পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পীর ছাহেব চরমোনাই’র সাথে লাখ লাখ মুসল্লির বুকফাঁটা কান্না আর রোনাজারির মধ্যে দিয়ে মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা এবং তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে হতাহতদের জন্য দোয়া-মোনাজাতের মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী চরমোনাই দরবার শরিফের মাহফিল সম্পন্ন হয়েছে।
গত বুধবার বাদ যোহর হযরত মাওলানা মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর ছাহেব চরমোনাই’র উদ্বোধনী বয়ানের মাধ্যমে ফাল্গুন মাসের এ মাহফিলের সূচনা হয়েছিল। গতকাল শনিবার বাদ ফজর সমাপনী অধিবেশনে পীর ছাহেবের দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্যের পরে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে দেশের অন্যতম বৃহৎ আধ্যাত্মিক এ মিলনমেলার।
সমাপনী অধিবেশনে লাখ লাখ মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে বয়ানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর ছাহেব চরমোনাই বলেন, বাংলাদেশ আজ চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দেশে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে সর্বস্তরে ইসলামকে বিজয়ী করতে হবে। আমরা ইসলামকে বিজয়ী করার মাধ্যমে দেশের মানুষের সামনে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য ও মহাত্ম উপস্থাপন করতে চাই।
পীর ছাহেব বলেন, অবৈজ্ঞানিক ও অযৌক্তিক বিবর্তনবাদসহ অসঙ্গতিতে ভরা পাঠ্য সিলেবাসের মাধ্যমে দেশের আগামী প্রজন্মকে নাস্তিক বানানোর ষড়যন্ত্র চলছে। এমন সিলেবাস ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে চলতে দেয়া যায় না বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি। বিবর্তনবাদ এবং নাস্তিক্যবাদী পাঠ্যপুস্তক বাতিলসহ সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবিতে ২৫ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে, থানা পর্যায়ে বিক্ষোভ কর্মসূচিও ঘোষণা করেন পীর ছাহেব চরমোনাই।
সমাপনী অধিবেশনের বয়ানে পীর সাহেব চরমোনাই মাহফিল বাস্তবায়নে সম্পৃক্ত সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনসহ আখেরি মুনাজাতে অংশ নেয়া প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সম্মানিত ওলামায়ে কেরাম এবং গণমাধ্যম কর্মীদের মোবারকবাদ জানান।
মাহফিলের শেষ বয়ানের পরে উপস্থিত কয়েক লাখ মুসল্লিদের নিয়ে আখেরি মোনাজাতে পীর ছাহেব চরমোনাই ভারত, কাশ্মীর, মিয়ানমার, ফিলিস্তিন, সিরিয়াসহ বিশ্বের নির্যাতিত মুসলমানদের নিরাপত্তা ও সমগ্র মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করে মহান আল্লাহ রাব্বুল আল আমীনের দরবারে ফরিয়াদ জানান। বুকফাটা কান্না নিয়ে মুসল্লিদের সাথে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতদের জন্যও বিশেষ দোয়া করেন পীর ছাহেব।
চরমোনাই দরবার শরিফের এবারের মাহফিলেও আগত মুসল্লিদের ওজু গোসলসহ চিকিৎসার সার্বিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়। মাহফিলে আগত মুসল্লিদের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে একটি অস্থায়ী হাসপাতালে প্রায় ১৭ হাজার মুসল্লিকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে।
মাহফিলে আগত মুসল্লিদের মধ্যে বার্ধক্যজনিত কারণসহ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৮ জন মৃত্যুবরণ করেন। যাদের লাশ গোসল ও কাফনসহ নিজ নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হয়েছে চরমোনাই দরবার শরিফের পক্ষ থেকে।
আখেরি মোনাজাত শেষে সড়ক ও নৌপথে লাখ লাখ মুসল্লিবাহী যানবাহনের ভিড়ে দক্ষিণাঞ্চল থেকে সবগুলো জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কসহ জেলা সংযোগ সড়কগুলোতে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। দুপুর ১২টায় এ রির্পোট লেখার সময় বরিশাল-ফরিদপুর-ঢাকা, বরিশাল-ভোলা-লক্ষ্মীপুর-চট্টগ্রাম, বরিশাল-পিরোজপুর-খুলনা, বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা, বরিশাল-বরগুনা, বরিশাল-গোপালগঞ্জ-নড়াইল-যশোর মহাসড়ক সমূহে ব্যাপক যানযট অব্যাহত ছিল। মহানগর ও জেলা ট্রাফিক পুলিশ অত্যন্ত সতর্কতার সাথে চেষ্টা করেও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছিলেন না। বরিশাল নদীবন্দর এলাকা এবং নৌপথও বিভিন্ন ধরনের নৌযানের প্রচণ্ড ভিড়ে পরিলক্ষিত হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।