Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

অস্ট্রেলিয়ান বিশেষজ্ঞের পরামর্শে মাঠ সংস্কারের উদ্যোগ

| প্রকাশের সময় : ১৮ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

শামীম চৌধুরী : ২০০৫ সালে বসত আর্কিটেক্টের পরিকল্পনায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) অর্থায়নে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ভূগর্ভস্থ ড্রেনেজ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করে ক্রিকেট বিশ্বে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ( বিসিবি)। ভারী বর্ষণ থেমে যাওয়ার মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে পানি নিষ্কাশনের এই আধুনিক পদ্ধতি প্রশংসিত হয়েছে ক্রিকেট বিশ্বে। ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ওই ভূগর্ভস্থ ড্রেনেজ সিস্টেম অনুসরণ করে পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশের প্রতিটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যুর মাঠ তৈরি করেছে বিসিবি এবং এনএসসি। তবে আধুনিক ড্রেনেজ সিস্টেমের আওতায় আনা দেশের প্রথম মাঠটির ড্রেনেজ ব্যবস্থা এখন আর আগের মতো নেই। মাঠ থেকে এখন আর দ্রæততম সময়ের মধ্যে পানি নিষ্কাশন করা যাচ্ছে না। ৪ বছর আগে এরিয়েটর পদ্ধতিতে সারা মাঠ ছিদ্র করে পানি নিষ্কাশনের বন্দোবস্ত করা হলেও সনাতনী এই পদ্ধতিতে মাঠকে আগের অবস্থায় আনা যায়নি। অল্প বৃষ্টিতেও মাঠে জমে থাকা পানি সহজে নিষ্কাশন করা যাচ্ছে না।
হোম অব ক্রিকেটকে ঘিরে প্রতি বছর ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটসূচি আবর্তিত হয় বলে এই মাঠের ড্রেনেজ ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে সংস্কারের উদ্যোগ এতোদিন নিতে পারেনি বিসিবি। পুরো মাঠের মাটি উপড়ে ফেলে, ভূগর্ভস্থ ফিল্টার পরিস্কার করে নুতন করে পাথরের নুড়ি, সিলেট স্যান্ড ফেলে নুতন করে মাঠটি ব্যাপকভাবে সংস্কার করা ব্যয়বহুল। এই সংস্কার কাজের জন্য অন্ততঃ ৪ কোটি টাকা প্রয়োজন। মাঠটির ব্যাপক সংস্কার করতে হলে অন্ততঃ এক বছর মাঠটি থেকে ক্রিকেটকে নির্বাসন দিতে হবে বলে সাশ্রয়ী বাজেটে বিকল্প পদ্ধতিতে মাঠ সংস্কারের পরিকল্পনা এখন বিসিবি’র গ্র্যাউন্স কমিটির।
সে কারণেই অস্ট্রেলিয়ার মাঠ বিশেষজ্ঞ কিথ উইলিয়াম ম্যাকুলাইফের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী মাঠ সংস্কার কাজে হাত দিতে চাচ্ছে বিসিবি। আধুনিক ড্রেনেজ পদ্ধতিতে মাঠ নির্মাণও সংস্কারে ৩০ বছরের অভিজ্ঞ ফিফা, এএফসি’র স্বীকৃত এই মাঠ বিশেষজ্ঞ অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডে ৩ বছর আগে স্থাপন করেছেন ল্যাবোস্পোর্টসÑএই ফ্রোফাইলই আকৃষ্ট করেছে বিসিবিকে। গতকাল বিসিবি’র কিউরেটরদের নিয়ে সরেজমিনে মাঠ পরিদর্শন করেছেন, নিজের যন্ত্রপাতি দিয়ে মাঠের পানি নিষ্কাশন পদ্ধতির প্রতিবন্ধকতা সম্পর্কে জেনেছেন। এক সপ্তাহের মধ্যে এই মাঠটির রিপোর্ট এবং দ্রæত পানি নিষ্কাশনে ব্যবস্থাপত্র দেয়ার কথা তার। বিসিবি’র সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন এ তথ্যই দিয়েছেনÑ ‘এতদিন যে যার মত গদবাধা নিয়মে মাঠ সংস্কার করেছেন। ফলে আগের মতো ড্রেনেজ সিস্টেম কাজ করছে না। আমাদের প্রাথমিক পরিকল্পনা ছিল পুরো মাঠের মাটি উপড়ে ফেলে ড্রেনেজ সিস্টেম সংস্কার। তবে অস্ট্রেলিয়ার ওই এক্সপার্টের পর্যবেক্ষণ শুনে মনে হচ্ছে মাঠের উপরের ৪ থেকে ৬ ইঞ্চি মাটি উপড়ে ফেলে দিলেই মাঠটিকে আগের অবস্থায় আনা সম্ভব। উনি এক সপ্তাহের মধ্যে যে রিপোর্ট দিবেন সে আলোকেই আমরা কাজে হাত দিব।’
বিসিবি’র গ্র্যাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান হানিফ ভুঁইয়া ও অস্ট্রেলিয়ার এই মাঠ বিশেষজ্ঞের পরামর্শকে দিচ্ছেন গুরুত্বÑ ‘যেহেতু বিসিবি মাঠ সংস্কারে আগ্রহী, তাই এই কাজটি যাচাই বাছাই করে উপযুক্ত ব্যক্তির পরামর্শ অনুযায়ী হলে ভাল হয় বলে কেথ উইলিয়াম ম্যাকুলাইফকে আনা হয়েছে। ওনার কথা শুনে মনে হচ্ছে, মাঠের ড্রেনেজ সিস্টেমে তেমন ক্ষতি হয়নি। উপরের থেকে ক’ ইঞ্চি মাটি ফেলে দিলেই মাঠটি আগের অবস্থায় আসতে পারে। এই কাজে ৫ থেকে ৬ মাসের বেশি লাগার কথা নয়। আগস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ আছে। সে কথাটিও মাথায় রাখতে হচ্ছে।’ অস্ট্রেলিয়ার এডিলেড ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পিচ কিউরেটর রিচার্ড উইন্টারের ফর্মুলায় স্থায়ীভাবে তৈরি হওয়া ৮টি পিচ অক্ষত রেখে মাঠের ড্রেনেজ সিস্টেম সংস্কার করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের পিচ তৈরির সঙ্গে সর্ম্পৃক্ত কিউরেটর সামছুল আলম বেলাম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অস্ট্রেলিয়া


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ