Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

উল্লাপাড়া হাসপাতালে রোগীদের হোটেলের পঁচা-বাসি খাবার সরবরাহ

| প্রকাশের সময় : ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

উল্লাপাড়া উপজেলা সংবাদদাতা : সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া ২০ শর্য্যা হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের হোটেল থেকে নিম্নমানের পঁচা-বাসি খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। হাসপাতালের নিয়োজিত ঠিকাদার হাসপাতালের অভ্যান্তরে বাবুর্চিদের দিয়ে রান্না করা খাবার রোগীদের সরবরাহ করার কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে বাহিরের হোটেল থেকে খাবার সরবরাহ করে সরকারি বরাদ্দের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের হোটেলের নিম্নমানের পঁচা-বাসি খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। হাসপাতালটির নিয়োজিত ঠিকাদার রান্না করা খাবার সরবরাহ না করে হোটেলের নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করে আসছে। সোমবার দুপুরে সরেজমিনে হাসপাতালটি পরিদর্শনের সময় রোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়,তাদের দুপুরের খাবার হোটেল থেকে পলিথিনে ভরে নলা মাছের লেজ এবং সাদা ভাত দেয়া হয়েছে।  অতি নিম্নমানের এ খাবার দিয়ে পঁচা-বাসি গন্ধ বের হচ্ছে। এ খাবার রোগীরা খেতে পারছে না। হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে সিফাত (৪) নামে পা পোঁড়া শিশুকে শুক্রবার ভর্তি করেছে তার বাবা রাশেদুজ্জামান।
তিনি জানান,অসুস্থ ছেলেকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করলেও হাসপাতালের পঁচা-বাসি খাবার খেয়ে সে আরো অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বাহিরের হোটেল থেকে কিনে আনা এ খাবার নিয়ে তিনি চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মহিলা ওয়ার্ডে শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হয়েছেন উপজেলার ফরিদপুর  গ্রামের জয়নাল প্রামানিকের স্ত্রী সাহেরা খাতুন (৬০)। দুপুরের খাবার কি পেয়েছেন জানতে চাইলে তিনি জানান,পলিথিনের মধ্যে ঝোলের সাথে মিরকা মাছের ফেইছা (নলা মাছের লেজ) আর গলা ভাত দিছে। গন্ধে খাবার না পাইরা বিলাইকে (বিড়াল) দিছি। খাবার নিয়ে এরকম অসন্তোষ প্রকাশ করলেন হাসপাতালের ভর্তিকৃত আরো অনেক রোগী।
জানা যায়,হাসপাতালটিতে সুলতান ও ফিরোজা খাতুন নামে দুইজন বাবুর্চি নিয়োজিত রয়েছে। তারা হাসপাতালের অভ্যন্তরে ঠিকাদারের সরবরাহ করা বাজার দিয়ে রান্না করে রোগীদের খাবার সরবরাহ করার কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে না। হাসপাতালে নিয়োজিত ঠিকাদার সিরাজগঞ্জের মেসার্স অনামিকা এন্টারপ্রাইজের মালিক নাজমুল হুদা নাসিম এসব তদারকির দায়িত্বে থাকা ইনচার্জ সিনিয়র নার্স সেলিনা খাতুনকে হাত করে বাহির থেকে হোটেলের পঁচা-বাসি খাবার সরবরাহ করছে।
একই সাথে অন্য খাবারগুলোও নিম্নমানের। রান্না করতে হয়না বলে এ হাসপাতালের বাবুর্চিরাও নিয়মিত হাসাপাতালে আসে না। দীর্ঘদিন ধরে ইনচার্জ সেলিনা খাতুনের সাথে আতাত করে রোগীদের এই নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। মাসের পর মাস এভাবে সরকারি নীতিমালা এবং বিধান না মেনে রোগীদের জন্য বরাদ্দের খাবার না দিয়ে নিজেদের ইচ্ছামত নিম্নমানের খাবার দিয়ে সরকারী বরাদ্দের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে।
বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসলেও তা যেন দেখার কেউ নেই। উল্লাপাড়া ২০ শর্য্যা হাসপাতালের নানা অনিয়ম দূর্নীতি নিয়ে দৈনিক ইনকিলাবে ধারাবহিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর তদন্ত কমিটি গঠন হলেও অদ্যবধি সে তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি।
হাসপাতালে বাহিরের হোটেল থেকে খাবার সরবরাহ করা প্রসঙ্গে জানতে চেয়ে উল্লাপাড়া ২০ শর্য্যা হাসপাতালের আরএমও ফিরোজ হোসেন তালুকদারে সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি মুঠোফোন রিসিভ করেননি। হাসপাতালটির খাবার সরবরাহে নিয়োজিত ঠিকাদার নাজমুল হুদা নাসিমের সাথে কথা হলে তিনি জানান,নিয়ম অনুযায়ী খাবার সরবরাহ করা হয়। আমার অবর্তমানে দায়িত্বে নিয়োজিত লোক এমন কাজ করতে পারে। তবে পরর্বতীতে আর এমন হবে না বলে তিনি দাবি করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উল্লাপাড়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ