পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি রৌশন আরা বেগম নিহত হয়েছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। গত রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় (স্থানীয় সময়) কঙ্গোর কিনশাসা নামক স্থানে তাকে বহনকারী গাড়িকে একটি লরি ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। এ ঘটনায় তাকে বহনকারী গাড়ির চালকসহ দু’জন আহত হয়েছেন। তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে পুলিশের এসপি (কমান্ডার) ফারজানা ইসলামও রয়েছেন।
রৌশন আরা বেগম গত চলতি মাসের গত শনিবার মিশনে বাংলাদেশ পুলিশ ইউনিট সদস্যদের মেডেল প্যারেডে অংশ নিতে গিয়েছিলেন। শান্তিমিশনে পৌঁছানোর একদিন পর নিহত হলেন তিনি। এই নারী বাংলাদেশ পুলিশের প্রথম পুলিশ সুপার (এসপি) ছিলেন।
এদিকে, কঙ্গোতে সড়ক দুর্ঘটনায় রৌশন আরার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া পুলিশের আইজিপিসহ আরও অনেকে শোক প্রকাশ করেন। গতকাল পৃথক শোকবার্তায় প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী মরহুমার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। মৃত্যুকালে তিনি স্বামী, একমাত্র কন্যা ও ভাই-বোনসহ বহু আত্মীয়-স্বজন এবং গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
রৌশন আরার মৃত্যুতে পুরো পুলিশ প্রশাসনে শোকের ছায়া বইছে। এ ঘটনায় পুলিশের আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারাও রৌশন আরার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, রৌশন আরা ৩ মে মিশনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। কঙ্গোতে পৌঁছান ৪ মে। মিশনে পৌঁছানোর একদিন পরেই ৫ মে রোববার এ মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি।
পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, রৌশন আরা বেগম ১৯৮৮ সালের ১৫ ফেব্রæয়ারি বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পুলিশ ক্যাডারে যোগদান করেন। মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষে তিনি ঢাকায় শিক্ষানবীস সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমি, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে (ডিএমপি) সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৯৪ সালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে কক্সবাজারে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর একই পদে টাঙ্গাইল, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে কর্মরত ছিলেন।
তিনি ১৯৯৮ সালের ৩ ডিসেম্বর প্রথম নারী পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে মুন্সীগঞ্জে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর তিনি অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে পদোন্নতি পান।
এই পুলিশ কর্মকর্তা দেশের বাইরে যুক্তরাজ্যের পুলিশ স্টাফ কলেজ, ব্রামশিল থেকে স্ট্রাটেজিক প্ল্যাানিং কোর্স এবং লিডারশিপ কোর্স ফর ফিমেল লিডার’স ইন ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি কোর্সে অংশগ্রহণ করেন।
পুলিশ বাহিনীতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দুইবার আইজিপি ব্যাচপ্রাপ্ত হন এবং বাংলাদেশ সরকারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পুলিশ পদক ‘পিপিএম’ লাভ করেন। ১৯৯৮ সালে তিনি মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার থাকাকালীন ‘অনন্যা শীর্ষ দশ-১৯৯৮’ পুরস্কার ও ২০১২ সালে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব উইমেন পুলিশের স্কলারশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০১২ লাভ করেন।
রাজধানী ঢাকার মগবাজারের সাবেক টিএন্ডটি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ভিকারুননিসা-নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন রৌশন আরা। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ বিজ্ঞানে বিএসএস (অনার্স), এমএসএস ডিগ্রি অর্জন করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।