পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অল্প ক্ষয়ক্ষতির মধ্য দিয়েই ঘূর্ণিঝড় ফণি চলে গেছে। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফণি নিয়ে ‘আগাম বার্তা’ বিতর্ক চলছেই। ‘সম্পাদনা’ এবং ‘সেল্ফ সেন্সর’ না থাকায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ব্লগ, টুইটারে যা খুশি তাই লেখা হয়।
এর নেতিবাচক ও ইতিবাচক দুই প্রভাবই রয়েছে। তারপরও বিজ্ঞানের অবদান সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কোনো তথ্য ‘খবর’ নয়; কিন্তু ওই মাধ্যমে কিছু কিছু বক্তব্য, মন্তব্য তথ্য মানুষের হৃদয়ে নাড়া দেয়। কিছু কিছু তথ্য মানুষ নিজেদের মতো করে গ্রহণ করে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ লিখেছেন, ফণি নিয়ে যে ‘আগাম বার্তা’ দেয়া হয় তা অতি বাড়াবাড়ি। সিডর ও আইলার চেয়েও কয়েকশ’ মাইল দূরে ফণির উৎপত্তি। ঘূর্ণিঝড় ফণি দীর্ঘ ২৩০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় অতি দুর্বল হবে আবহাওয়া অফিস এই তথ্য দিয়েছে। এটা জানার পরও অহেতুক সাগরপাড়ের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়ে আগাম প্রস্তুতির খবর প্রচার করা হয়।
সাগরপাড়ের হাজার হাজার মানুষকে ‘সেভ জোনে’ নেয়া নিয়ে বাড়াবাড়ি করা হয়। একজন লিখেছেন, সাগরপাড়ে যারা বসবাস করেন তারা পানির গর্জন শুনেই বুঝতে পারেন ঘূর্ণিঝড় ভয়ানক না দুর্বল হবে। কেউ লিখেছেন ফণি নিয়ে টিভি মিডিয়াগুলো যেভাবে প্রচারণা চালাল, তাতে মনে হয় গোটা দেশ লণ্ডভণ্ড হয়ে যাবে।
দর্শকদের টিভি মিডিয়ামুখী করার জন্যই কি তারা ‘ফণি’ নিয়ে অতি প্রচারণার মহাপরিকল্পনা নিয়েছিল? কেউ কেউ লিখেছেন, প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরাও ঘূর্ণিঝড় ফণি মোকাবেলার নামে কোটি কোটি টাকা নয়-ছয় করার সুযোগের জন্যই অতি প্রচারণা চালিয়েছে। আর এনজিওগুলো এতে সরকারকে উৎসাহী করেছে। কারণ, বাংলাদেশের দুর্যোগের বড় খবর বিশ্ব মিডিয়ায় তুলতে পারলেই ডলার-পাউন্ড পাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ। কেউ লিখেছেন, মানুষকে নিরাপদে নিতে আগাম বার্তা দেয়া সরকারের দায়িত্ব; কিন্তু টিভি মিডিয়াগুলো যেভাবে প্রচারণা চালিয়েছে তাতে মনে হয় ঘূর্ণিঝড় ফণি যেন গোটা সমুদ্রকে নিয়ে ১৭ কোটি মানুষের ওপর আছড়ে পড়ছে। একজন লিখেছেন, উড়িষ্যায় ফণি তাণ্ডব চালিয়েছে; তারপর ভারতের মিডিয়াগুলোতে এত বেশি প্রচারণা দেখা যায়নি। যার জন্য জনগণ ভয় পায়নি এবং আইপিএল খেলা যথারীতি হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ফণি ভারতের উড়িষ্যাকে লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। ৩ মে শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে গড়ে ঘণ্টায় ১৪২ কিলোমিটার গতিবেগ নিয়ে ভারতের উড়িষ্যায় আঘাত হানে ফণি। এরপর প্রায় সারাদিন গড়ে ঘণ্টায় ২০০-২৪৫ কিলোমিটার গতিবেগ নিয়ে পুরো রাজ্যজুড়ে তাণ্ডব চালায়। এক সময় কিছুটা দুর্বল হয়ে এগিয়ে আসে পশ্চিবঙ্গের কলকাতার দিকে।
ভারতের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ফণি। তবে উড়িষ্যায় তাণ্ডবের পর কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড়টি। গতকাল ৪ মে ভোররাতে পশ্চিমবঙ্গে ঘণ্টায় ১১৫ কিলোমিটার গতিবেগ নিয়ে আঘাত হানে। তবে বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরায় প্রবেশের সময় সে গতি আরো কমে যাবে।
অতীতের দুর্যোগগুলোর দিকে তাকালে দেখা যায়, ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডর সমুদ্রে প্রায় ১৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলে আছড়ে পড়ে। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ২০০৯ সালে আইলা সমুদ্রে প্রায় ৯০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের উপক‚লে আঘাত হানে। সমুদ্রে কম দূরত্ব অতিক্রম করায় ঘূর্ণিঝড় দু’টিতে ব্যাপক জানমালের ক্ষতি হয়। কিন্তু ফণি সমুদ্রে প্রায় ২ হাজার ও ভূমিতে ৩০০ মোট ২৩০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
দূরত্ব বেশি হওয়ায় এমনিতেই এটা বাংলাদেশে প্রবেশের সময় দুর্বল হয়ে পড়ে। এ তথ্য আবহাওয়াবিদরা এবং বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর দিচ্ছিল। বিশ্বের আবহাওয়া বিষয়ক কয়েকটি সংস্থার পর্যবেক্ষণ এবং আবহাওয়াবিদদের এ ধরনের ‘অভয়বাণী’র পরও ‘অতি প্রচারণা’ নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। সে কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে এ নিয়ে চলছে তুমুল বিতর্ক।
কেউ লিখেছেন, ৪ মাসে সরকারের কোনো অর্জন নেই; জনগণের সঙ্গেও সম্পৃক্ততা নেই। সেজন্যই সরকার জনগণকে কর্ম দেখাতেই ফণি নিয়ে ‘আগাম বার্তা’র অতি প্রচারণা চালানো হয়। আর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভ‚মিকার কারণে অধিকাংশ টিভি মিডিয়ার প্রতি মানুষের আস্থা নেই। বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান নেই আবার টকশোও দর্শকরা দেখেন না। সেজন্যই কিছু মিডিয়া ঘূর্ণিঝড় ফণি নিয়ে অতি প্রচারণা করে দর্শক আকৃষ্ট করে তোলার চেষ্টা করছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এসব বিতর্ক কত দিন চলে কে জানে?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।