Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঘন্টায় ১০০ কিলোমিটার গতি নিয়ে মধ্যরাতে ফণি সাতক্ষীরার উপকুলে, জোয়ার আতংক, ৭ নং বিপদ সংকেত

সাতক্ষীরা জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩ মে, ২০১৯, ৮:৪২ পিএম | আপডেট : ৭:৫২ এএম, ৪ মে, ২০১৯

ঘূর্ণিঝড় ফনি আতঙ্কে রয়েছেন সাতক্ষীরার সুন্দরবন সংলগ্ন শ্যামনগর, কালিগঞ্জ ও আশাশুনির উপকুলীয় অঞ্চলসহ জেলার ২২ লাখ মানুষ। রাত যতো গভীর হচ্ছে, ফণি আতংক ততোই বাড়ছে। মধ্যরাতে অমাবস্যার জোয়ারের পানিতে ফুলে ফেপে উঠবে স্থাণীয় নদ-নদী। আর এসময় যদি ঘূর্ণিঝড় ফণি এলাকা অতিক্রম করে তাহলে বিপূল প্রাণহানি ঘটার আশংকা রয়েছে। মধ্যরাতের এই সময়টা উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ, এমনটিই জানালেন ওই এলাকায় বসবাসরত সমীর, সুমন, বিশ্বজিতসহ একাধিক ব্যক্তি।

ফণি’র প্রভাবে সাতক্ষীরায় (৩ এপ্রিল) বেলা পৌনে ১ টা থেকে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। সাথে বইছে দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়া। সকাল থেকেই ফুসে উঠছে নদীর পানি। ইছামতি, কপোতাক্ষ, খোলপেটুয়াসহ সকল নদ-নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভাটার সময় পানি কম থাকলেও জোয়ারের পানি অনেক বেড়ি বাঁধে উপচে পড়েছে। স্থাণীয়রা জানান, রাতে উপকুলীয় এলাকার নাজুক বেড়ি বাঁধ গুলো ভেঙ্গে যেকোনো সময়ে প্লাবিত হতে পারে বিস্তীর্ণ এলাকা। ক্ষতি হতে পারে কোটি কোটি টাকার সম্পদ।

ঘূর্ণিঝড় ফণি সকালে ভারতের ওড়িশ্যায় ঘন্টায় ২১০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানার পর সেটি এখন বাংলাদেশের পথে। রাত ৮ টা ১২ মিনিটে জেলায় ৭ নং বিপদ সংকেত চলছে এমন তথ্য দিয়ে সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মধ্যরাতে সাতক্ষীরার উপকুলীয় এলাকা অতিক্রম করতে পারে ফণি, যার গতিবেগ থাকবে ঘন্টায় ১০০ কিলোমিটারের কাছাকাছি। সাথে থাকবে ঝড় ও বৃষ্টি।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস, এম মোস্তফা কামাল জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় জেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের আওতাধীন সকল বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। শনিবার স্কুল-কলেজসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ছুটির ঘোষনা দেওয়া হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে জনগণকে সতর্ক রাখতে মাইকিংসহ বিভিন্নভাবে প্রচার প্রচারণা চালানো হয়েছে। এখনো তা অব্যাহত রয়েছে। মাইকিং ও স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে জনসাধারণকে নিরাপদ স্থানে সরে যাবার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। সকাল থেকেই ১৩৭ টি আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষদের নিয়ে আসার কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে হাজার হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে চলে এসেছেন। যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী-শিশু, প্রতিবন্ধি, গর্ভবতী ও বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। তিনি বলেন,পুলিশ, কোস্টগার্ড, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন সম্মিলিতভাবে কাজ করছে। প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্যরা স্থানীয় লোকজনকে নিরাপদে আশ্রয় গ্রহণসহ সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করছেন।

এছাড়া, ১১৬ টি মেডিকেল টিম, ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ সংস্কারসহ শুকনো খাবার মজুদ রাখা হয়েছে। সাড়ে সাত লাখ টাকার ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে। ওষুধের পর্যাপ্ততা নিশ্চিতকরণ করা হয়েছে। ফায়ার ব্রিগেড, এ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সাইক্লোন মোকাবেলায় সাতক্ষীরা কালিগঞ্জে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তিনটি টিম গঠন করা হয়েছে। যাদের সার্চ এন্ড রেসকিউ টিমের কন্ট্রোল রুম নং- ০১৭১৮-২১৮২৫২, মেডিকেল টিম ০১৯১৩-১০৭২৪২ ও ওয়াটার রেসকিউ টিম ০১৭১০-৯০১৩২৪। এছাড়া, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার অফিসে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। নিয়নত্রণ কক্ষের ফোন নম্বর ০৪৭১৬৩২৮১। সকল উপজেলাতেও কন্ট্রলরুম চালু করা হয়েছে।



 

Show all comments
  • কবির হোসেন ৩ মে, ২০১৯, ৯:৪৬ পিএম says : 0
    বাংলাদেশের জন্য ফনি একটি সাধারণ ঝড়। কিন্তু উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এটাকে ফুলিয়ে প্রচার করা হচ্চে। এর উদ্দেশ্য লুটপাট করা। সরকারী মন্ত্রী, এমপি, দলীয় নেতাকর্মীদের মাধ্যমে ত্রাণ তহবিলের টাকা লুটপাট করা।
    Total Reply(0) Reply
  • মনিরুল ইসলাম ৩ মে, ২০১৯, ১০:০৫ পিএম says : 0
    এই বার ঘূর্নিঝড় নিয়ে পরিকল্পিতভাবে আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। উদ্দেশ্য হচ্ছে সরকারি অর্থ লুটে পুটে খাওয়া। এনজিওগুলো এর পেছনে কাজ করছে।
    Total Reply(0) Reply
  • জামিল ৩ মে, ২০১৯, ১০:০৫ পিএম says : 0
    বুঝি না, প্রশাসন সাধারণ জনগণকে সাহস না দিয়ে উলটো ভয়ভীতির মধ্যে রেখেছে। সারাদেশে মোটামুটি একটা আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। জনগণ যাতে প্রশাসনের কাছে সাহায্যের জন্য আসে। আর সেই সুযোগে সরকারি বরাদ্দ লুটেপুটে নেওয়া ছাড়া আর কিছু না।
    Total Reply(0) Reply
  • এস আলম ৩ মে, ২০১৯, ১০:০৬ পিএম says : 0
    হায়রে বাংলাদেশ। সব হুজুগে, এনজিওগুলো প্রশাসনকে ব্যবহার করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে, সবাই তাতে নাচছে। এরকম দুর্যোগ আগেও তো হয়েছে তখন তো এত....। এনজিওগুলো মানবতার সেবা বাদ দিয়ে পেটের সেবা করে।
    Total Reply(0) Reply
  • মেহেদি মাসুদ ৩ মে, ২০১৯, ১০:০৭ পিএম says : 0
    যখনই কোনো ঘুর্ণিঝড় আসে নিয়ম অনুযায়ী সেটা ভারত হয়েিই বাংলাদেশে আসে। এ নিয়ে আতঙ্ক তৈরির তো কোনো মানে হয় না। ভারত হয়ে বাংলাদেশ হয়ে ঝড় তার আপন গতিতে চলে যাবে, । এজন্য প্রশাসন মন্ত্রী এমপিদের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণের নামে বিপুল অর্থ খরচ করে সরকারি অর্থ নষ্টের তো মানে হয় না।
    Total Reply(0) Reply
  • নারগিস ৩ মে, ২০১৯, ১০:০৭ পিএম says : 0
    ঘুর্নিঝড় ফনির অসিলায় সরকারি কোটি কোটি টাকা প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তা ও সরকারি দলের চেলাপেলাদের পকেটস্থ করার পায়তারা করা হচ্ছে, এজন্যই মিডিয়ায় প্রতিমূহুর্তে আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। কিছু এনজিও এর পেছনে কাজ করছে।
    Total Reply(0) Reply
  • আবেদ খান ৩ মে, ২০১৯, ১০:০৭ পিএম says : 0
    এর আগেও ঘুর্নিঝড়ের আতঙ্ক সৃষ্টি করে সরকারের লাখ লাখ টাকা নষ্ট করতে দেখা গেছে। অবশেষে দেখা গেছে সাধারণ ঝড়ের মতোই ঝড় হয়েছে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। মাঝখান থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ লোপাট। শুনছি এনজিও গুলো পুনর্বাসনের জন্য বিপুল অর্থ নেওয়ার পরিকল্পনা করচে।
    Total Reply(0) Reply
  • মিনার মুর্শেদ ৩ মে, ২০১৯, ১০:০৮ পিএম says : 0
    বুঝলাম না, এবার ঘুর্ণিঝড় নিয়ে কেন এত আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। এর আগেইতো বহুবার এই ধরনের ঝড় হয়েছে তাতে তো তেমন ক্ষতি হয় নি। অসাধু মহল সরকারের কাছ থেকে কিছু অর্থ হাতিয়ে নেওয়া ধান্দায় আছে।
    Total Reply(0) Reply
  • জিন্নাতারা ৩ মে, ২০১৯, ১০:০৮ পিএম says : 0
    আমি ইতোমধ্যে উপজেলায় উপজেলায় লাখ লাখ টাকার দুর্যোগ বরাদ্দের টাকা পাঠানো হয়েছে। একটি মহল এই অর্থ হাতিয়ে নিতেই মিডিয়াকে ব্যবহার করে মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। এটা খুবই দু:খজনক।
    Total Reply(0) Reply
  • Shohelislam ৩ মে, ২০১৯, ১০:৪২ পিএম says : 0
    সবাই আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান ঈমান আরো মজবুত করতে হবে,আল্লাহ আমাদের তথা বাংলাদেশের প্রতি রহম করুন আমিন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ