Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফণি’র ছোবলে কোটি মানুষ অন্ধকারে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ মে, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’র কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। শুক্রবার থেকে অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। সারাদেশ মিলিয়ে প্রায় এক কোটি গ্রাহকের ঘর অন্ধকার হয়ে পড়ে। যার ৮০ ভাগই পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহক। তবে দ্রæত বিদ্যুৎ সংযোগ সচল করতে কাজ শুরু করেছে বিতরণ কোম্পানিগুলো।
গতকাল শনিবার বিকালে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে থেকে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির মোট এক কোটি ৬০ লাখ গ্রাহকের মধ্যে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল ৮১ লাখ ৬ হাজার ৫০০। সারাদেশে তাদের ১২৯টি পোল বা বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে। এছাড়া পিডিবির ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, টাঙ্গাইল এবং ফেনীর গ্রাহকরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ৮০টি বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে যাওয়ায় সোয়া দুই লাখের মতো গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন।
বিদ্যুৎ সচিব আহমদ কায়কাউস বলেছেন, ঘূর্ণঝড় ফণি মোকাবিলায় বিদ্যুৎকেন্দ্র গুলোর কর্মকর্তাদের আগামী ৪৮ ঘণ্টা নিজ কর্মস্থলে সতর্কতার সঙ্গে অবস্থান করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপশি ক্ষতি মোকাবিলার জন্য আগে থেকেই দক্ষ জনবল বাড়ানো হচ্ছে। এছাড়াও বিকল্প উপায়ে কীভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায়, তার একটি পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। সচিব বলেন,ঝড়ের কারণে পোল উপড়ে যায়। অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে আগেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। এতে আমাদের লোড ম্যানেজমেন্টের সমস্যা হয়। ঝড় শুরুর আগেই হঠাৎ করে কেন্দ্র বন্ধ না করে ন্যাশনাল লোড ডেচপাস সেন্টার (এনএলডিসি)-এর সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) এবং বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ২০৯টি বৈদ্যুতিক খুঁটি পড়ে গেছে। এসব খুঁটি আবার তুলে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষকে একটু ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছে। বিতরণ কোম্পানিগুলোর মধ্যে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি এবং ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো)।
পিডিবি সূত্র বলছে, কয়েক দিন ধরে ১২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হলেও শুক্রবার দিনের বেলা ৭ হাজার ৭৯৮ মেগাওয়াট এবং রাতে আরও কমিয়ে ৭ হাজার ৫৯৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছে। গতকাল দিনের বেলা কমিয়ে ৪ হাজার ২৫০ মেগাওয়াট আর রাতে সর্বোচ্চ ৭ হাজার মেগাওয়াটের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বিতরণ স্বাভাবিক না হলে উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে পিডিবি।
আরইবি সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন যেখানে ৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয় সেখানে শনিবার বিকালে সরবরাহ ছিল মাত্র এক হাজার ৮০০ মেগাওয়াট। বিভিন্ন সমিতির মোট তিন হাজার ৭২৬ ফিডারের মধ্যে ১ হাজার ৬৩৩ ফিডার বন্ধ ছিল। তবে সারাদেশে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের দায়িত্বে থাকা পিজিসিবির কোনও ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। কিন্তু বিতরণ সমস্যার কারণে তারা অনেক স্থানে সঞ্চালন স্থগিত রেখেছে। পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুম আল বেরুনী বলেন, আমাদের কোনও সাবস্টেশন বা কোনও লাইনের ক্ষতি হয়নি। বিতরণ কোম্পানিগুলো তাদের ত্রুটি সারিয়ে বিদ্যুৎ নিতে চাইলেই আমরা সরবরাহ করছি।’
পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মঈন উদ্দিন ইনকিলাবকে বলেন, বিকালেই আমরা কাজ শুরু করেছি। আশা করছি শনিবার রাতের মধ্যে অনেক জায়গায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। কোনও ক্ষেত্রে সম্ভব না হলে আগামী কাল (আজ রোববার) পুরোটা ঠিক হয়ে যাবে।
ওজোপাডিকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৗশলী মো. শফিক উদ্দিন বলেন, আমরা বিকাল নাগাদ সব ফিডার চালু করেছি। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি এবং ঝড়ো হাওয়ার কারণে কিছু লাইন ট্রিপ করে যায়, যা দ্রুত সারিয়ে ফেলা হয়েছে।
##



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফণি’র ছোবলে কোটি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ