নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : জেএফএ অনূর্ধ্ব-১৪ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের হ্যাটট্রিক শিরোপা জয় করলো ময়মনসিংহ জেলা। টুর্নামেন্টের ফাইনালে তারা ঠাকুরগাঁওকে হারিয়ে এ যোগ্যতা অর্জন করলো। গতকাল বিকালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ময়মনসিংহ ৩-০ গোলে ঠাকুরগাঁওকে হারিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো শিরোপা ঘরে তুললো। চ্যাম্পিয়ন দলের হয়ে রোজিনা আক্তার দু’টি এবং শামসুন্নাহার একটি গোল করেন।
দেশের নারী ফুটবলে এখন ময়মনসিংহের কলসিন্দুর গ্রামের মেয়েদের একক আধিপত্য। ফুটবলে এই জেলাকে একের পর এক সাফল্য এনে দিচ্ছে এ গ্রামের মেয়েরাই। সাফল্যের ধারাবাহিকতায় থেকে জেএফএ অনূর্ধ্ব-১৪ চ্যাম্পিয়নশিপে সেরা হয়ে আরও একটি ট্রফি ঘরে তুললো সেই কলসিন্দুরের মেয়েরা।
চ্যাম্পিয়ন ময়মনসিংহের কৃতি ফুটবলার রোজিনা আক্তার, শামসুন্নাহার, ইতি আক্তার, সীতা ভাস্কুর, পূর্নিমা ভাস্কুর ও জ্যোৎ¯œা- জেএসসি পরীক্ষার কারণে ফাইনালে খেলা নিয়ে শংকায় ছিলেন। তাই পূর্ণ শক্তির দল না পেয়ে আগের দিন হতাশায় ছিলেন অধিনায়ক ইয়াসমিন আক্তার। তবে দলের শক্তিকে পূর্ণতা দিতে বৃহস্পতিবার রাতেই ঢাকায় আসেন এই ছয় ফুটবলার। আর তাই ফাইনালে পূর্ণ শক্তির দল নিয়েই ঠাকুরগাঁওয়ের বিপক্ষে মাঠে নামে ময়মনসিংহ। আক্রমণাতœক ফুটবল খেলে একের পর এক গোল আদায় করে নেয় তারা। শেষ পর্যন্ত সহজ জয়ে হ্যাটট্রিক শিরোপা নিয়েই মাঠ ছাড়ে দলটি। টুর্নামেন্টের সেরা গোলরক্ষক নির্বাচিত হন ঠাকুরগাঁওয়ের সাগরিকা। সেরা ডিফেন্ডারের পুরস্কার পান ময়মনসিংহের তানিয়া। সেরা মিডফিল্ডার ঠাকুরগাঁওয়ের সহ-অধিনায়ক বিথিকা কিসকু, সর্বোচ্চ গোলদাতা ময়মনসিংহের রোজিনা আক্তার (১৪ গোল) ও সেরা স্ট্রাইকার নির্বাচিত হন একই দলের সালমা খাতুন। এবং ফেয়ার প্লে ট্রফি লাভ করে সেমিফাইনালিস্ট টাঙ্গাইল জেলা দল।
চ্যাম্পিয়ন ময়মনসিংহকে দেয়া হয় ৫০ হাজার টাকা প্রাইজমনি। রানার্সআপ ঠাকুরগাঁও পায় ২৫ হাজার টাকা। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় ও সর্বোচ্চ গোলদাতাকে ৫ হাজার টাকা করে দেয়া হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে পুরস্কার বিতরণ করেন ধর্মমন্ত্রী আলহাজ্ব অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, এমপি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও মহিলা উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ ও টুর্নামেন্টের পাওয়ার স্পন্সর ওয়ালটন গ্রæপের অপারেটিভ ডিরেক্টর ( হেড অব স্পোর্টস এন্ড ওয়েলফেয়ার) এফএম ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন)।
ফাইনাল শেষে ময়মনসিংয়ের স্ট্রাইকার, যিনি টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা রোজিনা আক্তার বলেন,‘আমি স্ট্রাইকার। কিন্তু আমাকে কেউ মেসি বলে ডাকেন না। সবাই মিডফিল্ডার শামসুন্নাহারকেই মেসি বলে ডাকেন।’ এ কারণে কিছুটা হতাশ হলেও রোজিনা এবারের আসরে তিনি ম্যাচে ১৪টি গোল করেছেন। দু’ম্যাচে ছয়টি করে বাকিটিতে দু’টি। কলসিন্দুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেনীর এই ছাত্রী আরও বলেন, ‘আজ (কাল) মাঠে নামার আগে কোচ সালাহউদ্দিন আমাদেরকে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি জিততে বলেছিলেন। সতীর্থ সাবিনা খাতুনের (এখন মৃত) সম্মান ধরে রাখতে বলেছিলেন। আমরা জিতেছি। সাবিনার সম্মান জিতেছি।’ এত গোলের রহস্য কি? জানতে চাইলে রোজিনার সহজ উত্তর, ‘আমিতো স্ট্রাইকার। পায়ে বল আসলেই শট করি। গোল হয়ে যায়।’
দলের এমন জয়ে কিন্তু খুশী নন ময়মনসিংহের কোচ সালাহউদ্দিন। ট্রফি জিতে তিনি বলেন, ‘আমাদের ৫-০ গোলে জেতা উচিত ছিল। কিন্তু মেয়েরা রাতে জার্নি করে বিকালে মাঠে নেমেছে অনেক কষ্টে। তাদের পায়ে ব্যাথা ছিল। তাইতো আমি রাতে আসা ছয়জনকে তিনজন করে দু’অর্ধে নামিয়েছি।’ সালাউদ্দিন আরও বলেন, ‘শেরপুরে খেলার সময় আমরা সাবিনাকে হারিয়েছি। তাই তাকেই শিরোপা উৎসর্গ করলাম। কাল (আজ) ময়মনসিংহে যাবো। সেখানে গিয়েই সাবিনার কবর জিয়ারতের সময়ক্ষণ ঠিক করবো।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।