ভর করে ৯ উইকেটে ২৯৮ রান তোলে পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাব। জবাবে রুবেল মিয়ার (৭৫) দৈর্য্য ও অরুন কার্তিকের মারমুখি (৮৯) ইনিংসের কাছে টেকে নি প্রায় তিনশ’র বাধা। ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাব জিতেছে ২ উইকেটে ৩ বল হাতে রেখেই।
স ং ক্ষি প্ত স্কো র
আবাহনী-রূপগঞ্জ
আবাহনী লিমিটেড : ৪৯.৫ ওভারে ৩৩৩ (লিটন ১৩৬, সাদমান ৮৫, শান্ত ৩৫, শুভাগত ২৩; শরিফ ৩/৬১, সাব্বির ১/৭৮, মোশাররফ ৩/৩০, মাহমুদুল ২/৬০)।
লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ : ৫০ ওভারে ২৮৪/৬ (নাঈম ১২৩, মোশাররফ ৬৭, হামিদুল ৩৭*; আবু জায়েদ ৩/৪৪, সাইফুদ্দিন ১/৪২, শুভাগত ১/৩৫, সাকলাইন ১/৫৬)।
ফল : আবাহনী লিমিটেড ৪৯ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : লিটন দাস (আবাহনী)।
খেলাঘর-দোলেশ্বর
খেলাঘর : ৪৫.৩ ওভারে ১৭৮ (রবিউল ১৪, নাফিস ১৭, অমিত ৭৩, রনদিভ ৪১; ফরহাদ ২/৩৭, সানি ৩/১৪, দেলোয়ার ১/৩০, শরিফুল্লাহ ১/৪৬, চতুরঙ্গা ৩/২৯)।
প্রাইম দোলেশ্বর : ৩৩.১ ওভারে ১৮১/০ (ইমতিয়াজ ১০৭*, মজিদ ৬৪*; তানভির ০/৪৩, রনদিভ ০/৩১, শামসুল ০/৫৩, ডলার ০/৮, সাদিকুর ০/২৪, মাসুম ০/১৭)।
ফল : প্রাইম দোলেশ্বর ১০ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : ইমতিয়াজ হোসেন (দোলেশ্বর)।
পারটেক্স-ভিক্টোরিয়া
পারটেক্স স্পোর্টিং : ৫০ ওভারে ২৯৮ (সাজ্জাদ ২৫, ইরফান ৯৫, সাজ্জাদুল ৭৫, রাজিবুল ২১, রাকিন ৩১; মাহবুব ৪/৬৫, আরাফাত ১/৪৬, মনির ৩/৪৯, ইসলামুল ১/৩২)।
ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং : ৪৯.৩ ওভারে ২৯৯ (রুবেল ৭৩*, অরুন ৮৯, মুমিনুল ৩৩, মেহদি ২৭, মনির ২৭*; কবির ১/২২, জাকারিয়া ২/৫৮, রাজিবুল ১/৬৫, ইমরান ৪/৫৫)।
ফল : ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ২ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : অরুন কার্তিক (ভিক্টোরিয়া)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।