Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নির্বিষ ফণিতে কেটেছে শঙ্কা

বৃষ্টিতে সিক্ত তপ্তভূমি

রেজাউল করিম রাজু | প্রকাশের সময় : ৫ মে, ২০১৯, ১২:০৮ এএম

উত্তরাঞ্চলে স্বস্তি আর শঙ্কার মধ্যদিয়ে শেষ হলো ঘূর্নিঝড় ফণির যাত্রা। ঝড় রাজশাহী ও রংপুরের উপর দিয়ে শেষ হওয়ার বিষয় নিয়ে এ অঞ্চলের মানুষ ছিল উৎকণ্ঠায়। বিশেষ করে মাঠ ভরা ধান আর গাছে গাছে থোকা থোকা আম নিয়ে শঙ্কার মাত্রা ছিল একটু বেশি-ই। ধান গোলায় ওঠার অপেক্ষায় আর আমও ধীরে ধীরে রসালো হয়ে উঠছে।
এদিকে বৈশাখের শুরু থেকে অঞ্চলের আবহাওয়া তেঁতে ওঠে। তাপমাত্রার পারদ চড়ে যায় চল্লিশ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। গরম বাতাসের ঝাপটায় জনজীবন হয়ে পড়ে বিপর্যস্ত। ঘরে বাইরে সর্বত্র ছিল এক অস্বস্তিকর পরিবেশ। মানুষ বৃষ্টির জন্য আল্লাহর রহমতের জন্য নামাজ আদায় করে। এরমধ্যে খবর আসতে থাকে সাগরে ঘূর্ণিঝড় ঘনীভূত হতে যাচ্ছে। এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে প্রত্যাশা ছিল এর প্রভাবে বৃষ্টি হবে। বাঁচবে মানুষ প্রকৃতি আর ফসলের ক্ষেত।
কিন্তু প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণির ছোবল রাজশাহী ও রংপুরের ওপর দিয়ে যাবে এ খবরে শঙ্কায় পড়ে মানুষ । সাধারণ ঘূর্ণিঝড় আর নিম্নচাপের ঝড় ঝাপটা উপক‚লে আঘাত হানে। এবার এ অঞ্চলে এর প্রভাব পড়বে এমন খবরে সর্বত্র ছিল শঙ্কা। ঝড়ের গতিপথ হিসাবে বলা হচ্ছিল ভারতের কলকাতা হতে মুর্শিদাবাদ হয়ে বাংলাদেশে আসবে। আর মুর্শিদাবাদ মানে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাশ্ববর্তী এলাকা। এখান দিয়ে ঝড় গেলে আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের সর্বনাশ হয়ে যাবে। রাজশাহী-চাঁপাইনবাবঞ্জ মিলে বরেন্দ্র অঞ্চলের বিস্তীর্ণ বোরোর পাকা ধানের ক্ষেত ঝড়ের তাণ্ডবে ধ্বংস হয়ে যাবে। এমন সব শঙ্কার মাঝে গত তিনদিনের বদলে যায় এ অঞ্চলের আবহাওয়া। ঝমঝমিয়ে নামে রহমতের বৃষ্টি। সাথে ছিল হাল্কা ধরনের ঝড়ো হাওয়া। বৃষ্টিতে প্রকৃতিতে আসে শীতলতা। তপ্ত আবহাওয়ার জন্য আধা পাকা ধানের ক্ষেতে যে সেচ দেয়া হচ্ছিল তার আর প্রয়োজন হয়নি। এ যেন রহমতের বৃষ্টি।
অন্যাদিকে ঘূর্নিঝড় ফণি গতিপথ বদল করে কলকাতার পাশ দিয়ে মুর্শিদাবাদ না গিয়ে নদীয়া হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে এ অঞ্চলের মানুষ। রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানায়, গত দু’দিনে রাজশাহীতে বৃষ্টিপাত হয়েছে প্রায় সত্তর মিলিমিটার। তাপমাত্রা চল্লিশ থেকে নেমে এসেছে চব্বিশ ডিগ্রী সেলসিয়াসে। বৃষ্টিতে তপ্ত মাটি সিক্ত হয়েছে। প্রকৃতিতে এসেছে সজীবতা। গতকাল শনিবার দুপুর সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত ঝড়ো বাতাস আর বৃষ্টির মধ্যেও উঁকি দিয়েছে দুদিন মুখ লুকিয়ে থাকা সূর্য। ঘরের মধ্যে আটকে পড়া মানুষ বের হচ্ছে। ফাঁকা রাস্তায় যানবাহনও বাড়ছে।
সাধারণ মানুষ শোকরিয়া আদায় করে বলছেন হযরত শাহমখদুম (রহ.) আর শাহনেয়ামতুল্লার পূণ্যভ‚মিকে আল্লাহ রক্ষা করলেন। আসন্ন রমজানের শুরুতেই আবহাওয়া থাকবে সহনীয়। রংপুর থেকে হালিম আনছারি জানান, ঘূর্ণিঝড় ফণির রংপুর আগমন নিয়ে মানুষ ছিল শঙ্কিত। বিশেষ করে ধান আর আম নিয়ে। ঝড়ের তাণ্ডব কেমন হয় এ নিয়ে শঙ্কা ছিল মানুষের মধ্যে। এখন ঝড়ো বাতাস কমে গেলে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফণিতে কেটেছে শঙ্কা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ