নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ওয়ালটন ১৯তম জাতীয় ক্রিকেট লিগের উদ্বোধনী দিনটা বিশেষ হয়ে থাকল দুটি নামের কারণেÑ মোহাম্মাদ আশরাফুল ও মাশরাফি বিন মর্তুজা।
তর্কাতীতভাবে এই দুজন হলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকা। এবারের লিগের প্রথম দিনটা আশরাফুল রাঙিয়ে রাখলেন সেঞ্চুরির মাধ্যমে। ঘরোয়া ক্রিকেট মৌসুমের প্রথম সেঞ্চুরিটিও এলো তার ব্যাট থেকে। দৃষ্টিটা আরেকটু বড় করলে ধরা পড়বে সাদা পোষাক আর লাল বল হাতে মাশরাফির ফেরাটা। তিন বছর পর সাদা পোষাকে ফিরলেন বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক। বলা অপেক্ষা রাখে না যে, এবারের লিগটাই রাঙিন হয়ে উঠলো মাশরফির কারণে। তবে হিসাবটা কেবল ২২ গজ কেন্দ্রিক হলে উঠে আসবে আরো দুটি নামÑ নাঈম ইসলাম ও ধীমান ঘোষ।
একদিনের ক্রিকেটে ক্যারিয়ারটা দীর্ঘ করতেই শ্রেণির ক্রিকেট থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখেছিলেন মাশরাফি। জাতীয় দলের হয়ে সবশেষ টেস্ট খেলেছেন ২০০৯ সালে। ওই টেস্টের তৃতীয় দিনে ইনজুরিতে পড়ার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা হয়নি তার। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে ইসলামী ব্যাংক ইষ্ট জোনের হয়ে দুটি ম্যাচ খেলেন। পরের বছর জাতীয় লিগে খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় আর মাঠে নামার সুযোগ হয়নি।
এদিন অবশ্য বলার মত তেমন কিছু করতে পারেননি ম্যাশ। খুলনার আবু নাসের স্টেডিয়ামে তার দল খুলনা বিভাগও নেই সন্তষজনক অবস্থানে। খুলনার বিপক্ষে প্রথম দিন শেষে ৬ উইকেটে ৩২৫ রান করেছে রংপুর বিভাগ। অধীনায়ক নাঈম অপরাজিত আছেন ব্যক্তিগত ১২০ রানে। শতক হাঁকিয়েছেন ধীমান ঘোষও। এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানের আউট হওয়ার সাথে সাথে দিনের খেলারও ইতি টানা হয় ৮৭.৩ ওভারে।
১৭৭ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর দুই সেঞ্চুরিয়ান মিলে ষষ্ঠ উইকেটে গড়েন ১৪৮ রানের জুটি। ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট করেন ধীমান। ১১৭ বলে ১৪ চার ও ১ ছক্কায় ১০৫ রান করে আব্দুর রাজ্জাকের বলে উইকেটের পিছনে নুরুল ইসলামকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। নাঈম ২২৫ বলে অপরাজিত ১২০ রানের ইনিংসটি সাজান ৯ চার ও ১ ছক্কায়।
এরও আগে ৯৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে রংপুর। সেখান থেকে সায়মন আহমেদকে নিয়ে ৮৩ রানের জুটিতে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেন নাঈম। অর্ধশতক স্পর্শ করেই রাজ্জাকের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান সায়মন। ৮৭ রানে রাজ্জাক নেন ৩ উইকেট। অবশ্য ৫০ রানে ৩ উইকেট নিয়ে টপঅর্ডার ধ্বসে আসল ভুমিকা রাখেন আল-আমিন হোসেন।
তবে নাঈম বা ধীমান নয়, জাতীয় লিগের প্রথম দিনটি হয়ে থাকলো আশরাফুলেরই। চার বছর পর প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেটে সেঞ্চুরির দেখা পেলেন আশরাফুল। বিপিএলে স্পট ফিক্সিং কান্ডে জড়িয়ে দীর্ঘ দিন ছিলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পাশাপাশি ঘরোয়া ক্রিকেটেরও বাইরে। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে গত বছর জাতীয় ক্রিকেট লিগ দিয়ে মাঠে ফেরেন তিনি। ঢাকা মেট্রোর হয়ে অবশ্য ভালো করতে পারেননি। ৫ ম্যাচে ৬ ইনিংসে ২০.৫০ গড়ে মোট ১২৩ রান করেছিলেন। তবে এবার যে তিনি নতুন লক্ষ্য নিয়ে মৌসুম শুরু করতে যাচ্ছেন তার ইঙ্গিত মিললো প্রথম দিনেই।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে স্বাগতিক চট্টগ্রাম বিভাগের বিপক্ষে ঢাকা মেট্রোর হয়ে ১০৪ রানের ইনিংস খেলেন আশরাফুল। এর আগে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আশরাফুলের সর্বশেষ সেঞ্চুরিটি এসেছিল ২০১৩ সালে। বাংলাদেশের হয়ে শ্রীলঙ্কা সফরে গল টেস্টে ১৯০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। হিসাবটা কেবল জাতীয় ক্রিকেট লিগের হলে শতকের দেখা পেলন ছয় বছর পর। ২০১১ সালে ঢাকা মেট্রোর হয়ে সিলেটে চট্টগ্রামে করেছিলেন ১১৯ রান। সব মিলিয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৯তম সেঞ্চুরির স্বাদ পেলেন টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেকে সবচেয়ে কম বয়সে সেঞ্চুরির রেকর্ডধারী আশরাফুল।
১১৬ বলে হাফ সেঞ্চুরির পর তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন ১৭৮ বলে। সেঞ্চুরি উদযাপনে কোন বাড়াবাড়ি ছিল না। ড্রেসিং রুমে ব্যাট দেখিয়ে সতীর্থদের অভিনন্দনের জবাব দেন মাত্র। সেঞ্চুরির পর অবশ্য ইনিংসটিকে বড় করতে পারেননি। স্কোরবোর্ডে আর মাত্র ৪ রান যোগ করেই তরুণ বোলার মেহেদী হাসান রানার আউট সুইং ডেলিভারীতে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন আশরাফুল। ১৯৪ বলে ১২ চার ও ২ ছক্কায় ১০৪ রানের ইনিংসটি সাজান তিনি। এর আগে ৭৪ রানে শীর্ষ চার ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বিপাকে পড়া দলকে আলোর পথ দেয়ায় তার ইনিংটি। এসময় মেহরাব হোসেন জুনিয়রকে নিয়ে গড়েন ১৭৪ রানের জুটি। ২১০ বলের ধৈর্যশীল ইনিংস খেলে ৬৫ রানে অপরাজিত আছেন মেহরব জুনিয়র। দিন শেষে তদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২৫৭।
বাকি দুই ম্যাচে ছিল প্রকৃতির হানা। রাজশাহীতে ৫৬.২ ওভার খেলা মাঠে গড়ালেও বাজে আউটফিল্ডের কারণে টসই হয়নি কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হতে যাওয়া ঢাকা বিভাগ ও বরিশাল বিভাগের মধ্যকার ম্যাচে। রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে টস জিতে সিলেট বিভাগকে ব্যাটে পাঁঠায় স্বাগতিক রাজশাহী। ফরহাদ রেজা, সাকলাইন সজীব ও মুক্তার আলীর নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ১১২ রান তুলতেই ৭ উইকেট হারায় সিলেট। শেষ ২০ রান তুলতে ৫ উইকেট হারায় আবুল হাসানের দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর : রংপুর-খুলনা (১ম স্তর)
রংপুর ১ম ইনিংস : ৮৭.৩ ওভারে ৩২৫/৬ (সায়মন ৫০, নাঈম ১২০*, ধীমান ১০৫; আল-আমিন ৫০/৩, রাজ্জাক ৮৭/৩)।
ঢাকা-বরিশাল (১ম স্তর)
বাজে আউটফিল্ডের কারণে প্রথম দিনে খেলা পরিত্যক্ত
ঢাকা মেট্রো-চট্টগ্রাম (২য় স্তর)
ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস : ৯০ ওভারে ২৫৭/৫ (আশরাফুল ১০৪, মেহরব জুনি. ৬৫*; মেহেদী রানা ৪৭/২, শাখাওয়াত ৫৬/২)।
সিলেট-রাজশাহী (২য় স্তর)
সিলেট ১ম ইনিংস : ৫৬.২ ওভারে ১১২/৭ (ইমতিয়াজ ৩৮; ফরহাদ রেজা ২৬/২, মুক্তার ১২/২, সাকলাইন ২৪/২)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।