পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইনকিলাব ডেস্ক : দীর্ঘদিনের ইসরাইলি আগ্রাসন আর দমনপীড়নে পিষ্ট ফিলিস্তিনি জনতার প্রতি সংহতি জানাতে একাত্ম হয়েছে বিশ্বের মুসলিম-অধ্যুষিত ৩০টিরও বেশি দেশের তরুণ প্রজন্ম। গত শনিবার তুরস্কের বাণিজ্যিক রাজধানী ইস্তাম্বুলে জড়ো হয়েছে ওইসব দেশের তরুণ সংগঠন ও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ইউনিয়নের সদস্যরা। নিজস্ব ভূখÐের সুরক্ষায় ফিলিস্তিনি জনগণ যে প্রতিরোধ অব্যাহত রেখেছে, তার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতেই দুই দিনের এক সম্মেলনে জমায়েত হয়েছেন তারা। আয়োজকরা জানিয়েছেন, মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার দাবিকে বিশ্বের প্রতিটি মুসলিম নাগরিকের মনে জাগ্রত রাখতেই এই সমাবেশ। শনিবার থেকে শুরু হওয়া সম্মেলনটির আয়োজক তুরস্কভিত্তিক আনাদোলু ইয়ুথ অ্যাসোসিয়েশন, ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশন অব ইয়ুথ এবং স্টুডেন্ট ইউনিয়নস টু সাপোর্ট প্যালেস্টাইন। উদ্বোধনী ভাষণে আনাদোলু অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান সালিহ তুরান বলেন, ফিলিস্তিন, আল-কুদস (জেরুজালেম) এবং আল-আকসা মসজিদকে আলোচ্যসূচির শীর্ষে রেখে আমরা দ্বিতীয়বারের মতো এ সম্মেলনের আয়োজন করছি। গোটা মুসলিম বিশ্বের তরুণ; যাদের ফিলিস্তিনের মানুষের প্রতি একইরকমের অনুভূতি রয়েছে তাদেরকে প্রতিনিধিত্ব করছি আমরা। ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশন অব ইয়ুথ এন্ড স্টুডেন্ট ইউনিয়নস টু সাপোর্ট প্যালেস্টাইন-এর প্রধান ইহাব নাফি জানান, মুসলিম বিশ্বের মানুষের হৃদয়ে ফিলিস্তিনি দাবিগুলোকে জিইয়ে রাখতে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্বের কাছে একটি বার্তা পৌঁছে দিতে আমরা এ ধরনের সম্মেলন আয়োজন করে থাকি। বার্তাটি হলো-আমাদের দৈনন্দিন এজেন্ডা থেকে ফিলিস্তিন ইস্যুকে সরিয়ে দেয়া যাবে না। আরব এবং মুসলিম বিশ্বের জনগণ ফিলিস্তিনে তাদের অধিকার খর্ব হতে দেবে না। ফিলিস্তিনের জনগণের স্বাধীনতার দাবির প্রতি তুরস্কের সমর্থনের কারণে এবারের সম্মেলন আয়োজনে ইস্তাম্বুলকে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে জানান নাফি। উল্লেখ্য, আরববিশ্বের মার্কিনপন্থী মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলোর একাংশ কখনও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল না। মার্কিনপন্থী এইসব দেশই গত ৫ জুন জঙ্গিবাদে সমর্থন এবং মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করে দেয়ার অভিযোগ তুলে কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দেয়। পরে সউদী নেতৃত্বাধীন ৪ দেশের জোট সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের শর্ত হিসেবে কাতারকে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসকে অর্থ সহায়তা বন্ধ করতে বলা হয়। রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনকে দমন করা কাতারবিরোধী সউদী জোটের পদক্ষেপের প্রধানতম উদ্দেশ্যগুলোর একটি। এই প্রেক্ষাপটে জুনের শেষ সপ্তাহে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে মুসলিম বিশ্বের প্রধান ইস্যু হিসেবে উল্লেখ করেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন আমিনা ব্রেদা। সে দেশের ইয়ুথ ফর আল-কুদস এর নারী শাখার শিক্ষার্থী তিনি। ইস্তাম্বুলে আসার কারণ হিসেবে আমিনা বলেন, মুসলিম হিসেবে আমাদের হৃদয়ে ফিলিস্তিনিরা গুরুত্বপূর্ণ স্থান ধারণ করে রেখেছে। ফিলিস্তিন ইস্যু সম্পর্কে আরও বেশি করে জানতে এবং আরও ভালোভাবে এর প্রেক্ষাপট বুঝতে আমি ইস্তাম্বুলে এসেছি। এ ব্যাপারে জানার পর দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের এ ব্যাপারে জানাব। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটরের প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের পর পশ্চিম তীর ও জেরুজালেম দখলে নেয় ইসরাইল। যুক্তরাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের মধ্যে শান্তি আলোচনা চালানো হলেও এখন পর্যন্ত কোনও সমাধানে পৌঁছানো যায়নি। মুসলিমদের দৃষ্টিতে আল-আকসা বিশ্বের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান। অন্যদিকে ইহুদিরা এ এলাকাকে ‘টেম্পল মাউন্ট’ বলে থাকেন। তাদের দাবি, প্রাচীনকালে এ এলাকায় দুটি ইহুদি মন্দির ছিল। আনাদুলো, মিডল ইস্ট মনিটর, আল-জাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।