পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, জাতিকে নাস্তিক বানানোর জন্যই ইসলাম বিদ্বেষী শিক্ষা সিলেবাস তৈরি করা হয়েছে। শিক্ষা সিলেবাসে অন্তর্ভূক্ত বানর থেকে মানুষ সৃষ্টি পাঠ্যসূচি এটা কখনোই মেনে নেয়া হবে না। মুসলিম, হিন্দু বৌদ্দ খ্রিস্টান কোনো জাতিই বিশ্বাস করে না যে বানর থেকে মানুষের সৃষ্টি হয়েছে। জাতি ধর্ম সকলকেই এই আল্লাহদ্রোহী বিতর্কিত পাঠ্যসূচি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করতে হবে। ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশের উদ্যোগে গতকাল শনিবার দুপুরে নগরীর রমনাস্থ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই এসব কথা বলেন।
কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা আব্দুল হক আজাদ, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, উপদেষ্টা প্রফেসর ডা. আক্কাস আলী সরকার সাবেক এমপি, যুগ্ম মহসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা আলহাজ আব্দুর রহমান, হাফেজ মাওলানা ছিদ্দিকুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, কে এম আতিকুর রহমান, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, যুবনেতা মাওলানা নেছার উদ্দিন, মাওলানা খলিলুর রহমান, ন্যাশনাল এলায়েন্সের মেজর জে. (অব.) ডা. হাবিবুর রহমান ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা। সম্মেলন পরিচালনা করেন সংগঠনের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ ওমর ফারুক ও প্রচার সম্পাদক এইচএম সাইফুল ইসলাম।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, এই জমিনে আল্লাহ ও রাসূল (সা.) এর আদর্শ বাস্তবায়ন করাই আমাদের কাজ। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫১ বছরে যারাই ক্ষমতায় গিয়েছে তারাই লুটপাট , দুর্নীতিতে সাফল্য অর্জন করেছে। দেশে সাম্য সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হয়নি। প্রকৃত সাম্য প্রতিষ্ঠা করে ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর (রা.) বিশ্ববাসীর সামনে ইতিহাস তৈরি করে গেছেন।
ন্যায় বিচারের পরিবর্তে আজ দেশে কী হচ্ছে ? ব্যক্তি থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পীর সাহেব চরমোনাই বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, স্বাধীন দেশে এদেশের জনগণ পরাধীনভাবে জীবন যাপন করছে। পীর সাহেব বলেন, সম্প্রতি জাতীয় সংসদে বলা হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারকে সরানোর ক্ষমতা কারো নেই। এতে করে এই সরকার কী ফেরাউনের মতো খোদাই দাবি করে বসলেন কী না ? পীর সাহেব বলেন, মনে রাখবেন ক্ষমতা কিন্ত আজীবনের জন্য নয়; যেকোনো সময়ে ক্ষমতার পরিবর্তন ঘটতে পারে। ক্ষমতার পটপরিবর্তনে শ্রমিক মেহনতি মানুষকে বড় ভূমিকা রাখতে হবে। এ দেশ ও ইসলাম আল্লাহই রক্ষা করবেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। সম্মেলনে মুহাম্মদ আমিনুল ইসলামকে সভাপতি, আলহাজ আব্দুর রহমানকে সিনিয়র সহ-সভাপতি ও মাওলানা খলিলুর রহমানকে সেক্রেটারী জেনারেল করে ২০২৩-২৪ সেশনের জন্য নতুন কমিটি ঘোষণা করে দলের আমীর পীর সাহেব চরমোনাই। পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সিলেবাসে ডারউইনের থিওরী নাস্তিক্যবাদী ও হিন্দুত্ববাদী শিক্ষা সংযোজন করে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে। এ শিক্ষা ব্যবস্থাকে কোনভাবেই মুসলমানের শিক্ষা ব্যবস্থা বলা যায় না। তিনি শিক্ষা ধ্বংসের পথ থেকে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, অন্যথায় সর্বত্র আন্দোলন গড়ে উঠলে সরকারের জন্য কল্যাণকর হবে না। প্রিন্সিপাল মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী বলেন, সরকার জনগণের নাগরিক ও ভোটাধিকার হরণ করে আজীবন ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করছে। দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করে দেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছে। স্বাধীনতার ৫১ বছর পরেও এদেশের মানুষ খাদ্য ও চিকিৎসার জন্য লড়াই করছে। তিনি বলেন, দিনের ভোট রাতে করার ফের চক্রান্ত করলে শ্রমিকজনতা রুখে দাঁড়াবে। মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, ইসলাম স্বচ্ছ সুন্দর ও শৃঙ্খলার নাম। যারা রাষ্ট্র মেরামত ও শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে চায তাদের মধ্যেই মেরামত ও শৃঙ্খলা নেই। যাদের মধ্যে যে গুণ নেই তারা কিভাবে তা বাস্তবায়ন করবে। দুর্নীতিবাজ ও টাউট বাটপার দিয়ে দুর্নীতিমুক্ত দেশ গঠন সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, প্রতিবেদনে উঠে এসেছে সকল শিক্ষিত মানুষ চোর নয়, তবে সকল চোরই শিক্ষিত। বিদেশে বেগমপাড়া যারা তৈরি করেছে তারা কেউ শ্রমিক, রিকসা চালক, দিনমুজুর নয়। এরা সকলেই দেশের শাসন ক্ষমতাসীন। তিনি বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে ভয়াবহ চক্রান্ত চলছে। গোটা দেশের মানুষকে নাস্তিক-মুরতাদ বানাবার ষড়যন্ত্র চলছে। সিলেবাসকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। ওরা দেশটাকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানাতে চায়। ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক শিক্ষানীতি এদেশের মানুষ মেনে নেবে না। ইসলামের অন্যতম বিধান পর্দার বিরুদ্ধে কাল্পনিক গল্প সাজিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে সিলেবাসে। তিনি বলেন, ডারউইনের মতবাদের মাধ্যমে আমাদের পূর্ব পুরুষদেরকে বানর বানাবার চক্রান্ত হচ্ছে। তিনি শাসক শ্রেণির কাছে অনুরোধ করে বলেন,দেশের মানুষকে নাস্তিক বানাবার পথ পরিহার করুন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।