দরিদ্র দেশগুলোর গলা চেপে ধরেছে ধনীরা : গুতেরেস
আকাশছোঁয়া জ্বালানির দাম ও আগ্রাসী সুদের হারের মাধ্যমে ধনী দেশগুলো দরিদ্র ও আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে সহিংসতা এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ। সম্প্রতি ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ইসরাইলি হামলায় চলতি বছরের প্রথম দুইমাসে অন্তত দেড়শ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনিদের হামলায় কয়েকজন ইসরাইলি নাগরিকও নিহত হয়েছে। জর্ডানের কর্মকর্তারা বলেছেন, মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে বাদশাহ আব্দুল্লাহ আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ফিলিস্তিনের সহিংসতা হ্রাসের উদ্যোগ নেওয়া এবং তাদের সিরিয়া সীমান্তে মাদক চালান বন্ধে সহযোগিতা চান। এই মাদক চোরা-চালানোর জন্য জর্ডান ইরানপন্থি মিলিশিয়াদের দায়ী করে থাকে। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অস্টিন এখন মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থান করছেন। জর্ডান সফর শেষে তিনি মিশর এবং ইসরাইলে যাবেন। এই অঞ্চলে ইরানের হুমকি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের এই মন্ত্রী মিত্র দেশগুলোতে তাদেরকে সমর্থনের অংশ হিসেবে সফর করছেন। এক ট্ইুট বার্তায় লয়েড অস্টিন লেখেন, ‘সফর শেষ করার আগে মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে তিনি বৈঠক করবেন। আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতির পুনর্ব্যক্ত করবেন।’ গত সপ্তাহে আকাবা শহরে প্রথম ফিলিস্তিনি-ইসরাইলি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র এবং মিশরের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বাদশাহ আব্দুল্লাহ বলেন, সর্বাত্মক আরব-ইসরাইল শান্তি চুক্তির জন্য দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের উদ্যোগ ত্বরাণ্বিত করতে হবে। আল আরাবিয়া এ খবর জানায়। অপর এক খবরে বলা হয়, ইসরাইল অধিকৃত পশ্চিম তীরে বসবাসরত ফিলিস্তিনিরা শিগগিরই তাদের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হতে পারেন। যে এলাকাতে তারা বাস করছেন, সেটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আইনি লড়াই চলছে। ইসরাইল অধিকৃত পশ্চিম তীরের দক্ষিণে একটি আধা-মরুভূমি অঞ্চল মাসাফের ইয়াত্তা। সেখানে বেশ কয়েকটি ফিলিস্তিনি জনপদ রয়েছে। ২০২২ সালের মে মাসে ইসরাইলের সুপ্রিম কোর্ট একটি মামলায় চূড়ান্ত রায় দেয়। রায় অনুসারে, এই গ্রামীণ এলাকায় বাসরত প্রায় এক হাজার ফিলিস্তিনিকে উচ্ছেদ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এই এলাকাটি ‘ফায়ারিং জোন নাইন ওয়ান এইট’ নামেও পরিচিত, যা ইসরাইল সেনা প্রশিক্ষণ ক্ষেত্র হিসাবেও ব্যবহার করে। সম্প্রতি স্থানীয় গণমাধ্যম এবং ইসরাইলের মানবাধিকার সংস্থাগুলোও আসন্ন উচ্ছেদ কার্যক্রমের ব্যাপারে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। খালেট আথাবা গ্রামের ৩৫ বছর বয়সি ফিলিস্তিনি বাসিন্দা জাবের দাবাবসেহ বলেন, ‘প্রতিদিন যেখানে সেখানে চেকপয়েন্ট বসিয়ে ওরা আমাদের ওপর আরো বেশি চাপ প্রয়োগ করছে। মূলত, তারা চায় যে আমরা এখান থেকে চলে যাই।’ পাঁচ সন্তানের বাবা দাবাবসেহ অনেক বছর ধরেই উচ্ছেদের হুমকির মধ্যেই এখানে বাস করছেন। তবে তিনি বলেন, দক্ষিণ হেব্রন পাহাড়ের এই এলাকাটিকে তিনি নিজের বাড়ি বলেই মনে করেন এবং এখান থেকে তিনি যাবেন না। আদালত এবং আদালতের বাইরেও মাসাফের ইয়াত্তা নিয়ে লড়াই চলছে ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে। অঞ্চলটিতে সরকারি কার্যক্রম সমন্বয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর বেসামরিক শাখা অবশ্য এমন কোনো আসন্ন উচ্ছেদ কার্যক্রম নিয়ে মন্তব্য করতে চায়নি। তবে জানুয়ারিতে ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ‘ফায়ারিং জোন নাইন ওয়ান এইট একটি সামরিক এলাকা। যেখানে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। সেটা অনুযায়ী, আইডিএফ এর অনুমতি ছাড়া এখানে প্রবেশ এবং এর মাধ্যমে জীবনের হুমকি তৈরি করা একটি ফৌজদারি অপরাধ।’ গত বছর মার্কিন কংগ্রেসের কিছু সদস্য দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনকে ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের বলপূর্বক উচ্ছেদের ইসরাইলী পরিকল্পনার প্রকাশ্য নিন্দা জানানোর আহ্বান জানান। তারা এটিকে ‘চতুর্থ জেনেভা কনভেনশনের ভয়াবহ লঙ্ঘন’ বলেও উল্লেখ করেন। আল-আরাবিয়া, ডয়চে ভেলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।