নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ইমরান মাহমুদ : এই ম্যাচে নিজেদের জয়, পরের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার হার- এই দুটি সমীকরণই পারে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশকে সেমির টিকি দিতে। এত্তো সহজ কী আদৌ হবে? এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিলো আরেকটি কারণে- ম্যাচটি হবে তো? আরেকটু স্পষ্ট করে বললে- ‘ম্যাচটি নির্বিঘেœ হতে দেবে তো বৃষ্টি’? ইংল্যান্ডের বর্তমান যা আবহাওয়া তাতে এমন শঙ্কা বাস্তবিক। আসর শুরুর দিন থেকেই এই অনাহুত অতিথির যন্ত্রনায় অতিষ্ট অংশগ্রহণকারী দল, খেলা দেখতে আসা দর্শক এমনকি খোদ আইসিসিও। তারপরও অনিশ্চয়তার খেলা ক্রিকেটে ‘কত কিছুই হতে পারে’ ভেবে নিয়েই যখন মাঠে নামা তখন কি আর সেরাটা না দেয়ার সুযোগ থাকে? সেই ভাবনাতেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের একাদশে বেশ কিছু পরিবর্তন নিয়ে এদিন মাঠে নামে মাশরাফিরা।
চার পেসার নিয়ে খেলবে বাংলাদেশ- আগের দিন ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনেই জানিয়েছিলেন অধিনায়ক। মেহেদী হাসান মিরাজের পরিবর্তে তাই একাদশে ঢুকেছেন তাসকিন আহমেদ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে দুটি প্রস্ততি ম্যাচে খুব বেশি ভালো করতে পারেননি তাসকিন। তবে ওয়ানডেতে এক ম্যাচ আগেই হ্যাটট্রিক করেছিলেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। মাশরাফি-মুস্তাফিজ-রুবেল-তাসকিন, এই পেস চতুষ্টয় নিয়ে কিউইদের বিপক্ষে নামে বাংলাদেশ। একাদশে পরিবর্তন এসেছে আরও একটি। দুই ম্যাচে তিন নম্বরে সুযোগ দেওয়া হলেও কাজে লাগাতে পারেননি ইমরুল কায়েস। তার বদলে একাদশে ফিরেছেন মোসাদ্দেক হোসেন। মোসাদ্দেককে নিচে জায়গা দিয়ে তাই আবার তিনে ফিরেছেন সাব্বির। তবে শুধু দুই ম্যাচে ইমরুলের ব্যর্থতাই নয়, মোসাদ্দেককে ফেরানোর পেছনে আরেকটা কারণ বোলিংও। মিরাজ না থাকায় মোসাদ্দেকের অফ স্পিন কাজে লাগবে দলের।
পরিকল্পনায় এই পর্যন্ত একদম সাফল্য দেয়া যায় মাস্টারমাইন্ডদের। শুরুতেই পেসারদের আঘাত, পরে বাকিটা সারলেন মোসাদ্দেক একা হাতে। রানবন্যার ইংল্যান্ডে নিউজিল্যান্ডকে ২৬৫ রানে থামিয়েছে বাংলাদেশ। মার্টিন গাপটিল ভালো সূচনা এনে দেওয়ার পর মাঝে উইলিয়ামসন ও রস টেইলর দলকে টেনেছেন। বাঁচা-মরার ম্যাচে শেষটায় জ্বলে উঠতে পারেনি জিমি নিশাম, কোরি অ্যান্ডারসন, মিচেল স্যান্টনারদের কেউই। আক্রমণাত্মক শুরু করা নিউ জিল্যান্ডকে উড়তে দেননি বাংলাদেশের বোলাররা। কোনো উইকেট না পেলেও আঁটসাঁট বোলিং করেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা (০/৪৫) ও সাকিব আল হাসান (০/৫২)।
শেষটায় ঘুরে দাঁড়িয়ে নিউ জিল্যান্ডকে তিনশ রানের অনেক আগেই থামিয়েছে বাংলাদেশ। ৩৯তম ওভারে ৩ উইকেটে দুইশ রানে পৌঁছে যাওয়া কেন উইলিয়ামসনের দলের নজর সেদিকেই ছিল। শেষ ১০ ওভারের দারুণ বোলিংয়ে লক্ষ্যটা হাতের নাগালেই রেখেছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। শেষ ১০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৬২ রান সংগ্রহ করেছে নিউজিল্যান্ড।
শুরুতে খরুচে বোলিং করা মুস্তাফিজুর রহমান পরে বাধ দিয়েছেন রানের গতিতে। তাসকিন আহমেদ ও রুবেল হোসেনের বাড়তি গতি ভুগিয়েছে নিউ জিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের। ৪৩ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন তাসকিন, রুবেল ৬০ রানে একটি। সবচেয়ে বড় চমক ছিল ডেথ ওভারে মোসাদ্দেক হোসেনের দারুণ বোলিং। ৩ ওভারে ১৩ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন এই অফ স্পিনার। ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো তিন উইকেট পেয়েছেন এই তরুণ।
৪ পেসার নিয়ে ২০১৫ সালে দেশের মাটিতে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। ২০০৫ সালের ১৮ জুন কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেন্সে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ক্রিকেট-বিশ্বকে হতবাক করে দিয়েছিল বাংলাদেশ। সেঞ্চুরি করে ওই ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল। এক যুগ পর একই মাঠে আরেকটি ‘রূপকথা’র জন্ম দেওয়ার হাতছানি টাইগারদের সামনে।
এক যুগ আগে অস্ট্রেলিয়াকে ২৪৯ রানে বেঁধে রেখে জয়ের আনন্দে মেতে ছিল টাইগাররা। বোলাররা তাদের দায়িত্ব পালন করেছেন। এবার ব্যাটসম্যানদের সামনে দলকে লক্ষ্যে পৌঁছে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ। ১২ বছর পর বাংলাদেশ সেই সোফিয়া গার্ডেন্সে জিতলে জয়ের নায়ক কি কোনও ব্যাটসম্যান হবেন? আরেকটি কার্ডিফ-রূপকথার অপেক্ষায় সারা বাংলাদেশ!
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।