Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

দায়টা নিজের ঘাড়েই নিলেন তামীম

| প্রকাশের সময় : ২৪ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : প্রথম ইনিংসে দারুণ কিছু’র হাতছানি দিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে বিপর্যস্ত হতে হলো আরো একবার ঠিক যেনো ওয়েলিংটন টেস্টেরই প্রতিচ্ছবি। যেখানে ড্র’র সম্ভাবনা দিচ্ছে উঁকি, সেই ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের আত্মাহুতি আর ক্যাচ মিসে ১ দিন হাতে রেখেই হারতে হলো বাংলাদেশ দলকে। ওয়েলিংটন টেস্টে প্রথম ইনিংসের প্রশংসা (৫৯৫/৮ডি.) মøান করেছে বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে (১৬০)। ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে সেখানে বাউন্সার ঝড় সামাল দিয়ে ২৮৯ রানের বীরত্বপূর্ণ স্কোর জলাঞ্জলি দিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে থেমেছে বাংলাদেশ ১৭৩ এ! ব্যাটসম্যানদের একটার পর একটা বাজে আউটে বিরক্ত অন্তবর্তীকালীন টেস্ট অধিনায়ক তামীমও। নিজেই আত্মাহুতির পথ প্রদর্শক বলে নিজের উপর বিরক্তি একটু বেশিই তামীমের। দায়টা তাই নিজের ঘাড়েই নিয়েছেন তামীম ‘দ্বিতীয় ইনিংসে আমি যেভাবে আউট হয়েছি এটা মোটেই অধিনায়ক সুলভ ছিল না। এরমাধ্যমেই দল পরাজয়ের বার্তা পেয়ে যায়। আমি যেভাবে আউট হয়েছি সেটা খুব বাজে ছিল। বাজে বলের জন্য অপেক্ষা করতে পারতাম, লম্বা সময় ক্রিজে থাকতে পারতাম। আমি থাকলে হয়ত আমাকে ঘিরে জুটি গড়ে উঠত। চিত্রটা ভিন্ন হতে পারতো। যেহেতু আমাকে দিয়ে শুরু হয়েছে, তাই পুরো দায়-দায়িত্ব নিচ্ছি। এর জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থী।’
সাউদির শর্ট বলে যেভাবে পুল করতে যেয়ে ডিপ স্কোয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে এসেছেন, তাতে নিজেকে মহাঅপরাধী বলে গণ্য করছেন তামীম ‘যেহেতু আমি অধিনায়ক, আমার ব্যাটিং দিয়ে আমি আরও ভালোভাবে দলকে নেতৃত্ব দিতে পারতাম। আমার প্রতি প্রত্যাশা অনেক বেশি। যদি ধুঁকতাম, তাহলে মানা যেত। কিন্তু কোনো সময় ভুগিনি, তাই এটা ক্রাইম।’ পুরো সফরে বার বার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করেছে ব্যাটসম্যানরা, এমন সরল স্বীকারোক্তি তামীমের ‘খারাপ দিন বলব না। গোটা সফরে আমরা যা করেছি এই দিনটিতেও তার আরেকটা পুনরাবৃত্তি। শেষটা আমরা ভালো করতে পারিনি। ভালো পরিস্থিতি থেকে একটার পর একটা ম্যাচ হেরে গেছি। সেখান থেকে হেরে যাই। এমন নয় যে, আমরা খুব ভালো বলে আউট হয়েছি। বরং বলব, নিজেদের দোষে আউট হয়েছি।’
মুশফিকুর, ইমরুল, মুমিনুলের ইনজুরিতে দায়িত্বটা বেশি ছিল মাহামুদুল্লাহ’র। কিন্তু মিডল অর্ডারে এই ব্যাটসম্যান প্রত্যাশা পূরন করতে পারেনি। নেপিয়ারে প্রথম টি-২০ ম্যাচে ৫২ রানের ইনিংস ছাড়া বলার মতো ইনিংস নেই এই মিডল অর্ডারের। ওয়েলিংটন টেস্টে ২৬ও ৫’র পর ক্রাইস্টচার্চে ১৯ও ৩৮! তারপরও মাহামুদুল্লাহকে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর পক্ষপাতী নন তামীম ‘রিয়াদ ভাইয়ের জন্য হয়তো এটা তার সেরা সিরিজ ছিল না। ভালো সিরিজে এই বলগুলোই খুব সুন্দরভাবে খেলছে, ভালো টাইমিং হয়েছে, এবার হয়নি। আমি উনাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছি না। সব দিক থেকে উনার চেষ্টা ছিল।’
বাংলাদেশের বোলিং ইউনিট নিয়ে কোন অভিযোগ নেই তামীমের। পেস বোলার কামরুল ইসলাম রাব্বীর প্রশংসা করেছেন তামীম ‘রাব্বির মনোভাব দারুণ। ও খুব ভালো করেছে। পেস বোলিং ইউনিট নিয়ে আমার কোনো অভিযোগ নাই। কারণ, এই অভিজ্ঞতা নিয়ে ওরা খুব ভালো বোলিং করেছে।’
গতকাল ৯ম উইকেট জুটিতে রাব্বী-তাসকিনের ৫১ রানের ইনিংস মুগ্ধ করেছে তামীমকে ‘শুধু বোলিংই নয়, ব্যাটিংয়েও তারা ভালো করেছে। টেলএন্ডাররা ব্যাটিংয়ে সেভাবে কিছু করতে পারে না, একটা সময় এই অভিযোগ ছিল আমাদের। এবার দেখলাম, শরীরে বলের আঘাতও সইয়েছে। ওরা আমার চেয়েও বেশি পরিশ্রম করার জন্য প্রস্তুত ছিল; ততটুকু হয়তো আমিও পারিনি।’
নিউজিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশকে ভুগিয়েছে ভুরি ভুরি ক্যাচ ড্রপ। তামীমের হিসেবে ক্যাচ ড্রপের সংখ্যা ১৭টি। এখানেই কস্টটা পাচ্ছেন তামীম বেশি ‘নিউ জিল্যান্ড পাঁচটা ক্যাচ মিস করতে পারে, কিন্তু আমরা এটা পারি না। কারণ, আমাদের একজন বোলারকে একটা সুযোগ তৈরি করতে অনেক কষ্ট করতে হয়। বিশেষ করে সিøপ কর্ডনে। যে ধরনের উইকেটে খেলি না কেন, আমাদের দেশে হয়ত সিøপে বেশি ক্যাচ যায় না। আমরা যত তাড়াতাড়ি এই জায়গায় নিজেদের নিখুঁত করতে পারি আমাদের জন্য ততভালো। ফিল্ডিংয়েও যদি আমরা অর্ধেক বা ১৮ ক্যাচের ৭০ শতাংশও ধরতে পারতাম ফল কিন্তু অন্যরকম হতে পারতো।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তামীম

১৭ মার্চ, ২০১৭

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ