Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

১০ বছর পর আলোচিত হাফসা হত্যার বিচার শুরু

কথিত পীর বাবার হাতে খুন

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৫ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

ফতোয়ার অপব্যাখ্যায় দোররা মেরে কথিত পীর বাবার হাতে মেয়ে খুনের ঘটনার ১০ বছর পর বিচারকাজ শুরু হয়েছে। উচ্চ আদালতে আসামিপক্ষের মামলা বাতিল চেয়ে আবেদন (কোয়াশমেন্ট) খারিজ হওয়ায় চাঞ্চল্যকর এ মামলার শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ। গতকাল সোমবার অতিরিক্ত ২য় মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আমিরুল ইসলামের আদালতে পিতা মতিনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন পুত্র ও মামলার বাদী আবু দারদা। আগামী ১৯ জানুয়ারি তার অসমাপ্ত সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আদালত।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ও মানবাধিকার নেতা জিয়া হাবীব আহসান জানান, ২০০৯ সালে ১৯ আগস্ট পাহাড়তলীর গ্রীণভিউ আবাসিক এলাকার পীর মতিনের আস্তানায় নিজের পছন্দ করা পাত্রকে বিয়ে করতে চাওয়ায় মেয়ে হাফসাকে দোররা মারেন বাবা মতিন। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন চাচা আব্দুস সবুর ও বাবার কথিত প্রেমিকা নার্গিস। হাফসার সঙ্গে তার আরও দুই বোনকে একই অভিযোগে মাথা ন্যাড়া করে দোররা মেরে মারাত্মকভাবে জখম করা হয়। হাফসাকে মারার পর রাতের আঁধারে ঘরের মধ্যে জানাযা পড়ে কবর দেয়া হয়। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করতে গেলে মামলা নেয়নি থানা-পুলিশ।
পরে বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে সরেজমিন তদন্ত এবং নির্যাতিতদের আইনী সহায়তা দেওয়া হয়। এ ঘটনার নির্যাতিতদের পক্ষে তার ভাই আবু দারদা হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের সহায়তায় আদালতে মামলা দায়ের করেন। পরে আদালত সংশ্লিষ্ট থানাকে মামলা তদন্তের নির্দেশ দেন। এ চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলাটি ভুল বুঝাবুঝি উল্লেখ করে ২০১০ সালের ৩০ এপ্রিল চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। মামলার বাদি নারাজী দিলে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনারকে নির্দেশ দেয়া হয়।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন সহকারী কমিশনার প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী দীর্ঘ তদন্ত শেষে আদালতে মামলার মূল আসামি ভণ্ডপীর মতিনসহ (৬০) পাঁচ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট দেন। মতিন ছাড়াও মতিনের ভাই সবুর (৪৫), স্ত্রী ডা. শাহিদা বেগম (৪০), মতিনের সঙ্গী নার্গিস বেগম (২০) এবং ছোট বোন বিনু বেগমকে আসামি করা হয়। পরে ২০১৩ সালের ১৫ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন আদালত। কিন্তু ওইদিন আদালতে মামলার প্রধান আসামি আব্দুল মতিনের পক্ষে উচ্চ আদালতের ফৌজদারি রিভিশন ফাইল করলে রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উচ্চ আদালত বিচারিক আদালতের মামলায় স্থগিতাদেশ দেন।
২০১৯ সালে ১৪ মে উচ্চ আদালতে আসামির ফৌজদারি রিভিশন খারিজ হলে আদালত ৬ মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। মামলার এজাহার বহির্ভূত সাজানো সাক্ষী উপস্থাপন করে আসামিপক্ষ মামলা থেকে অব্যাহতি নেয়ার চেষ্টা চালায়। তবে চলতি বছরের ১৭ অক্টোবর মামলার বাদী আবু দারদা জবানবন্দি দেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খুন

৩১ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ