নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ১৫৪/৩ (৪০.২ওভারে)
(প্রথম দিন শেষে)
শামীম চৌধুরী : সবুজ ঘাসে ছেয়ে যাওয়া মাঠে ২২ গজী পিচও সবুজাভ! ন্যাড়া উইকেটে খেলতে অভ্যস্ত বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের জন্য এমন উইকেট এক ধরনের মৃত্যু ফাঁদই বটে। এক প্রাপ্ত দিয়ে গোলার মতো বাতাসে বার বার স্ট্যাম্পের উপর থেকে বেলস যাচ্ছে উড়ে! সঙ্গে মেঘাচ্ছন্ন আকাশÑথেমে থেকে বৃষ্টি! ২০০১ এবং ২০০৮ এ যে ওয়েলিংটনকে দেখেছে বাংলাদেশ, তার চেয়েও ভয়ংকর মৃত্যুফাঁদের মুখোমুখি বাংলাদেশ দল! এমন পিচে দাঁড়িয়ে থাকাও যে দায়। অতীতে চারটি ইনিংস যেখানে ১৩২, ১৩৫, ১৪৩ এবং ১১৩Ñসেখানে না জানি আরো কতো ভয়ংকর রূপ ছড়ায় কিউই পেসাররা? অথচ, সবুজ পিচ, আর প্রবল প্রতিপক্ষ কন্ডিশন কাবু করতে পারেনি। বরং ওয়েলিংটন টেস্টে অন্য এক বাংলাদেশ হাজির প্রথম দিনে! ২ দফায় বৃষ্টিতেও অদম্য মনোবলে বাধ সাধেনি। উল্টো নিউজিল্যান্ডকে হতভম্ব করে তাদের বোলারদের শাসন করেছে বাংলাদেশ দল পৌনে তিন ঘন্টা স্থায়ীত্ব পাওয়া দিনটিতে! ওয়েলিংটনে অতীতের ২টি টেস্টের স্কোর ছাড়িয়ে প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের স্কোর ১৫৪/৩ দিচ্ছে বড় স্কোরের আভাস। ওয়েলিংটনের বেসিন রিজার্ভের অতীত মুছে ফেলে এই প্রথম ব্যক্তিগত ফিফটিতে উজ্জ্বাল্য ছড়িয়েছেন তামীম (৫৬), মুুমিনুল (৬৪)।
কিভাবে সম্ভব হয়েছে তা? তার কৃতিত্ব প্রথমে দিতে হবে তামীমকে। টেস্টে সফল এই এই ওপেনার গতকাল শুরু থেকেই ছিলেন আক্রমনাত্মক। দিনের তৃতীয় বলে বোল্টকে থার্ডম্যান দিয়ে বাউন্ডারিতে শুরু করেছিলেন ছড়ি ঘোরানো। দলের স্কোর যখন ৬০,তখন তামীমের ৫৬! ভাবুন তো? তার অত্যাচারে পিষ্ঠ বোল্টের প্রথম স্পেলটি (৩-০-২৬-০) ছিল এক কথায় হতাশার। এক এন্ডে কিউই পেসারদের উপর চালিয়েছেন চাবুক তামীম,অন্য এন্ডে মুমিনুল সংযমী ব্যাটিংয়ে দিয়েছেন সাপোর্ট। সাউদির বুক সমান উঁচু শর্ট বলকে হুক করতে যেয়ে ডিপ ফাইন লেগে ইমরুল কায়েসের ক্যাচ দিয়ে আসার পরও শংকায় পড়তে হয়নি বাংলাদেশ দলকে। বোল্টের দ্বিতীয় স্পেলের দ্বিতীয় বলে সুইং ডেলিভারীতে রিভিউ আপীলে এলবিডাবøুতে ফিরে গেছেন তামীমÑতবে তার আগে ৫০ বলে ১১টি বাউন্ডারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৬ষ্ঠ ফিফটিতে (৫৬ রান) টিমমেটদের করেছেন পজিটিভ ব্যাটিংয়ে উদ্বুদ্ধ।
তামীমের ওই ব্যাটিং থেকে উদ্বদ্ধ হয়ে মুমিনুল ওই ওপেনারের অনুপস্থিতিটা করেছেন পূরন। প্রথম রানটির জন্য যে ছেলেটিকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৭তম বল পর্যন্ত, সেই মুমিনুল ৩০তম বলের মোকাবেলা করতে এসে পেয়েছেন প্রথম বাউন্ডারির দেখা। বোল্টকে এক ওভারে মিড উইকেট,পয়েন্ট এবং মিড অফ দিয়ে মুমিনুলের তিনটি বাউন্ডারি নিউজিল্যান্ড ফিল্ডারদেরও করেছে বিস্মিত। সাউদিকে এক ওভারে ২টি বাউন্ডারি, ১ ছক্কায় নিজের জাতটা আর একবার দিয়েছেন জানিয়ে। ওয়েগনারকে গালি-পয়েন্টের ফাঁক দিয়ে বাউন্ডারিতে ১১ তম টেস্ট ফিফটি ছড়িয়েছে সৌরভ। তামীমের সঙ্গে ৪৪ রানের পার্টনারশিপে দিয়েছেন একটার পর একটা বল ছাড়ার পরীক্ষা। তামীমের ফিরে যাওয়ার পর সেই ছেলেটিই দলের অধিকাংশ স্কোরিং শটের দায়িত্ব নিয়েছেন! মাহামুদুল্লাহ’র সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৮৫ রানে নেতৃত্বটা তারই।
ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিতে মুমিনুলের প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। ২০১৩ সালে চট্টগ্রাম টেস্টে ১৮১’র পর ঢাকা টেস্টে নট আউট ১২৬Ñওয়েলিংটনে ফিরতি দেখায় সেখানে ৬৪ রানে ব্যাটিংয়ে আছেন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টানা তিন ম্যাচে সেঞ্চুরির হ্যাটট্রিক যে হাতছানি দিচ্ছে এই লিটল ম্যানের। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ ম্যাচে ৪৪০ রানে ২ সেঞ্চুরির পাশে ১ হাফ সেঞ্চুরি, ৪৪০ রানে গড় ২২০.০০!
এমন একটি দিনকে আরো সুন্দর একটি দিনে পরিনত করার সুযোগ ছিল। সে সম্ভাবনায় ধাক্কা দিয়েছেন মাহামুদুল্লাহ। দিনের অন্তিম সময়ে এসে ওয়েগনারের আউটসুইং দেখেও উইকেটের পেছনে দিয়ে এসেছেন ক্যাচ (২৬)। এভাবে মাহামুদুল্লাহজ আত্মাহুতি না দিলে নিউজিল্যান্ডকে নির্ঘুম রাতের যন্ত্রনা দিতে পারতো বাংলাদেশ। তারপরও ভাগ্যটা ভালই বলতে হবে, কারন, দিনের একেবারে শেষ দিকে এসে ওয়েগনারের বলে স্কোয়ার লেগে স্যান্টারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ৪ রানের মাথায় বেঁচে যাওয়া সাকিব অক্ষত আছেন ৬ রানে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।