নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে গত মঙ্গলবার চ্যাম্পিয়নস লিগে কেমন খেলেছেন লিওনেল মেসি? গত কয়েক দিনে ফুটবল বিশ্ব ভাগ হয়ে গেছে এই প্রশ্নের উত্তরে। কারও চোখে মেসি একেবারে চোখ না ধাঁধালেও একেবারে খারাপও খেলেননি। পেনাল্টি কাজে লাগাতে না পারার ব্যর্থতা ছিল, তবে এর বাইরে দলের খেলা গড়ে দেওয়ায়, এমবাপ্পে-নেইমার-ডি মারিয়াদের গোলের সুযোগ তৈরি করে দেওয়ায় দারুণ অবদান ছিল আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের।
আবার কারও চোখে মেসি চ্যাম্পিয়নস লিগে পিএসজির জার্সিতে নিজের ছয় ম্যাচের মধ্যে সবচেয়ে হতশ্রী পারফরম্যান্সই উপহার দিয়েছেন। ফরাসি ক্রীড়া দৈনিক লে’কিপই যেমন মেসির পারফরম্যান্সের মূল্যায়নে ১০-এ মাত্র ৩ দিয়েছিল! এ নিয়ে আবার লে’কিপেরই সমালোচনা করেছেন মেসির সাবেক আর্জেন্টাইন সতীর্থ সার্জিও আগুয়েরোসহ অনেকে।
৩৪ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের সমালোচনাকারীদের সমালোচনায় এবার এগিয়ে এসেছেন মেসির সাবেক আরেক সতীর্থ- সেস ফ্যাব্রেগাস। মেসির সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে ৩৪ বছর বয়সী স্প্যানিশ মিডফিল্ডারের সাবধানবাণী, মেসি এমন একজন, যিনি মুহূর্তের মধ্যে সমালোচনাকারীদের কথা গিলতে বাধ্য করতে পারেন! বার্সেলোনায় ২০১৪-১৫ মৌসুমের উদাহরণ টেনে এনে ফ্যাব্রেগাস পিএসজিকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন, ওই মৌসুমে প্রথম ভাগে সমালোচনা, জড়তাকে পেছনে ফেলে বার্সেলোনাকে যেভাবে তিন শিরোপার ‘ত্রিমুকুট’ জিতিয়েছিলেন, তেমনটা এবার পিএসজিতেও করে দেখাতে পারেন মেসি! অতি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়াতেই হয়তো, ফ্যাব্রেগাস ভুলেই গেছেন যে এই মৌসুমে পিএসজির পক্ষে আর ত্রিমুকুট জেতা সম্ভবই নয়। ফরাসি লিগ শিরোপা পিএসজির পকেটেই বলা যায়, চ্যাম্পিয়নস লিগেও পিএসজি শিরোপার বড় দাবিদার দলগুলোর একটি। কিন্তু এ তো দুটি শিরোপা হলো, আরেক শিরোপা-ফরাসি কাপ তো আর এবার জেতা সম্ভব নয় মেসিদের পক্ষে। ১ ফেব্রুয়ারি টাইব্রেকারে নিসের বিপক্ষে হেরে এবার ফ্রেঞ্চ কাপের শেষ ষোলোতেই বাদ পড়েছে পিএসজি! ট্রেবল জেতা তাই গাণিতিকভাবেই অসম্ভব।
আগে ফ্রান্সে ঘরোয়া শিরোপা তিনটি ছিল, লিগ ও ফ্রেঞ্চ কাপের সঙ্গে ছিল ফ্রেঞ্চ লিগ কাপও। কিন্তু খেলোয়াড়দের ওপর ধকল বেড়ে যাওয়া আর ইউরোপের ফুটবলে শীর্ষ দেশগুলোর সঙ্গে মিল রাখতে ২০২০ সাল থেকে লিগ কাপ বাদ দেওয়া হয়েছে। ফ্যাব্রেগাস হয়তো অত হিসাব-নিকাশে যাননি। শুধু বার্সেলোনার ২০১৪-১৫ মৌসুমের ‘ট্রেবলের’ উদাহরণ টেনে এনে বলেছেন, ‘(বার্সেলোনার কোচ হিসেবে) লুইস এনরিকের প্রথম মৌসুমের কথা মনে আছে। সেবারও মেসির অনেক সমালোচনা হয়েছিল। দলে একটা সংকটের মতো পরিস্থিতি ছিল। এরপর সেখান থেকে ঘুরে বার্সেলোনা ট্রেবল জিতল। এখানেও তেমন কিছু হতেই পারে।’
এরপর এল মেসির সমালোচনাকারীদের প্রতি ফ্যাব্রেগাসের সতর্কবাণী, ‘বুঝতে পারছি (সমালোচনা করে) কাগজের কাটতি বাড়াতে হয়। তবে আমরা এমন একজন খেলোয়াড়ের কথা বলছি, যে কিনা সেকেন্ডের মধ্যে আপনাকে কথা গিলতে বাধ্য করার ক্ষমতা রাখে। মেসির সমালোচনা করার ক্ষেত্রে আপনাকে একটু সতর্ক থাকতেই হবে। এখনো অনেক কিছু দেখার বাকি।’
বার্সেলোনায় একসময় মেসির সঙ্গে জুটি বেঁধে খেলেছেন, মেসির বাতাসে ভাসানো লবে ফ্যাব্রেগাসের গোল তো বার্সেলোনা সমর্থকদের এখনো দীর্ঘশ্বাস ঝরায়। মেসি-জাভি-ইনিয়েস্তাদের ভিড়ে ফ্যাব্রেগাসের মতো একজনকে যে বার্সেলোনা বেশি দিন জায়গা দিতে পারেনি! বার্সেলোনার পর চেলসি ঘুরে ফ্যাব্রেগাসেরও ঠিকানা এখন ফ্রান্সই—খেলছেন মোনাকোতে। তবে পুরোনো সতীর্থের প্রতি টান থেকেই হোক, বা নিখাদ ফুটবল বিশ্লেষণে, ফ্যাব্রেগাস রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে মেসিকে পাস মার্কই দিচ্ছেন, ‘অনেকের কাছ থেকে অনেক কথাই শুনছি। নিশ্চিত, তারা রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে মেসিকে খেলতে দেখেনি। ও চোখধাঁধানো না খেললেও ভালো ম্যাচই কেটেছে ওর।’ কোন কোন দিক থেকে ভালো, সেটির ব্যাখ্যায় ফ্যাব্রেগাস বললেন, ‘প্রথমার্ধে ও এমন একটা পাসে এমবাপ্পেকে গোলের সুযোগ তৈরি করে দিল, যেটা মাঠের বাকি ২১ জনের কেউই করতে পারত না। হ্যাঁ, ও একটা পেনাল্টি মিস করেছে, কিন্তু তাতে কী হয়েছে! শুধু এটার জন্যই ওর এত সমালোচনা আমার কাছে হাস্যকর মনে হচ্ছে।’ ফ্যাব্রেগাস কথা বলেছেন মেসির পিএসজি সতীর্থ কিলিয়ান এমবাপ্পের ভবিষ্যৎ নিয়েও। বলতে গেলে এমবাপ্পের রিয়ালে যাওয়া অনেকটা নিশ্চিত ধরে নিচ্ছেন ফ্যাব্রেগাসও। তবে সে আলোচনায়ও বার্সেলোনাকে টেনে এনে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো আর রিয়াল মাদ্রিদকে খোঁচা দিতে ভোলেননি ২০১০ বিশ্বকাপজয়ী স্প্যানিশ মিডফিল্ডার। ফ্যাব্রেগাসের চোখে, এমবাপ্পে রিয়ালে গেলেও সেটা বার্সাকে রুখতে পারবে না, ‘জীবন এমনই। রিয়াল মাদ্রিদ তো ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকেও কিনেছিল কিন্তু তাতে বার্সেলোনার শিরোপা জয় তো বন্ধ হয়ে যায়নি। অনেক বড় একজন খেলোয়াড় তাদের (বার্সেলোনা) চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের ক্লাবে যাচ্ছে, তবে (বার্সা কোচ) জাভির হাতেও অনেক তরুণ প্রতিভা আছে। বার্সেলোনা ভালো হাতেই পড়েছে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।