মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : গণতন্ত্রে জনগণই যে শেষ কথা তা আরেকবার প্রমাণ হলো ফ্রান্সে। গণরায়ে ভেসে গেল প্রথাগত রাজনীতি। ফরাসি জাতির নতুন প্রেসিডেন্ট কে হবেন তা জানতে ৭ মে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে প্রথম পর্বে যা হয়ে গেল তা রীতিমতো ইতিহাস। ভরাডুবি হলো শীর্ষ দুই দল কনজারভেটিভ ও সোশালিস্ট পার্টির প্রার্থীদের। বাজিমাত করলেন রাজনীতির বাইরে থেকে আসা মধ্যপন্থী এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। সামান্য ব্যবধানে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন কট্টর ডানপন্থি মারি লে পেন। অর্থাৎ ৭ মে’র দ্বিতীয় রাউন্ড ভোটে মুখোমুখি হবেন এই দুই প্রার্থী। মধ্যপন্থি এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর প্রতি ব্যাপক জনসমর্থনে ধোপেই টিকলেন না কনজারভেটিভ প্রার্থী ফ্রাঁসোয়া ফিলন ও সোসালিস্ট প্রার্থী বেনোয়া হ্যামন। প্রথম দফা নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন ম্যাক্রোঁ। তার প্রাপ্ত ভোটের শতকরা হার ২৩.৯ ভাগ। অন্যদিকে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা লে পেন পেয়েছেন শতকরা ২১.৪ ভাগ ভোট। ফলে ৬ দশকের মধ্যে রাজনীতির সব হিসাব-নিকাশ এলোমেলো হয়ে গেছে। এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে এবারই প্রথম ফ্রান্সের শীর্ষ দুই দল কনজারভেটিভ ও সোসালিস্ট দলের প্রার্থীরা দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের যোগ্যতা অর্জন করতে পারেননি। প্রথম রাউন্ডে সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্ত ম্যাক্রোঁ ও লে পেনের নিকটতম প্রার্থী মধ্য-ডানপন্থি ফ্রাঁসোয়া ফিলন ও কট্টর বামপন্থি জ্যাঁ লুক মেলেঞ্চোঁ। তারা দু’জনেই পেয়েছেন শতকরা ১৯ ভাগের মতো ভোট। শীর্ষে থাকা ম্যাক্রোঁ শিবির উল্লাসে ফেটে পড়ছে। উচ্ছ¡সিত সমর্থকদের উদ্দেশে ম্যাক্রোঁ নিজেকে ফ্রান্সের জন্য দেশপ্রেমিক হিসেবে বর্ণনা করেছেন। উদ্বেলিত ম্যাক্রোঁ বলেন, আমি আশা করছি আগামী এক পক্ষের মধ্যে আমিই হতে যাচ্ছি আপনাদের প্রেসিডেন্ট। আমি ফ্রান্সের সব মানুষের প্রেসিডেন্ট হতে চাই। জাতীয়তাবাদীদের হুমকির মুখে আসছেন দেশপ্রেমিক প্রেসিডেন্ট। ওদিকে তার সঙ্গে দ্বিতীয় পর্বের ভোটের যোগ্যতা অর্জনকারী মারি লে পেন সব দেশপ্রেমিকের কাছে আহŸান জানিয়ে বলেছেন ফ্রান্সকে টিকিয়ে রাখার জন্য তিনিই মূল ব্যক্তি, তাই ভোট দেয়া উচিত তার দলকেই। লে পেন বলেন, তারা যেখান থেকেই আসুন না কেন, তাদের অরিজিন বা শেকড় যা-ই হোক না কেন, প্রথম দফায় তারা যাকেই ভোট দেন না কেন, আমি তাদের সবার প্রতি আহŸান জানাচ্ছি আমাদের সঙ্গে যোগ দিতে এবং একই সঙ্গে পুরনো কলহ থেকে বেরিয়ে আসতে। আহŸান জানাচ্ছি দেশের জন্য যা প্রয়োজন সেই মূল ইস্যুটি উপলব্ধি করতে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বহুল আলোচিত এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সাবেক একজন ব্যাংকার। আগে তিনি দেশের অর্থমন্ত্রী ছিলেন। তবে এবারের নির্বাচনের আগে কোনো নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেননি তিনি। তাই তাকে রাজনীতিতে বহিরাগত বা আউটসাইডার হিসেবে দেখা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে যেমন হঠাৎ করে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ডনাল্ড ট্রাম্প সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করে চমকে দিয়েছেন সারা বিশ্বকে, ফ্রান্সেও কি তেমনটা হতে যাচ্ছে- এমন জিজ্ঞাসা বিশ্লেষকদের। কিন্তু ম্যাক্রোঁর সঙ্গে ট্রাম্পের মিলের চেয়ে অমিলই বেশি। একমাত্র আউটসাইডার হওয়া ছাড়া দু’জনের কোনো মিলই নেই। যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যেমন অভিবাসন ও মুসলিমবিরোধী, কিন্তু ফ্রান্সে এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ অভিবাসন বিরোধী বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিরোধী নন। বরং তার প্রতিদ্ব›দ্বী মারি লে পেনের সঙ্গে ট্রাম্পের মিল রয়েছে প্রচুর। লে পেনও কট্টর ডানপন্থি, এসটাবলিশমেন্ট-বিরোধী ও প্রচÐ ইউরোপ বিরোধী। তিনি অভিবাসন বিরোধীও। প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তিনি ফ্রান্সের সীমান্ত বন্ধ করে দেবেন। ইসলামপন্থি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। হেনিন-বিউমন্টে শহরে আরেক র্যালিতে লে পেন তার সমর্থকদের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন ‘ক্রোধোন্মত্ত অভিজাতদের বিরুদ্ধে লড়াই করুন। নির্বাচনের ফল ঐতিহাসিক। ফ্রান্সকে রক্ষা করা, ঐক্যবদ্ধ করার, নিরাপদ হিসেবে গড়ে তোলার, সংস্কৃতিকে রক্ষার, সমৃদ্ধি ও স্বাধীন ফ্রান্সের জন্য বিশাল এক দায়িত্ব এসে পড়েছে এতে আমার ওপর। ওয়েবসাইট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।