নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
এই ম্যাচকে বলা হচ্ছিল ‘তেল ক্লাসিকো’। কেউ কেউ বলছিলেন, ‘এল ক্যাশিকো’। পেট্রোডলারের দাক্ষিণ্যপুষ্ট কাতার আর দুবাইয়ের দুই ক্লাবের লড়াইটা মনে রাখার মতো হলো একটা ঘটনার জন্য। লিওনেল মেসি যে সিটির বিপক্ষেই পিএসজির হয়ে নিজের প্রথম গোল পেলেন!
পিএসজির জার্সিতে অভিষেকে বদলি নেমেছিলেন। এরপর প্রথম একাদশে নেমেও গোল পাননি। বরং চোটের জন্য বাইরে চলে গেছেন সপ্তাহখানেক আগে। এরপর আবার আজকের ম্যাচে ফিরেছিলেন একাদশে। সত্যি বলতে কী, ম্যাচের বেশির ভাগ সময়ই মনে রাখার মতো কিছু করতে পারছিলেন না। সিটি ডিফেন্ডাররা তাকে খেলার সেভাবে সুযোগই দিচ্ছিলেন না। কিন্তু মেসির জন্য তো দরকার ছিল একটা মুহ‚র্ত।
সেটা হয়ে গেল ম্যাচের ৭৪ মিনিটে। অনেকটা ফাঁকায় বল পেয়ে মধ্যমাঠের ওপর থেকে ট্রেডমার্ক দৌড়ে ভেতরে ঢুকে পড়েছিলেন। পুরো ম্যাচে দারুণ খেলা এমবাপেকে বলটা বাড়িয়েছিলেন, এমবাপে আলতো টাচে সেটা ফিরিয়ে দিলেন মেসিকে। বাঁ পায়ে নিখুঁত এক অর্ধবৃত্ত রচনা করে বলটা চলে গেল টপ কর্নারে। মেসি গোলের হিসেব খুললেন তার মতো করেই।
স্বাভাবিকভাবেই ছন্দে ফিরতে পেরে মেসি নিজেও খুব উচ্ছ¡সিত, ‘এত বড় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে গোল করে আমার রাতটা একেবারে পূর্ণতা পেলো। ব্রæজের সঙ্গে ড্র করায় এ ম্যাচটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।’
প্রথম ম্যাচ ড্র করায় এই ম্যাচ ঘিরে আলাদা চাপ ছিল পিএসজির। কারণ হেরে গেলে গ্রæপপর্বে কঠিন পরীক্ষার মধ্যে পড়ে যেতে হতো। এমন ম্যাচে গোল করতে পারায় মেসি নিজেও খুব তৃপ্ত বোধ করছেন, ‘স্কোর করতে পারায় আমি খুব খুশি। স¤প্রতি কয়েকটা ম্যাচ খেলা হয়নি। এখন ধীরে ধীরে মানিয়ে নিচ্ছি। সবচেয়ে বড় যে বিষয় সেটা হলো এখন জয়ের ধারায় থাকা।’
মেসি চ্যাম্পিয়নস লিগে প্রতিটি আসরেই নতুন উচ্চতায় পৌঁছান। সিটির বিপক্ষে গোল করেও চ‚ড়ায় উঠেছেন। টানা ১৭ আসরে গোল করে যৌথভাবে করিম বেনজেমার পাশে বসেছেন। পেছনে ফেলেছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে। শুধু তাই নয় ইংলিশ ক্লাবগুলোর বিপক্ষেও যে কোন খেলোয়াড়ের চেয়ে তার গোল সবচেয়ে বেশি। ৩৫ ম্যাচে ২৭ গোল!
এখন এই ধারাতেই এগিয়ে যেতে চান ৬ বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী, ‘ক্লাবে আমাদের সম্পর্কটা ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। এখন খেলার ধারটা বাড়াতে হবে। ছন্দ ধরে রাখতে হবে।’
তার আগে অবশ্য শুরুতেই পিছিয়ে পড়েছিল সিটি। সেটার অবদান এমবাপের, দারুণ এক দৌড়ে ডানে ঢুকে পড়েছিলেন। এরপর বলটা বাড়িয়েছিলেন নেইমারের দিকে, কিন্তু নেইমার করলেন মিসকিক। সেটা ক্লিয়ার করতে পারলেন না মাহরেজ, ইদ্রিস গায়ে ছিলেন তক্কে তক্কে। দারুণ গোলস্কোরিং ফর্মে থাকা এই মিডফিল্ডার ডান পায়ের বুলেট শটে বল জালে জড়িয়ে দিলেন। তখন ম্যাচের মাত্র ৮ মিনিট।
এরপর প্রথমার্ধে দুইটি বড় ঘটনা ঘটেছে। গোল ফেরানোর সুবর্ণ সুযোগ কিছুক্ষণ পরেই পেয়ে গিয়েছিল সিটি। কিন্তু ডি ব্রæইনের ক্রস থেকে স্টার্লিংয়ের হেড ফিরে আসে পোস্টে লেগে। ফিরতি বলটা অবিশ্বাস্যভাবে কয়েক গজ দূর থেকে আবার বারে লাগিয়ে দেন বার্নাদো সিলভা, গার্দিওলা যেন নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।
এরপর সিটির ভাগ্যটা ভালোই বলতে হবে। গায়েকে ট্যাকল করেছিলেন ডি ব্রæইন, যা ছিল গোড়ালির ওপর। দুই সপ্তাহ আগে এমন একটা চ্যালেঞ্জের জন্য লাল কার্ড দেখেছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ওয়ান বিসাকা। কিন্তু ডি ব্রæইন বেঁচে যান, হলুদ কার্ড দেখেই।
দ্বিতীয়ার্ধে সমতা ফেরানোর জন্য সম্ভাব্য সবকিছুই করেছে সিটি। ডোনারুমা মাহরেজ, স্টার্লিংদের ফিরিয়ে দিয়েছেন, ডি ব্রæইনের শট চলে গেছে বাইরে দিয়ে। আবার ডি ব্রæইনের শটে সেভও করেছেন। ওদিকে ম্যাচসেরা এমবাপ্পে বারবার ভেতরে ঢুকে বিপজ্জনক হয়ে উঠছিলেন। শেষ পর্যন্ত দুই গোলেই ছিল তার সরাসরি অবদান। আর মেসির প্রথম গোলের পাশে লেখা হলো তার অ্যাসিস্ট, আর পিএসজি পেল দারুণ এক জয়। অক্টোবরের ১৯ তারিখ চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ক্লাব ব্রæগের বিপক্ষে মাঠে নামবে ম্যানসিটি। একই রাতে লিপজিগের বিপক্ষে মাঠে নামবে লিওনেল মেসির দল।
পিএসজি ২-০ ম্যানসিটি
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।