Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঘূর্ণিঝড় ফণির মতিগতি রহস্যময়

দিক পরিবর্তন করলে বাংলাদেশেও আঘাতের আশঙ্কা

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ১ মে, ২০১৯, ৮:৪৬ পিএম | আপডেট : ৯:৩৭ পিএম, ১ মে, ২০১৯

অতি প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ফণি। এর মতিগতি রহস্যময়। গোড়াতে ফণির গতিমুখ ছিল দক্ষিণ ভারতের তামিলনাডু-অন্ধ্র উপকূলের দিকে। তখন ফণি দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর থেকে ধীরে ধীরে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। এরপর গতিপথ কিছুটা পরিবর্তন করে উত্তর, উত্তর-পশ্চিমে যেতে থাকে। গতিমুখ থাকে উডিশার দিকে।
তবে আজ বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড় ফণি সামান্য উত্তর দিকে অগ্রসর হয়েছে। এখন এটি কিছুটা ডান দিকে বেঁকে গিয়ে উত্তর, উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে ফণির গতিমুখ উডিশা ছাড়াও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল বরাবর হতে পারে। ফণির সর্বশেষ গতিপ্রকৃতি বিশ্লেষণ করে আবহাওয়া বিভাগ এবং আন্তর্জাতিক আবহাওয়া চ্যানেলগুলো এমনটি পূর্বাভাস দিচ্ছে। তবে ফণি এখনও দূরে অবস্থানের কারণে এটি উপকূলে আঘাত হানার পূর্ব পর্যন্ত দিক বদল করতে পারে।
দক্ষিণ ভারতের উডিশা উপকূলের দিকে অগ্রসররত ঘূর্ণিঝড় ফণির শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি কম গতিতে এগিয়ে সমুদ্রে বেশি শক্তি লাভ করছে। বঙ্গোপসাগর খুবই উত্তাল ও বিক্ষুব্ধ রয়েছে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের সংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে আগের দেয়া ২ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সঙ্কেত নামিয়ে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে প্রশাসন সূত্র বলছে, ফণি যদি গতিপথ বদল করে দক্ষিণ ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশের উপকূলের দিকেও এগিয়ে আসে তখন প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সঙ্কেত বৃদ্ধি করা হবে।

অবশ্য ফণি তার বর্তমান স্বাভাবিক গতিপথ বজায় রাখলে আগামী শুক্রবার-শনিবারের মধ্যেই দক্ষিণ ভারতের উডিশা উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এর প্রভাবে শনিবার থেকে ভারত ও বাংলাদেশে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

ফণির কারণে ঢাকা, চট্টগ্রাম, উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশজুড়ে ভ্যাপসা গরম অব্যাহত রয়েছে। আজ দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩৬.২ এবং সর্বনিম্ন ২৮.১ ডিগ্রি সে.। তাপদাহ অব্যাহত থাকার পূর্বাভাস রয়েছে। খরতাপের তীব্রতায় জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। দেশের সমুদ্র উপকূল চর ও দ্বীপাঞ্চলে বিরাজ করছে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতের আশঙ্কায় জনমনে ভয়-ভীতি। ফণি বাংলাদেশের উপকূলভাগ থেকে এখন প্রায় এক হাজার কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে।

ঘূর্ণিটড়টি দক্ষিণ ভারতের উপকূলের প্রায় সাড়ে ৫শ’ কিলোমিটার ব্যবধানে এসে গেছে। উডিশাসহ দক্ষিণ ভারতের উপকূলীয় অঞ্চলে দুর্যোগ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে সমুদ্র উপকূলের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছে নেভি ও কোস্ট গার্ড।

সর্বশেষ আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানা গেছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’ সামান্য উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১২০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১১৬০ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৬০ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ১০৭০ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

ঘূর্ণিঝড়টি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর, উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ১৬০ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৮০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে ফণি ঘণ্টায় ২০ থেকে ২৭ কিলোমিটার গতিতে পথ অতিক্রম করছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে যাতে স্বল্প সময়ের নোটিশে তারা নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে। সেই সাথে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ফণি যদি গভীর সমুদ্র থেকে খুলনা-মংলা হয়ে বাংলাদেশে আঘাত হানে তাহলে ভয়াবহ ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। আর যদি এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যা হয়ে আমাদের দেশে আসে তাহলে তা অনেকটাই হালকা হয়ে যাবে। এরফলে ক্ষতির আশঙ্কা কম থাকবে।

তিনি জানান, বর্তমানে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর এলাকাগুলোতে ৪ নম্বর সংকেত দেখানো হচ্ছে। তবে প্রয়োজনে বিপদ সংকেত বৃদ্ধি করা হবে। এ মুহূর্তে ফণির গতিপথ যেভাবে রয়েছে তাতে প্রথমে এটি ভারতের উডিশায় আঘাত করবে। এরপর পশ্চিমবঙ্গে। তবে এর গতিপথ যদি পরিবর্তন হয়ে বাংলাদেশে আঘাত হানে তখন এর আঘাত খুলনা, মংলা, সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। ফণির গতিপ্রকৃতির দিকে সতর্ক পর্যবেক্ষণ রাখা হচ্ছে।



 

Show all comments
  • MAHMUD ২ মে, ২০১৯, ১০:৩২ এএম says : 0
    Hi ALLAH Save us and save our country.
    Total Reply(0) Reply
  • Subrota Banik ২ মে, ২০১৯, ৪:২২ পিএম says : 0
    AllAH! HELPS THOSE WHO HELP THEMSELVESS.
    Total Reply(0) Reply
  • saifuddin ২ মে, ২০১৯, ৫:৩৩ পিএম says : 0
    May Allah help me. Help our children. Save my country and all people.save our school,madrasha,musjid.
    Total Reply(0) Reply
  • RAJIB ২ মে, ২০১৯, ৭:৪৫ পিএম says : 0
    HI GOD save us and save our country.
    Total Reply(0) Reply
  • Vcdh ২ মে, ২০১৯, ১১:৪১ পিএম says : 0
    Use I
    Total Reply(0) Reply
  • Shemanto das ৩ মে, ২০১৯, ১২:১৯ এএম says : 0
    হে ভগবান আমাদের রক্ষা করো।
    Total Reply(0) Reply
  • Rhydom Aegex ৩ মে, ২০১৯, ৩:১৪ এএম says : 0
    Allah help us
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফণি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ