রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
বান্দরবান পার্বত্য জেলার লামার দুর্গম পাহাড়ি এলাকার সরই ইউনিয়নের লেমুপালং সরকারি প্রাইমারী স্কুলে প্রধান শিক্ষক আসেন ৩/৪ মাসে একবার। সহকারি শিক্ষক সপ্তাহে ১/২ দিন আসলেও স্কুলে থাকেন ১ ঘন্টা। সরেজমিনে গত ৭ জানুয়ারি সকাল ১১ টায় স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে এমন তথ্যই জানা গেল। শিক্ষক না থাকায় ৭ জন শিক্ষার্থী বই খাতা রেখে স্কুল মাঠে খেলা করছিল। স্কুলের অফিস বন্ধ থাকলেও ২ টি ক্লাসরুম ছিল খোলা। শিক্ষার্থীরা জানান, সকালে ক্লাসরুম খুলে দিয়ে একজন স্যার চলে গিয়েছেন। ঘন্টা দেড়েক অপেক্ষা করেও কোন শিক্ষক আর আসেননি। এ সময় ৪র্থ শ্রেনীর শিক্ষার্থী কাইসং মুরং এর সাথে কথা বললে সে জানায় তাদের প্রধান শিক্ষকের নাম ইছহাক। প্রথম শ্রেনী থেকে এ পর্যন্ত প্রধান শিক্ষককে সে ৭/৮ বার স্কুলে দেখেছে বলে জানায়। তৃতীয় শ্রেনীর শিক্ষার্থী জোংরাও মুরং, ধনরু মুরং, মাংসং মুরং ও ২য় শ্রেনীর পাড্ডী মুরং এর কাছে তাদের শিক্ষকের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তারা বলে তারা রুইতন স্যারকে ছিনে। তারা বলে তাদের স্কুলে প্রায়ই স্যারেরা অনুপস্থিত থাকে। স্কুলে আসলেও ঘন্টাখানেক থাকে। তারা আরো জানায় তাদের প্রধান শিক্ষক ইছহাক এর নাম শুনেছে। তারা প্রধান শিক্ষককে এ পর্যন্ত ২/৩ বার স্কুলে দেখেছেন বলে জানায়। স্থানীয় নিয়র মুরং এর সাথে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে সে বলে শিক্ষকরা স্কুলে এসে এই আধ ঘন্টা বা এক ঘন্টা ক্লাস করায়। তারপর চলে যায়। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তাদের স্কুলটা অবহেলায় পড়ে আছে। তিনি আরো বলেন প্রধান শিক্ষক ইছহাক স্কুলে না এসে মাসে মাসে বেতন খায়।
ওই এলাকার সাবেক ইউপি মেম্বার কিরওয়ান মুরং জানান, আমাদের এখানকার ১১টি গ্রামের প্রায় ২ শতাধিক শিশু এই স্কুলে পড়ার কথা। কিন্তু শিক্ষকের অনুপস্থিতির কারনে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০ জনের মত হতে পারে। শিক্ষার্থীরা দিনের পর দিন স্কুলে এসেও তাদের স্যারের দেখা না পেয়ে আর স্কুলে আসতে চায় না। স্থানীয়রা বলেন, মোহাম্মদ ইছহাক নিজেতো স্কুলে আসেন না তারউপর বিগত ৬ বছর আগে সিরাজদৌল্লাহ নামের এক শিক্ষক নিয়োগ পেয়ে নিয়মিত স্কুলে ক্লাস করার অপরাধে পথে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছিল প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ইছহাক। এ ঘটনায় শিক্ষক সিরাজদৌল্লাহ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন মহলে বিচার চাইতে গিয়ে উল্টো নাজেহাল হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ইছহাক লামা উপজেলার পাশ^বর্তী লোহাগাড়া উপজেলার কলাউজান ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি। রাজনীতির পাশাপাশি এলাকায় তিনি বিভিন্ন ব্যবসায় জড়িত রয়েছেন। প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ইছহাকের সাথে মোবাইলে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন,বার্ষিক পরীক্ষা দিয়ে শেষ করলাম সমাপনী কারনে যাওয়া হয়নি ২/১ দিন যাওয়া হয়নি আরকি। নিয়মিত অনুপস্থিতির ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, মানুষের কথা সব শুনতে পারব নাকি মানুষেতো মনের ইচ্ছেমত কথা বলে। মানুষকি সব ঠিক আছেনে আপনি কি বুঝেন না এসব। আমিতো ওই স্কুলের প্রতিষ্টাতা। এতদিন স্কুলটা ধরে রাখছিলাম। এখন এদিকে কাছে চলে আসব। তিনি বলেন, দুর্গম এলাকা তাই এদিক ওদিক হয় , ওখানে যেতে দেরী আসতে দেরী হয়।
স্কুলে শিক্ষক অনুপস্থিতির ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তপন কুমার চৌধুরীর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে স্থানীয় স্কুল কমিটি বা অন্য কেউ এ পর্যন্ত আমাকে অভিযোগ করেনি। তিনি আরো বলেন, ওই স্কুলের ব্যপারে আমাকে কেউ ম্যানেজ করেনি। তিনি শিক্ষকের অনুপস্থিতির বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন বলে জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।