Inqilab Logo

শনিবার, ০৮ জুন ২০২৪, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বিশ্ব অর্থনীতি তিন শতাংশ হারে বাড়বে জাতিসংঘ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চলতি ২০১৭ সালে বিশ্ব অর্থনীতি তিন শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। আগামী দুটি বছর অর্থাৎ ২০১৮ ও ২০১৯ সালেও এ উৎসাহব্যঞ্জক ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। গত সোমবার সংস্থাটির নিউইয়র্কে অবস্থিত সদর দপ্তরে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক প্রসপেক্টস প্রতিবেদনে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেছে সংস্থাটি। সিনহুয়া সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
চলতি বছর বিশ্ব অর্থনীতি ২০১১ সালের পর সবচেয়ে শক্তিশালী গতিতে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। ইউএন ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক সিচুয়েশন অ্যান্ড প্রসপেক্টস প্রতিবেদন ২০১৮তে বলা হয়, আগামী দুই বছরেও এ হার তিন শতাংশ হারে স্থিতিশীলভাবে বৃদ্ধি পাবে।
বৈশ্বিক অর্থনীতির এ উন্নয়ন হচ্ছে বিস্তৃত পরিসরে। চলতি বছর বিশ্বের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ দেশ এর আগের বছরের তুলনায় অধিক শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি উপভোগ করছে। সাম্প্রতিক এ উন্নয়নের পিছনে মূল ভূমিকা রেখেছে কিছু উন্নত অর্থনীতির শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি, তবে পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো এখনো বিশ্বের সবচেয়ে গতিশীল এলাকা হিসেবে অক্ষুণœ আছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির অর্ধেকই অবদান রেখেছে পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়া, বিশেষত চীন একাই এতে এক-তৃতীয়াংশ অবদান রেখেছে। আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, নাইজেরিয়া ও রাশিয়ার মতো দেশগুলোর মন্দাযুগের অবসানও বৈশ্বিক অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করেছে। এছাড়া বৈশ্বিক বাণিজ্যের ভালো অবস্থা ও বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নয়ন এতে ভূমিকা রেখেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- এ মুহূর্তের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, প্রবৃদ্ধির এ ধারাকে উৎপাদনমুখী বিনিয়োগের স্থিতিশীল ত্বরণের দিকে ধাবিত করা, যাতে সেটি মধ্য মেয়াদের সম্ভাবনাকে সহায়তা করতে পারে। বৈশ্বিক অর্থনীতির এ সাফল্য দেশগুলোকে দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন ইস্যু যেমন জলবায়ু পরিবর্তন, বর্তমানের অসাম্য ও উন্নয়নের পথে বিদ্যমান বাধাগুলোর দিকে নজর দেয়ার সুযোগ এনে দিয়েছে।
প্রতিবেদনটির মুখবন্ধে জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল এস্তোনিও গুতেরেস বলেন, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক সিচুয়েশন অ্যান্ড প্রসপেক্টস প্রতিবেদন দেখাচ্ছে যে- বর্তমান সামষ্টিক অর্থনীতির পরিস্থিতি নীতিনির্ধারকদের গুরুত্বপূর্ণ কিছু ইস্যু মোকাবেলার বিস্তৃত সুযোগ এনে দিয়েছে, যেগুলো ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। প্রতিবেদনটি প্রকাশের আগে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ফর ইকোনমিক অ্যান্ড সোস্যাল অ্যাফেয়ারস লিউ জেনমিন বলেন, যদিও বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির ঘুরে দাঁড়ানো স্বাস্থ্যকর অর্থনীতির জন্য একটি স্বাগত সংকেত। তবে মনে রাখা জরুরি যে, এটি অর্জনে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। স্বল্পমেয়াদে উন্নতি হলেও বৈশ্বিক উন্নতি অব্যাহতভাবে কিছু ঝুঁকির মোকাবেলা করছে। যার মধ্যে আছে বাণিজ্যনীতির পরিবর্তন, বৈশ্বিক আর্থিক অবস্থায় আকস্মিক পরিবর্তন ও ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি। এছাড়া বিশ্ব অর্থনীতি কিছু দীর্ঘমেয়াদি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। প্রতিবেদনটিতে চারটি ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়, যেখানে উন্নত সামষ্টিক অর্থনীতির পরিস্থিতি ওই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় নীতিমালাগত পথ সুগম করবে। এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছে- অর্থনৈতিক বৈচিত্র্য বৃদ্ধি, অসাম্য কমিয়ে আনা, দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগকে সমর্থন করা এবং প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা মোকাবেলা করা।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, নীতির পরিবর্তনের মাধ্যমে এসব চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করলে আরো শক্তিশালী বিনিয়োগ ও উৎপাদনশীলতা, আরো কর্মসংস্থান এবং আরো টেকসই মধ্যমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব। তবে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক অবস্থার সাম্প্রতিক উন্নয়ন বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে অসমভাবে বণ্টিত হয়েছে। আফ্রিকার কিছু অংশ, পশ্চিম এশিয়া, লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে গড় আয় প্রায় বৃদ্ধি পাবে না বললেই চলে। এসব অঞ্চলে প্রায় ২৭ কোটি ৫০ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যের মাঝে বসবাস করে। ফলে এসব অঞ্চলে এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা জরুরি, যাতে মধ্যমেয়াদি প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা গতিশীল হয় এবং উপার্জন ও সুযোগের অসাম্য দূর করা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অল্পকিছু উন্নয়নশীল দেশই ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে, যেখানে নিকট মেয়াদে অন্তত সাত শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রয়োজন হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতিসংঘ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ