Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

কেনো দেশে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে?

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ অক্টোবর, ২০২১, ১২:৫০ পিএম

দেশে অর্থনৈতিক সংকট, পারিবারিক জটিলতা, সম্পর্কের অবনতি, পড়াশোনার চাপসহ নানামুখী কারণে বিষণ্নতায় ভোগা মানুষের আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে। এক গবেষণায় দেখা নানা কারণে দেশে ৪৭ ভাগ মানুষ একবার হলেও আত্মহত্যার চিন্তা করে। এদের মধ্যে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২৫ ভাগ।

১০ বছরের বেশি সময় কুয়েতে চাকরি করেছেন সাহাদাত হোসেন মিলন। এক মাস ছুটি নিয়ে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশে আসেন। সঙ্গে ফিরতি টিকিটও ছিল, কিন্তু করোনার কারণে আটকে যায় মিলনের বিদেশযাত্রা।

মিলন মনস্থির করেন আর বিদেশ যাবেন না। ১০ বছর চাকরিতে যে সঞ্চয় করেছেন, তা দিয়ে বাড়ি তৈরির আশায় ১০ লাখ টাকা দিয়ে কেরানীগঞ্জে এক খণ্ড জমি কেনেন তিনি। কিন্তু টাকা পরিশোধ করলেও জমি হাতে পাননি। প্রতারিত হয়েছেন।

টাকার শোকে বিষণ্নতায় ভুগতে থাকেন মিলন। কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরিবারের সচেতনতায় শেষ রক্ষা হয়। এখন তিনি মানসিক রোগী, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের অধীনে চিকিৎসাধীন।

সম্প্রতি ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের ওপর একটি গবেষণা করেছে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল।

করোনাকালে করা এ গবেষণা বলছে, দেশে প্রতি ১০০ জনে ৪৭ জন আত্মহত্যার চিন্তা করে। এদের প্রতি ২৫ জনের একজন আত্মহত্যার পরিকল্পনা করে রেখেছে।

এই গবেষণা বলছে, দেশে পুরুষের চেয়ে নারীদের আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। প্রতি ১০০ জন নারীর মধ্যে ৬ দশমিক ৬ জন আত্মহত্যার পরিকল্পনা করে। আর পুরুষের আত্মহত্যা প্রবণতা দেখা গেছে ২ দশমিক ৬ শতাংশের।

এই গবেষণা বলছে, গ্রামের মানুষের চেয়ে শহরের মানুষের আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। শহরের প্রতি ১০০ জনে ৮ দশমিক ২ জন আত্মহত্যার পরিকল্পনা করেন। আর যারা গ্রামে বসবাস করেন, তাদের আত্মহত্যার প্রবণতা প্রতি ১০০ জনে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। এটা উদ্বেগজনক বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলছেন, যারা আত্মহত্যার পরিকল্পনা করে, তাদের পরিবারের কারও না কারও আত্মহত্যার প্রবণতা বা আত্মহত্যা পরিকল্পনা রয়েছে। এই গবেষণার অংশ হিসেবে ২ হাজার মানুষের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। এদের প্রতি ১০০ জনে ৫ জন আত্মহত্যার চিন্তা করে। এই ৫ জনের মধ্যে ২ দশমিক ৫০ শতাংশ মানুষ আত্মহত্যা করে।

কী কারণে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী রেজিস্ট্রার আহসান আজিজ সরকার জানান, দাম্পত্য জীবনে কলহ, পারিবারিক সম্পর্কের জটিলতা, একাডেমিক পরীক্ষায় খারাপ ফলাফল, হঠাৎ করে রেগে যাওয়ার প্রবণতা, দারিদ্র্য বা অর্থ সংকট, বিষণ্নতা ও হতাশাই আত্মহত্যার চিন্তায় ফেলে প্রভাবিত করে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আত্মহত্যা

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ