Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

কাজাখস্তানের দুঃসময়ে সহায়তায় প্রস্তুত চীন

বিক্ষোভে বিদেশি মদতের দাবি প্রেসিডেন্টের, সাবেক গোয়েন্দা প্রধান আটক

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া বিক্ষোভে অগ্নিগর্ভ কাজাখস্তান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনা পাঠিয়েছে রাশিয়া। এবার কাজাখ প্রেসিডেন্টের দিকে সমর্থনের হাত বাড়াল চীন। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জানিয়ে দিয়েছেন, তার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে কাজাখ প্রেসিডেন্টের প্রতি। কাজাখস্তানে কোনো রকমের হিংসাত্মক ঘটনাকে বেইজিং সমর্থন করে না বলে বিবৃতি দিয়েছেন জিনপিং। পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, কাজাখের স্থিতিশীলতা, সুরক্ষা ও শান্তিপূর্ণ জনজীবনকে নষ্ট করতে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির যে কোনো রকম প্রয়াসের নিন্দা করছে চীন। পরিস্থিতি সামলাতে কাজাখ প্রেসিডেন্ট যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন তারও ভূয়সী প্রশংসা করেছেন জিনপিং। তিনি জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তোকায়েভ কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছেন। একজন রাষ্ট্রনায়কের যথাযথ দায়িত্বই পালন করেছে তিনি।

জিনপিং জানিয়েছেন, ‘কাজাখস্তানের ভ্রাতৃপ্রতিম এক প্রতিবেশী ও স্থায়ী কৌশলী অংশীদার দেশ হিসেবে যে কোনো প্রয়োজনীয় সাহায্যের জন্য চীন প্রস্তুত’। উল্লেখ্য, কাজাখস্তানের সঙ্গে ১ হাজার মাইলেরও বেশি বিস্তৃত সীমান্ত এলাকা রয়েছে চীনের। তাছাড়া চীনে ২ লাখেরও বেশি কাজাখ-বংশোদ্ভূত মানুষ বাস করেন।

প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলতে থাকা গণবিক্ষোভ এবং যাবতীয় সহিংসতার জন্য বিদেশি মদতের দিকে আঙুল তুলেছেন কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ট তোকায়েভ। কড়া হাতে বিক্ষোভ দমনের বার্তা দিয়ে আন্দোলনকারীদের সন্ত্রাসবাদী আখ্যাও দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। এলপিজি-র অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে চলতি সপ্তাহের গোড়ায় দেশ জুড়ে প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল কাজাখস্তানে। প্রথমে পশ্চিমের প্রদেশে বিক্ষোভ-আন্দোলন সীমাবদ্ধ থাকলেও ক্রমে তা ছড়িয়ে পড়ে দেশের বৃহত্তম শহর আলমাটি ও রাজধানী নুর-সুলতানে। বিশেষত গত কয়েক দিনে আলমাটি হয়ে উঠেছিল বিক্ষোভের প্রাণকেন্দ্র।

বৃহস্পতিবার অজস্র সরকারি ভবন দখল করে সেখানে আগুন জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। আলমাটিতে গত দু’দিনে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ৩৬ জন সশস্ত্র বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয়। বিক্ষোভকারীদের পাল্টা হামলায় মৃত্যু হয়েছে পুলিশ ও সেনা বাহিনীর ১৮ জন সদস্যের। আটক করা হয়েছে কমপক্ষে ৩ হাজার বিক্ষোভকারীকে। তবে দেশের পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে বলে জানিয়েছে সরকার। শুক্রবার আলমাটিতে বিক্ষিপ্ত হিংসার ঘটনা ঘটলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই ছিল বলে জানাচ্ছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম। প্রেসিডেন্ট তোকায়েভ কড়া হাতেই বিক্ষোভ দমনের বার্তা দিয়ে রেখেছেন।

এদিকে, কাজাখস্তানের বরখাস্ত গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী করিম মাসিমভকে ‘ঘোর রাষ্ট্রদ্রোহিতার’ সন্দেহে আটক করা হয়েছে। দেশটিতে চরম বিশৃংখলার মধ্যেই তার আটকের খবর এলো। শনিবার এক বিবৃতিতে একথা জানিয়েছে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (কেএনবি)। কেএনবির বরাতে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে এসেছে, গত কয়েকদিনে কাজাখস্তানের সহিংসতা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ে তদন্ত চলছে। তদেন্তর মধ্যেই সাবেক গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান করিম মাসিমভকে বৃহস্পতিবার আটক করা হয়। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানায়নি দেশটির সরকার। কয়েকদিনের সহিংসতা পর দেশটির অন্যতম শহর আলমাতি সড়কে কিছুটা স্বাভাবিক পরিস্থিতি দেখা গেছে। সড়কে পড়ে থাকা ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ করছে নিরাপত্তা বাহিনী। বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে, বিক্ষোভকারীদের দেখা মাত্রই গুলির নির্দেশ দেন কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট। সূত্র : রয়টার্স, সিজিটিএন, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ