পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশের আইন-শৃঙখলা প্রয়োগকারী সংস্থা, গোয়েন্দা সংস্থা, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের দ্বারা সংঘটিত বলপূর্বক গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন এবং অন্যান্য গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ এবং যাচাইয়ের জন্য জাতিসংঘের অধীনে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশে গুম হওয়ার ঘটনার ওপরে সম্প্রতি নেত্রো নিউজে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘নেত্রো নিউজের এই সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরে এ্যামিনেস্টি ইন্টারনেশনাল সোমবার স্ট্যাটমেন্ট দিয়েছে এই যে ভয়াবহ, ভয়ংকর মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে চিত্র, এই চিত্র অবশ্যই শুধু নিন্দা নয়, এটা জঘন্যতম একটা ঘটনা। এই ঘটনাগুলো ঘটছে এবং তারা বাংলাদেশে অবস্থারত জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস কমিশনের যে হাইকমিশনার তাকে তারা বলেছেন যে, আপনি এটার নিন্দা করেন এবং এর সম্পর্কে নিরপেক্ষ সুষ্ঠু তদন্ত অনুষ্ঠান করেন।”
তিনি বলেন, এটাকে হালকা করে দেখার কোনো কারণ নেই। আমাদের বহু ভাই চলে গেছেন, আমরা তাদের ফেরত পাইনি, আমাদের বহু নেতা চলে গেছেন তাদের ফেরত পাইনি। ৬‘শ এর উপরে নেতাকর্মীকে এভাবে গুম, অত্যাচার, নির্যাতন করা হয়েছে। তিনি জাতিসংঘের নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে এই বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করা এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করার দাবি জানান। গতকাল মঙ্গলবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত দোয়া-মাহফিলে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ৭৮তম জন্মদিন উপলক্ষে তার রোগমুক্তি ও আশু সুস্থতা কামনা এবং চলমান আন্দোলনে শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল ‘গৃহবন্দি’ খালেদা জিয়ার প্রাথমিক ও নিঃশর্ত মুক্তি চেয়ে বলেন, বাংলাদেশে রাজনীতির ইতিহাস হচ্ছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। বেগম খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্র- এই দুটো অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত-এটাকে আলাদা করা যাবে না। যিনি একজন গৃহবুধ ছিলেন, জাতির প্রয়োজনে, যুগের প্রয়োজনে, মানুষের প্রয়োজন যখন সেই গৃহবুধ গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করবার জন্যে সামনে এসে দাঁড়ালেন তখন থেকে তিনি সংগ্রাম শুরু করেছেন। সারাটা জীবন এই গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করার জন্যে, গণতন্ত্র চর্চা করার জন্যে তিনি সংগ্রাম করেছেন। এখন পর্যন্ত এই গণতন্ত্রের জন্যে ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের মামলায় তাকে গৃহে অন্তরীণ করে রাখা হয়েছে। আমাদের প্রথম শর্ত হচ্ছে, গণতন্ত্রের মা যিনি গণতন্ত্রকে রক্ষা করেছেন, যিনি গণতন্ত্র চর্চা করেছেন তাকে অবশ্যই প্রাথমিক মুক্তি দিতে হবে এবং নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়েছে যার কোনো ভিত্তি নেই। আমাদের নেতা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসিত করে রেখেছে। আমাদের ৩৫ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, আমাদের ৬‘শ উপরে নেতাকর্মীকে গুম করেছে, সহস্রাধিক নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে। এই তো সেদিন ভোলাতে কিভাবে আমাদের ছাত্রদলের নেতা নুরে আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবদুর রহিম পয়েন্ট ব্যাংক রেঞ্জে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। প্রতিদিন গ্রেফতার করা হচ্ছে, প্রতিদিন মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে। এসব কথা আর গোপন নেই।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমান সরকার যারা অবৈধ এবং জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে যাদেরকে তুলনা করা যায় একমাত্র পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে। পাক হানাদার বাহিনী যেভাবে এদেশের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন করে, হত্যা করে, খুন করে এদেশের মানুষের স্বাধীনতার আকাংখাকে ধবংস করে দিতে চেয়েছিলো, ঠিক একইভাবে আজকের অবৈধ অনির্বাচিত ফ্যাসিবাদী সরকার তারা বাংলাদেশের মানুষের সমস্ত আশা-আকাক্সক্ষাগুলোকে ধুলিসাৎ করেছে, ধবংস করে দিয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা জানি এই সরকার সহজে যাবে না। তাদের পায়ে তলে মাটি নেই, মানুষ তাদের সঙ্গে নেই। সেজন্য আমরা জনগণকে সংগঠিত করে সমস্ত রাজনৈতিক শক্তিকে সংগঠিত করে এই সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে একটা জনগণের সরকার নিয়ে আসতে চাই।
সরকারকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরে আসার জন্য সমস্ত মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে যে মামলা আছে সেই মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। এই সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে, পদত্যাগ করে একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সেই সঙ্গে সংসদ বিলপ্ত করতে হবে এবং নতুন একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করে সেই কমিশনের মাধ্যমে একটা জনগণের সরকার, জনগণের পার্লামেন্ট গঠন করতে হবে।
মহানগর উত্তরের আহবায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আমিনুল হক ও রফিকুল আলম মজনুর পরিচালনায় দোয়া মাহফিলপূর্ব আলোচনায় ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক আবদুস সালাম ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বক্তব্য রাখেন।
মিলাদ মাহফিলে বিএনপির খায়রুল কবির খোকন, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, আবদুস সালাম আজাদ, আবদুল বারী ড্যানি, শামীমুর রহমান শামীম, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আবদুল খালেক, সাইফুল আলম নিরব, মহানগরের ইশরাক হোসেন, মোহাম্মদ মোহন, ইউনুস মৃধা, আবদুস সাত্তার, হারুনুর রশীদ, এজিএম শামসুল হক, হাবিবুর রশীদ হাবিব, যুব দলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মামুন হাসান, মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন, ওলামা দলের শাহ নেসারুল হক, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, ছাত্রদলের সাইফ মাহমুদ জুয়েলসহ মহানগরের কয়েক‘শ নেতা-কর্মী অংশ নেন।###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।