Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটের মৃত্যু!’

আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়

| প্রকাশের সময় : ২১ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : শততম টেস্টে অবিস্মরণীয় জয়। শ্রীলঙ্কাকে তাদেরই মাটিতে ৪ উইকেটে হারিয়ে বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে অনন্য এই কীর্তি গড়ে বাংলাদেশ। কলম্বোর পি সারা ওভালে এই হারের পর লঙ্কান অধিনায়ক রঙ্গনা হেরাথ, বাংলাদেশের কাছে এই হার তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে হারগুলোর একটি। সেই শেক যেন বইছে দেশটির সর্বত্র। শ্রীলঙ্কান ইংরেজি পত্রিকা দ্য আইল্যান্ড তো গতকাল তাদের ওয়েবসাইটে এই হারকে ‘মৃত্যুসম’ বলে নিজ দেশের ক্রিকেটের এক ‘এপিটাফ’ই প্রকাশ করেছে। দ্য আইল্যান্ড মৃত্যুফলক বানিয়ে তাতে লিখেছে: ‘আন্তরিকতার সঙ্গে স্মরণ করছি শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটকে। মৃত্যু : ১৯ মার্চ, ২০১৭, স্থান : দ্য ওভাল (পি সারা ওভাল)। এই মৃত্যুতে তার সকল শুভানুধ্যায়ী গভীরভাবে শোকাহত। আর.আই.পি (রেস্ট ইন পিস-আত্মা স্বর্গলাভ করুক)। পুনশ্চ : মৃতদেহ দাহ করা হবে এবং ছাই নিয়ে যাওয়া হবে বাংলাদেশ।’
এপিটাফটি ১৮৮২ সালে দ্য স্পোর্টিং টাইমসে লেখা রেজিন্যাল্ড ব্রæকসের সেই বিখ্যাত এপিটাফটির হুবহু অনুকরণ। অস্ট্রেলিয়ার কাছে ইংল্যান্ড ৭ রানে টেস্ট হেরে যাওয়ার পর ব্রæকস এটিকে প্রতীকী মৃত্যু হিসেবে দেখেছিলেন। এর পরপরই ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার এই আদি দ্বৈরথ ‘অ্যাশেজ’ সিরিজ নামে বিখ্যাত হয়ে যায়।
এটি যতটা না ক্রিকেটের মৃত্যু, তার চেয়ে বেশি ক্রিকেটীয় অহংবোধের মৃত্যুর প্রতীক। বাংলাদেশের কাছে নিজেদের মাঠে হেরে যাওয়াকে শ্রীলঙ্কার অন্যতম পত্রিকাটি সেভাবেই দেখছে। পি সারা ওভালে শততম টেস্টে বাংলাদেশের এই ঐতিহাসিক জয় লঙ্কান ক্রিকেটের ‘মৃত্যু’ হয়তো নয়; তবে এটি অবশ্যই বাংলাদেশ ক্রিকেটের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা।
শ্রীলঙ্কায় যেমন মাতম চলছে তাদের এমন হারে, ঠিক তার উল্টো বাতাস বইছে বিশ্ব মিডিয়ায়। বাংলাদেশের এমন বিজয়ে নতুন এত অধ্যায়েরই সূচনা দেখছেন অনেকেই। গতকাল প্রকাশিত কোলকাতার বিভিন্ন ভাষার দৈনিক সংবাদপত্র গুরুত্ব দিয়ে তা প্রকাশ করেছে এমন জয়। বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের প্রশংসার পশাপাশি ভবিষ্যতে এই ধারা অব্যাহত রাখবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে এসব প্রতিবেদনে। বাংলাদেশের জয়ের ওপর খেলার পাতায় প্রধান প্রতিবেদন করেছে দৈনিক আজকাল। চার কলামজুড়ে ছবিসহ প্রতিবেদনের শিরোনাম করা হয়েছে ‘শততম টেস্টে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়’। টাইমস অব ইন্ডিয়ার কলকাতা থেকে প্রকাশিত বাংলা দৈনিক ‘এই সময়’ খেলার পাতায় শিরোনাম করেছে, ‘তামীমের ব্যাটে ঐতিহাসিক জয় তুলে নিল বাংলাদেশ’। সঙ্গে দু’টি ছবি। একটিতে রয়েছেন জয়ের নায়ক তামীম ইকবাল, আরেকটি জয়ের মুহূর্তে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের উল্লাস। আনন্দবাজার পত্রিকা খেলার পাতায় প্রকাশিত ৬ কলামের খবরে শিরোনাম করেছে, ‘তামীমের ব্যাটে শততম টেস্টে বাংলার জয়গান’। সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের বিজয় উল্লাসের একটি ছবি। দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন খেলার পাতায় চার কলামজুড়ে ছবিসহ প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনাম করেছে, ‘শততম টেস্ট স্মরণীয় করে রাখল বাংলাদেশ, প্রথমবার লঙ্কা জয় টাইগারদের’।
শুধা বাংলা-ই নয়, বাংলাদেশের এই জয়ের খবরে ভরপুর ছিলো ইংরেজি দৈনিকগুলোও। দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফে শিরোনাম ‘হান্ড্রেডথ টেস্ট অ্যান্ড মেমোরেবল উইন’ এর সঙ্গে দেয়া হয়েছে জয়োদযাপনের মুহূর্তের মুশফিকুর রহিমের সেই দৌড়ের ছবিটি। দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার শিরোনাম, ‘বাংলাদেশ উইন হান্ড্রেডথ টেস্ট, শেয়ার সিরিজ উইথ শ্রীলঙ্কা’। সঙ্গে একটি ছবি। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকা বাংলাদেশের জয় নিয়ে দুটি প্রতিবেদন করেছে। ক্রীড়া পাতায় ছয় কলামজুড়ে প্রধান খবরের শিরোনাম করা হয়েছে, ‘আ টন টু স্যাভর ফর দ্য টাইগার্স’। সঙ্গে চার কলামজুড়ে বাংলাদেশ দলের জয়ের মুহূর্তের উল্লাসের ছবি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মৃত্যু


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ