Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিক্ষার সকলস্তরে ইসলামী শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে পীর সাহেব চরমোনাই

পীর সাহেব চরমোনাই

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ অক্টোবর, ২০২২, ৫:৩৬ পিএম

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, শিক্ষার প্রাইমারিস্তর থেকে সর্বোচ্চ মাস্টার্স পর্যন্ত ইসলামী শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে। নাস্তিক্যবাদী সিলেবাস বাস্তবায়নে সরকার মরিয়া হয়ে উঠছে। তিনি বলেন, ইসলামী শিক্ষা বাস্তবায়নে প্রয়োজনে কঠোর থেকে কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে দাবি আদায়ে বাধ্য করা হবে।

আজ শনিবার রাজধানীর কাকরাইলস্থ ইনস্টিটিউ অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিভাগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত কারিকুলাম ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১’ ধর্মীয় শিক্ষার অবস্থান শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পীর সাহেব চরমোনাই এসব কথা বলেন।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় শিক্ষা উপদেষ্টা ড. আ.ফ.ম খালিদ হোসাইন। বক্তব্য রাখেন, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কোরআন শিক্ষা বোর্ডের মহাসচিব আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজী, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. তৌহিদুল হাসান, ঢাকা বিশ^বিদ্যায়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. একেএম ইউনুস, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ-যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান, ড. শহীদুল হক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. শেখ রফিকুল ইসলাম, কুমিল্লা বিশ^বিদ্যালয় গণ-যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. হানিফ খান, মহাখালী দারুল উলুম হোসাইনিয়ার কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল ড. মাওলানা নজরুল ইসলাম আল মারূফ, নটরডেম ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. জামির হোসেন, ইসলামী শিক্ষা উন্নয়ন বাংলাদেশের মহাসচিব মুহাম্মদ আব্দুর রহমান, ছাত্রনেতা শরিফুল ইসলাম রিয়াদ, নেছারাবাদ কওমি মাদরাসার শিক্ষা সচিব মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক নাসির উদ্দিন খান। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করে দলের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও সাংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা মোহাম্মদ নেছার উদ্দিন, মহিলা ও পরিবার কল্যাণ সম্পাদক মাওলানা এবিএম জাকারিয়া।
আলেচনা সভায় ২০ দফা দাবি পেশ করা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে, আগামী প্রজন্মকে সু-নাগরিক, নীতিবান ও দ্বীনদার হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোরআন শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে, আলীয়া মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থার স্বকীয়তা ও স্বাতন্ত্রতা বজায় রাখার স্বার্থে দাখিল পর্যায়ে ৫০০ নম্বরের আরবি শিক্ষা পূর্বের ন্যায় বহাল রাখতে হব, শিক্ষানীতি, শিক্ষা কারিকুলামে ইসলামী স্কলারদের অন্তর্ভূক্ত করতে হবে, ইসলাম শিক্ষা পাঠ্যবইয়ের নাম ‘মূল্যবোধ ও নৈতিকতা’ কিংবা অন্য কিছু নয়, ‘ইসলাম শিক্ষা’ই রাখতে হবে, অন্যান্য ধর্মশিক্ষার ক্ষেত্রেও স্ব-স্ব ধর্মের নামে থাকতে হবে, যে সমস্ত শ্রেণিতে (৯ম থেকে ডিগ্রি পর্যন্ত) চার্লস ডারউইনের অপ্রমাণিত বিবর্তনবাদকে পাঠ্য করা হয়েছে, সেই সমস্ত শ্রেণিও পাঠ্য থেকে এই অবৈজ্ঞানিক ও বিতর্কিত তত্ত্ব, যা ধর্মবিরোধী ও নাস্তিক্যবাদের ওপর প্রতিষ্ঠিত, তা বাতিল করতে হবে, ২০২৩ থেকে নতুন কারিকুলাম-এর আলোকে নতুন পাঠ্য ও সিলেবাস বাস্তবায়ন হচ্ছে, সেখানে ধর্মশিক্ষার সূতিকাগার তথা মাদরাসা শিক্ষার জন্যে আলাদা কারিকুলাম এবং আলাদা পাঠ্যপুস্তক-কমিটি করতে হবে, উচ্চশিক্ষাসহ শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মশিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল, বুয়েটসহ সব ধরনের ভর্তি পরীক্ষায় এবং বিসিএসসহ সবধরণের চাকুরির পরীক্ষায় সাবজেক্ট ও পরিস্থিতিভেদে ধর্মশিক্ষা বিষয়ে কমপক্ষে ১০ থেকে ২০ শতাংশ প্রশ্ন বা নম্বর বাধ্যতামূলক রাখতে হবে, সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাব্যবস্থায় বৈষম্য দূরীকরণে স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদরাসাসহ সকল শিক্ষা ব্যবস্থাকে জাতীয়করণ করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষক রাজনীতি ও ক্ষমতাসীনদের ছাত্ররাজনীতি শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছে। অবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বার্থান্বেষী হানাহানীপূর্ণ রাজনীতি বন্ধ করতে হবে; গঠনমূলক রাজনীতির পরিবেশ তৈরি করতে হবে। কওমি মাদরাসার শিক্ষার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি হয়েছে। এখন দেওবন্দ মাদরাসাসহ বিভিন্ন দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতে আমাদের ছেলেরা পড়তে যেতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে।

সভায় তিন দফা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় অভিমূখে গণমিছিল ১০ নভেম্বর সকাল ১০টায় ব্য়াতুল মেকাররম উত্তর গেটে জমায়েত, সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে শিক্ষাবিদ ও ধর্মীয় ব্যক্তিদের সাথে মাসব্যাপী মতবিনিময় এবং গণ-সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা।

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, শিক্ষামন্ত্রী বরাবরই বলে আসছেন, ইসলামী শিক্ষা ছিল, আছে এবং থাকবে। কিন্তু সিলেবাসে রেখে পরীক্ষা না হলে সে শিক্ষার কোন গুরুত্ব থাকে না। এভাবে ইসলামী শিক্ষাকে গুরুত্বহীন করে দেয়া হয়েছে। চলতি বছর এসএসসি পাবলিক পরীক্ষায় ইসলামী শিক্ষা পরীক্ষা নেয়া হয়নি। দেশের ভবিষ্যত ছাত্র-ছাত্রীদেরকে নাস্তিক্যবাদের দিকে ঠেলে দিতেই ইসলাম শিক্ষা নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি বলেন, ইসলামী শিক্ষা নিয়ে আমরা ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি। মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী বলেন, ইসলামী শিক্ষা নিয়ে যে কোন ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না। তিনি বলেন, ইসলামী শিক্ষা আছে, থাকবে। ইসলামী শিক্ষা না থাকলে এদেশের স্বাধীনতাও প্রশ্নবিদ্ধ হবে। তিনি শিক্ষার সকলস্তরে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি জানান। ইসলামী শিক্ষা ছাড়া সন্ত্রাস, দুর্নীতি, অশ্লীলতা বেহায়াপনা বন্ধ করা যাবে না।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পীর সাহেব চরমোনাই


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ