নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
পাকিস্তানের বিপক্ষে দেশের মাটিতে অভিষেকে করেছিলেন শূন্য। তবে এর বিষাদে ডুবে থাকেননি মাহমুদুল হাসান জয়। নিউজিল্যান্ডে খেলা পরের টেস্টেই খেলেন লড়াকু ৭৮ রানের ইনিংস। যাতে ভর করে বাংলাদেশ পেয়েছিল দেশটিতে ঐতিহাসিক জয়। সেটিকে ছাড়িয়ে নিজের তৃতীয় টেস্টেই এবার অঅরেকটি ইতিহাস গড়লেন তরুন এই ওপেনার। দক্ষিন আফ্রিকায় টেস্টে এই প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেলেন কোনো বাংলাদেশি ব্যাটার। মুমিনুল হকের ৭৭ ছিল আগের সেরা।
ডারবান টেস্টের তৃতীয় দিন এমন কীর্তি গড়লেন জয়। ব্যাটসম্যানের জন্য কঠিন পরীক্ষার জায়গায় প্রথম ইনিংসেই জয় ছুঁয়ে ফেললেন তিন অঙ্ক। ১৭০ বলে ছুঁয়েছিলেন পঞ্চাশ, পরের পঞ্চাশ এলো একটু দ্রুততায়- ২৬৯ বলে স্পর্শ করলেন তিন অঙ্ক। সেটিও এমন এক সময়, যখন বাংলাদেশ দল বিষাদে নিমজ্জিত। প্রথম সেশনে দারুণ ব্যাট করা লিটন দাস এই সেশনের দ্বিতীয় বলেই স্টাম্প হারিয়ে বসেছেন। ভুল বোঝাবুঝিতে ইয়াসির আলী খুইয়েছেন নিজের উইকেট। অন্য প্রান্তে অবিচল ছিলেন জয়।
লড়াকু ব্যাটিংয়ে ব্যবধান যতটা সম্ভব কমানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এই চেষ্টাতেই ভেসেছেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির আনন্দে। স্কিল ও টেম্পারামেন্টের পরীক্ষায় উতরে গিয়ে দলের খুব প্রয়োজনের সময় অসাধারণ ইনিংস খেলছেন জয়। এক প্রান্ত আগলে রেখে জুটি গড়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে শতকের কীর্তি গড়ে অবশ্য আর আটকাতে পারেননি। লাফ দিয়ে আকাশে মুষ্টি ছুড়ে উল্লাস প্রকাশ করেছেন। সঙ্গী মিরাজ তাই মনে করিয়ে দিয়েছেন, এখনো বহু পথ বাকি। নতুন করেই আবার শুরু করতে হবে লড়াই। রিপোর্টটি লেখা পর্যন্ত ৭ উইকেটে ২৫৭ রান নিয়ে দ্বিতীয় সেশন শেষ করেছে বাংলাদেশ।
অষ্টম উইকেট জুটি তখন মাত্র ১৯ হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংসের চেয়ে বাংলাদেশ তখনো পিছিয়ে ১৩২ রানে। এমন অবস্থায় দুই দলের মধ্যে ব্যবধান কমিয়ে আনা, যত অসম্ভবই মনে হোক না কেন- লিড এনে দেওয়ার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে হলে মাহমুদুলকে যে ইনিংস টেনে নিয়ে যেতেই হতো। তখন পর্যন্ত ২৬৯ বল খেলা মাহমুদুল সেটা জানেন না, এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। অন্তত ডারবানে যেভাবে খেলছেন, তাতে তেমন সন্দেহ জাগার কোনো সুযোগ নেই। তবু মিরাজ কোনো ঝুঁকি নেননি। সঙ্গীর উদ্যাপন শেষ হতেই মনে করিয়ে দিয়েছেন, এখনো অনেক কাজ বাকি।
প্রথম সেশনে ৮৫ রান তুলে মাত্র ১ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। সে উইকেটও তাসকিন আহমেদের, তাই তৃতীয় দিনের শুরুটা পুরোপুরি বাংলাদেশের। দ্বিতীয় সেশনের খেলা শুরু হতে না হতেই ধাক্কা খেয়েছে বাংলাদেশ। লিজাড উইলিয়ামসের লেংথে পড়া বল ভেতরে ঢুকছিল। মাত্রই বিরতি থেকে ফেরা লিটনের (৪১) ব্যাট ও প্যাডের মাঝের শূন্যস্থান পূরণ হলো না। প্রথমে ব্যাট , তারপর প্যাডের স্পর্শ নিয়ে তারপর স্টাম্প ভেঙে তুষ্ট হলো উইলিয়ামসের বল। ভাঙল ৮২ রানের জুটি।
ইয়াসির চনমনে শুরু করেছিলেন। তার ইতিবাচক ব্যাটিং রান তোলার গতি বাড়িয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশের। কিন্তু ইনিংস জুড়েই ব্যাটসম্যানদের মধ্যে যোগাযোগের ঘাটতি দেখা গেছে। ফিল্ডারদের ব্যর্থতা বারবার বাঁচিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশকে। ৮৯তম ওভারের প্রথম বল লেগ সাইডে খেলে দৌড় দিয়েছিলেন মাহমুদুল। প্রথমে দুই রানের জন্যই দৌড় দিয়েছিলেন দুজন। কিন্তু দ্বিতীয় রানের জন্য দৌড় শুরু করেই মাহমুদুল বুঝেছেন তা সম্ভব নয়। জোরে না বললেও ইয়াসিরের কানে যায়নি তা, দৌড়াতে দৌড়াতে অন্য প্রান্তে চলে এসেছেন। রান আউট হয়ে ফিরে গেছেন ইয়াসির (২২)। এ নিয়ে হতাশা দেখা গেছে মাহমুদুলের শরীরী ভাষায়। কিন্তু সেটা ব্যাটিংয়ে প্রভাব ফেলতে দেননি। মধ্যাহ্নবিরতির আগেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড গড়া মাহমুদুল তখন ছিলেন ৯১ রানে। শতকের জন্য প্রয়োজনীয় বাকি ৯ রান এই ওপেনার তুলে নিয়েছেন পরের ২৩ বলে। অন্যদিকে মিরাজও চুপ ছিলেন না, মেরেছেন একটি ছক্কা।
এরপর ‘আবার নতুন করে’ পথ চলছেন মাহমুদুল ও মিরাজ। তবে সে পথ চলায় মিরাজ মাঝে দুই ওভার একটু আগ্রাসী খেলে চার বলের মধ্যে তিনটি চার মেরেছেন। লিজাডের বলে মারা টানা দুই চারের পরেরটি সিøপে যে কারও হাতেই যেতে পারত। সৌভাগ্যবান মিরাজের হুঁশ ফিরেছে এরপর। রক্ষণের খোলসে ঢুকেছেন মিরাজও। সেশনের শেষ ৫ ওভারে তাই এসেছে ৫ রান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।