নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
গত বছর ঠিক এই সময় শ্রীলঙ্কা সফরে একটি সিরিজও হারেনি বাংলাদেশ। ওয়ানডে, টেস্টের পর টি-২০ সিরিজও সমতায় এনে সফল এক সফর শেষে দেশে ফিরেছিল মাশরাফি। ঠিক এক বছর পর প্রেক্ষাপটে কত পরিবর্তন! যে দলটির জিম্বাবুয়ের কাছে হলো ধরাশায়ী সেই লঙ্কানদের কাছে দেশের মাটিতে তিন সংস্করণেই হারের তিক্ত অভিজ্ঞতা সঙ্গী বাংলাদেশের। বছর ঘুরে আবারও শ্রীলঙ্কা সফর। এবার আসরটা আমন্ত্রণমূলক নিদাহাস ট্রফি হওয়ায় ত্রিদেশীয়। আজ বাংলাদেশের প্রথম লড়াইটা ভারতের বিপক্ষে। লড়াইয়ের বারুদে গন্ধ আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে ঠিকই পাওয়া গেল তার উত্তাপ।
একদিকে প্রস্তুতি ম্যাচে জয়। মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ, লিটনদের ব্যাটে রান; তাসকিন, মুস্তাফিজরা ফিরেছেন বল হাতে ছন্দে। সেই সঙ্গে নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার কাছে ধরাশায়ী ভারত। আজ বাংলাদেশের প্রথম প্রতিপক্ষ এই ‘আহত’ ভারতই। মাহমুদউল্লাহর দলের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নিতে আরেকটি তথ্য জুড়ে দেয়া যাক। কলম্বোর এই মাঠেই নিজেদের সর্বশেষ ম্যাচে জয় পেয়েছিলো টাইগাররা। গত বছর শ্রীলঙ্কা সফরে সিরিজের শেষ টি-২০তে ৪৫ রানের জয় দিয়ে সিরিজ সমতায় শেষ করে বাংলাদেশ। যে ম্যাচ দিয়েই টি-২০ ক্রিকেটে ইতি ঘটে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার।
নিদাহাস ট্রফিতে তিন দল প্রায় একই সমান্তরালে। ইনজুরি আর বিশ্রামের কারণে দল চলছে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কে, দলে সিনিয়র ক্রিকেটারের অভাব। কোহলি-ধোনিদের রেখে দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে শ্রীলঙ্কায় নিদাহাস ট্রফি খেলতে গেছে ভারত। ফলাফল প্রথম ম্যাচেই স্বাগতিকদের হাতে কুপোকাত! আজ বাংলাদেশের সামনেও সুযোগ অহত এই দলটিকে কোনঠাসা করে একটি জয় দিয়ে নিজেদের হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবার, ‘ দলটা ভারত। সবেই দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে জয়ের অভ্যাস নিয়ে ফিরেছে তারা। এখানে এসেই ছন্দপতন। আমরা সেই সুযোগটাই কাজে লাগাতে চাই।’ তাই বলে কাজটা যে সহজ হবে না সেটিও ভালোই জানা মাহমুদউল্লাহর, আমাদের জন্য কাজটা সহজ হবে না। দলের সেরা তারকা সাকিব নেই। তাই দলকে ভালো ফল এনে দেয়ার জন্য সিনিয়রদের কাঁধেই থাকবে দায়িত্ব।’ প্রতিপক্ষ ভারতের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা মাহমুদউল্লাহর। আর সেটি হওয়াটাই স্বাভাবিক। নিদাহাস ট্রফির প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে ৫ উইকেটে হেরে গেলেও ভারতকে এগিয়ে রাখছেন তিনি। বিরাট কোহলি-মহেন্দ্র সিং ধোনি কিংবা ভুবনেশ্বর কুমাররা শ্রীলঙ্কায় না এলেও ভারতে যে ‘অভিজ্ঞ’ ক্রিকেটারের অভাব নেই, সেটিও জানিয়ে রাখলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘ওদের অনেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার এই সফরে আসেনি। তবুও এদের যে দলটা এসেছে, আমার মনে হয় টি-টোয়েন্টিতে ওরা অনেক বেশি অভিজ্ঞ। ওরা অনেক বেশি আইপিএল খেলেছে। আমার তো মনে হয় আমরা যে ভালো খেলতে পারি, এটা নিয়েই ভাবা উচিত। এর বাইরে কিছু ভাবা ঠিক হবে না।’
অন্য কিছু না ভাবতে চাইলেও ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচের আগে একটি ভাবনা কিন্তু বারবারই চলে আসছে। দুই বছর আগে সর্বশেষ ভারতের বিপক্ষে যে টি-টোয়েন্টি ম্যাচটা খেলেছে, সেটিতে বাংলাদেশের হারটা ছিল খুবই পীড়াদায়ক, মন ভেঙে দেওয়ার। বেঙ্গালুরুতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে বাংলাদেশ যে হেরে গিয়েছিল ১ রানে। সে ম্যাচের শেষ ওভারে ৩ বলে ২ রান দরকার থাকলেও বাংলাদেশ সেটা করতে পারেনি। ঘটনাবহুল সেই ওভারটিতে পরপর দুই বলে ফিরেছিলেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ। সেই ম্যাচের পর ভারতের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি এটিই। সেদিন আউট হয়ে ড্রেসিং রুমে ফেরার পথে হতাশায় নুয়ে পড়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। আজ তিনি দলের অধিনায়ক। সেই যন্ত্রণাময় স্মৃতির দুয়ারে টোকা পড়ল সংবাদ সম্মেলনের একটি প্রশ্নে। মাহমুদউল্লাহ অতীতে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারটিকে খুব স্বাগত জানালেন না। কণ্ঠে খানিকটা বিরক্তি নিয়েই জানলেন ভাবনা, ‘বেঙ্গালুরুর ম্যাচ বেঙ্গালুরুতেই শেষ। ওখানেই শেষ, ওখানেই থমকে আছে। ক্রিকেটে দুর্ঘটনা হতেই পারে। ওটা নিয়ে বসে থাকলে চলবে না। তবে ওখান থেকে শেখাটা জরুরি। শিখতে পারলে কাজে দেবে।’
তার আগে আরেকটি সমস্যা মিটিয়ে মাঠের লড়াইয়ে মনোনিবেশ করতে হবে বাংলাদেশকে। সে প্রশ্নটি প্রতিটি সিরিজের আগে বাংলাদেশ দল নিয়ে একটি প্রশ্নের মাথাচাড়া দেওয়া অবধারিত। সেই প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে এবারও, তিন নম্বরে ব্যাট করবেন কে? আপাতত বিবেচনায় আছেন তিন জন। তবে অধিনায়ক মাহমুদউল্লার কথায় ইঙ্গিত, তিনে ব্যাট করার দৌড়ে এগিয়ে লিটন কুমার দাস। প্রস্তুতি ম্যাচে লিটন অবশ্য ব্যাট করেছেন ওপেনিংয়ে। তামিম ইকবাল ছিলেন বিশ্রামে। মূল ম্যাচে তামিমের সঙ্গে সৌম্য সরকারের ওপেন করাটা একরকম নিশ্চিতই। সেক্ষেত্রে লিটনকে খেলানো হতে পারে তিনে। ম্যাচের আগের দিন কৌশলগত কারণেই হয়ত পুরোটা খোলাসা করতে চাইলেন না মাহমুদউল্লাহ। তবে সাব্বিরের প্রতি সমর্থন জানিয়েও ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন লিটনের দিকে, ‘তিন নম্বর নিয়ে অনেক দিন ধরেই আমাদের বিবেচনা দোদুল্যমান আছে। সাব্বির তিনে ভালো করছিল টি-টোয়েন্টিতে। তবে সা¤প্রতিক সময়ে ভালো করতে পারেনি। এটা যে কোনো ব্যাটসম্যানেরই এই সময় যায়। আমরা ওর পাশেই আছি। মুশফিক খেলেছে আগের সিরিজে। কালকেই (আজ) দেখতে পাবেন কাকে তিনে খেলাই। কারণ লিটনও খুব ভালো ফর্মে আছে। প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো করেছে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।