পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবনের স্বপ্ন ছিল একটি দারিদ্র্য ও শোষণমুক্ত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা। জাতির পিতার সেই অর্থনৈতিক দর্শন অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে করোনা পূর্ববর্তী গত এক দশক আমাদের গড়ে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। এমনকি অপ্রত্যাশিত অভিঘাত কোভিড-১৯ মহামারী কালে গত বছর যেখানে বৈশ্বিক অর্থনীতি ৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে, এমন ক্রান্তিকালেও বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশ শীর্ষ পাঁচটি সহনশীল অর্থনীতির মধ্যে রয়েছে। অতি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ সভার টেকসই উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সম্মেলন ২০২১-এ আমাদের উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে এসডিজি প্রগ্রেস অ্যায়ার্ডে ভূষিত করেছে। আমাদের স্বাধীনতার লগ্ন থেকেই জাতিসংঘ বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি ও বিশ্বস্ত অংশীদার এবং আমাদের সার্বিক উন্নয়ন অর্জনে এই সংস্থা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে এবং ২০৩০ এজেন্ডা অর্জনে আবারও গতি অর্জনে এই ফ্রেমওয়ার্ক ভূমিকা রাখবে। জাতিসংঘ বাংলাদেশকে তার অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহযোগী হিসাবে পূর্বের ন্যায় কাজ করবে বলে অর্থমন্ত্রী আশা ব্যক্ত করেন।
গতকাল এনইসি-২ সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এবং বাংলাদেশে জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় -এর উদ্যোগে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন কো-অপারেশন ফ্রেমওয়ার্ক ২০২২-২০২৬ প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। কোভিড পরিস্থিতি বিবেচনা করে এই অনুষ্ঠানটি ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে হয়েছে। এই প্রকাশনা অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন। এ অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো।
স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের বিষয়ের উপর জোর দিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমরা এলডিসি থেকে উত্তরণ করতে চলেছি। ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশ হওয়ার লক্ষ্য অর্জন এবং এই উন্নয়নের সুবিধাসমূহ যেন সবাই সমানভাবে পায়, তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। বাংলাদেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীগুলোর জীবনে বাস্তব ও টেকসই পরিবর্তন আনার লক্ষ্য অর্জনে এই ফ্রেমওয়ার্ক কাজ করবে।
উদ্বোধনী বক্তব্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এই কো-অপারেশন ফ্রেমওয়ার্কের আওতায় বাংলাদেশ সরকার ও জাতিসংঘ কান্ট্রি টিমের যৌথ উদ্যোগ বাস্তবায়নের পটভূমি তৈরী হবে- যা বাংলাদেশ সরকার প্রণীত ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়নকে বেগবান করবে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্রেমওয়ার্ক, যা এলডিসি থেকে উত্তরণ, কোভিড-১৯ এর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা এবং এসডিজি অর্জনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জাতিসংঘের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করতে আমাদের পথনির্দেশনা দেবে।
বাংলাদেশে জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো তার বক্তব্যে এই কো-অপারেশন ফ্রেমওয়ার্ক প্রণয়নে সরকার ও অংশীদারদের ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করা, প্রতিটা শিশুর জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদান, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ পরিবার দৃঢ়ভাবে বাংলাদেশ সরকারের থাকবে বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা, বাংলাদেশে জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর প্রধানরা, নিউইয়র্কে ইউএন ডেভেলপমেন্ট কোঅরডিনেশন অফিসের পরিচালক রবার্ট পাইপারও পূর্ব-ধারণকৃত বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং জাতিসংঘের পক্ষে আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো যৌথভাবে মোড়ক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে এই অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।