Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

দ.এশিয়ায় প্রায় আড়াই লাখ শিশু-প্রসূতির মৃত্যুর আশঙ্কা

জাতিসংঘের নতুন প্রতিবেদন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ মার্চ, ২০২১, ১২:০১ এএম

কোভিড-১৯ এর কারণে ব্যহত স্বাস্থ্যসেবা। দক্ষিণ এশিয়ায় অতিরিক্ত ২ লাখ ৩৯ হাজার শিশু ও প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর কারণ হতে পারে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা পরিবারগুলোর ওপর মহামারীর প্রভাব মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে স্বাস্থ্যসেবা পুনরায় চালু ও জোরদার করার আহবান জানিয়েছে সংস্থাটি।
জাতিসংঘের নতুন এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোভিড-১৯ এর ফলে দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে অপরিহার্য জনস্বাস্থ্য পরিষেবাগুলোর সহজলভ্যতা ও ব্যবহার ব্যাপকভাবে কমে যাওয়া ২০২০ সালে অতিরিক্ত প্রায় ২ লাখ ২৮ হাজার শিশুর মৃত্যুর কারণ হতে পারে। এ ছাড়া অতিরিক্ত প্রায় ১১ হাজার প্রসূতি মায়ের মৃত্যুও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কোভিড-১৯ সংক্রমণের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করার মাঝে এই অঞ্চলে ক্লিনিক এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়। অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য ও পুষ্টি কর্মসূচি স্থগিত হয়ে যায়। ২০২০ সালের শেষে দক্ষিণ এশিয়ায় কোভিড-১৯ এর রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ১০ লাখে পৌঁছে যায়। ইউনিসেফের দ্বারা কমিশন করা এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) সহযোগিতায় তৈরী করা প্রতিবেদন সেবা গ্রহণ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার আরও উদাহরণ তুলে ধরেছে। এর মধ্যে রয়েছে নেপাল ও বাংলাদেশে মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে এমন শিশুদের চিকিৎসা নেয়ার হার প্রায় ৮০ শতাংশ কমে যাওয়া এবং পাকিস্তান ও ভারতে শিশুদের টিকাদান তীব্রভাবে হ্রাস পাওয়া।

ইউনিসেফের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক জর্জ লারিয়া-অ্যাডজেই বলেন, এসব গুরুত্বপূর্ণ সেবা গ্রহণ ব্যাপক মাত্রায় কমে যাওয়ায় দরিদ্রতম পরিবারগুলোর স্বাস্থ্য ও পুষ্টির ওপর এর মারাত্মক প্রভাব পয়েছে। যে শিশু ও মায়েদের জন্য এই পরিষেবাগুলো অত্যন্ত জরুরি তাদের জন্য এগুলো পুনরায় পুরোমাত্রায় সচল করা অত্যাবশকীয়। একইসঙ্গে এই পরিষেবাগুলো গ্রহণে মানুষ যাতে নিরাপদ বোধ করে তা নিশ্চিত করার জন্য সম্ভব সব কিছুই করতে হবে।

প্রতিবেদনে গর্ভবতী নারী, কিশোর-কিশোরী এবং ছোট শিশুদের জন্য অপরিহার্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। টিকা এবং শিশুদের জন্য অপরিহার্য অন্যান্য ওষুধ সরবরাহ ও বিতরণ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করাও গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ডবিøউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ড. পুনম ক্ষেত্রপাল সিং বলেন, অপরিহার্য স্বাস্থ্যসেবা বজায় রাখা ডবিøউএইচওর কোভিড-১৯ মোকাবিলা কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। এই অঞ্চলের দেশগুলো অপরিহার্য সেবা প্রদান অব্যাহত রাখা এবং বন্ধ হয়ে যাওয়া সেবাগুলো পুনরায় চালু করার প্রচেষ্টায় নজর দিচ্ছে। কারণ এসব সেবা ব্যহত হলে প্রতিরোধযোগ্য কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়াবে।

মহামারী নিয়ন্ত্রণে গৃহীত পদক্ষেপের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় ৪২ কোটি শিশু বিদ্যালয়ের বাইরে রয়ে গেছে। প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ৪৫ লাখ মেয়ের আর কখনো বিদ্যালয়ে ফেরা হবে না। যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও তথ্য সেবা প্রাপ্তির সুযোগ কমে আসায় তারা বিশেষ ঝুঁকিতে রয়েছে।
ইউএনএফপিএ’র এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের পরিচালক বিয়র্ন অ্যান্ডারসন বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার সাংস্কৃতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এসব সেবাপ্রাপ্তি বন্ধ থাকায় বৈষম্য গভীর হচ্ছে। এটি প্রসূতি মায়ের ও নবজাতকের মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এ ছাড়া এই অঞ্চলে বাড়তি ৩৫ লাখ অনাকাঙ্খিত গর্ভধারণের ঝুঁকি রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতিসংঘ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ