Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বান্দরবান সীমান্তে থামছে না মিয়ানমারের আগ্রাসী আচরণ

মিয়ানমার রাষ্ট্রদূতকে পুনরায় তলব করে প্রতিবাদ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের, ৩০০ পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার চিন্তা প্রশাসনের

মো. সাদাত উল্লাহ, বান্দরবান থেকে | প্রকাশের সময় : ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

বান্দরবান সীমান্তে মিয়ানমারের আগ্রাসী আচরণ থামছে না। সকাল থেকে থেকে থেমে গুলি ছোড়া হয়েছে তুমব্রু সীমান্ত এলাকায়। চরম আতঙ্কে দিন পার করছেন সাধারণ মানুষ। শিশুদের অবস্থা আরো নাজুক। পরিস্থিতি থমথমে। মিয়ানমার রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে চতুর্থবার তলব করে কড়া প্রতিবাদ করছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এদিকে নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তের ৩০০ পরিবারকে সরিয়ে নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে প্রশাসন। সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া সংলগ্ন তুমব্রু, ঘুনধুম, হেডম্যান পাড়া, ফাত্রা ঝিড়ি, রেজু আমতলী এলাকায় বসবাসকারি পরিবারের প্রায় দেড় হাজার লোককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া যায় কিনা তা নিয়ে পর্যালোচনা চলছে।

ঘুমধুম ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানিয়েছেন, গতকাল রোববার প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে বৈঠকে জানানো হয়, ঘুমধুম ইউনিয়নে কোন আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় পরিবারগুলোকে সরিয়ে নেয়ার বিষয়টি কঠিন হয়ে যাবে। এছাড়া স্কুলগুলোতেও থাকার কোন পরিবেশ নেই। এ পর্যায়ে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়।

তুমব্রু জিরো লাইনে থাকা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝি (সরদার) দিল মোহাম্মদ জানিয়েছেন, গত শুক্রবার রাতে গোলার আঘাতে ক্যাম্পের এক রোহিঙ্গা যুবক মারা যাওয়ার পর সেখানে থাকা পরিবারগুলো আতঙ্ক উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে। নতুন করে আবার আক্রমণের শিকার হতে পারে এ আতঙ্কে রাতের বেলা অনেকেই নিরাপদ জায়গায় সরে যাচ্ছে।

অপর দিকে, সীমান্ত এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের সদস্য সংখ্যা ও টহল বাড়ানো হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারি লোকজনদের ছাড়া বহিরাগত লোকজনদের সীমান্ত এলাকায় যাতায়াত করতে দিচ্ছে না। সীমান্ত পরিস্থিতি উত্তপ্তের কারণে কাঁটাতার সংলগ্ন জমি ও পাহাড়ে কৃষকরাও ভয়ে যেতে পারছেন না। চাষ করা জমিগুলোতে পরিচর্যা করতে পারছেন না কৃষকরা। গত এক মাস ধরে সীমান্ত পরিস্থিতির কারণে সেখানকার কৃষক ও জুম চাষিরা দুর্ভোগে পড়েছেন।

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি জানিয়েছেন, সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি একটি কোর কমিটির বৈঠক করা হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সীমান্তে বসবাসকারি লোকজনদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এর আগে শুক্রবার রাতে মিয়ানমারের পাহাড় থেকে ছোড়া মর্টারের একাধিক গোলা রাখাইনের ওয়ালিডং পাহাড়ের পাদদেশের শূন্যরেখায় এসে পড়ে। এতে প্রাণ হারান মো. ইকবাল নামের এক কিশোর। আহত হয় ছয়জন। একইদিন বিকাল ৩টায় তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে শূন্যরেখার ৩৫ নম্বর পিলারের কাছাকাছি জায়গায় গরু আনতে গেলে স্থলমাইন বিস্ফোরণে অথোয়াইং তঞ্চঙ্গ্যা নামের বাংলাদেশি এক তরুণের বা পায়ের গোড়ালি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বান্দরবান সীমান্তে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ