প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
প্রয়াত বর্ষীয়ান অভিনেতা দিলীপ কুমার। বুধবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। তার মৃত্যুতে চলচ্চিত্রের একটা যুগের অবসান ঘটল। চল্লিশের দশকে ভারতীয় সিনেমায় পা রেখেছিলেন দিলীপ কুমার । অচিরেই হয়ে উঠলেন বলিউডের স্বপ্নের নায়ক । তার ঝুলিতে সবচেয়ে বেশি অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার রেকর্ডও রয়েছে । তবে শুরুটা মসৃণ ছিল না মোটেই । ভারতের প্রথম ‘মেথড অভিনেতা’, ট্র্যাজেডি কিং ছাড়াও আরো একটি পরিচয় রয়েছে দিলীপ কুমারের। তবে এগুলো তার আসল পরিচয় না।
১৯২২ সালের ১১ ডিসেম্বর বর্তমান পাকিস্তানের পেশোয়ারে জন্মগ্রহণ করেন দিলীপ কুমার। তার আসল নাম মোহাম্মদ ইউসুফ খান। হ্যাঁ অভিনেতার আসল নাম মহম্মদ ইউসুফ খান, যা অনেকেই জানেন না। তার বাবা লালা গুলাম আলি ছিলেন ফল ব্যবসায়ী। বাগান ও বেশ কিছু জমিও ছিল তাদের । মা আয়েশা বেগম ছিলেন গৃহবধূ । নাসিকের দেওলালির বার্নেস স্কুল থেকে পড়াশোনা করেন তিনি । রাজ কাপুর ছিলেন তাঁর ছোটবেলার বন্ধু । একসঙ্গে বেড়ে ওঠা তাদের ।
১৯৪০ সালে বাবার সঙ্গে ঝামেলা করে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান ইউসুফ । পুনেতে এসে এক পার্সি ক্যাফের মালিকের মাধ্যমে ক্যান্টিন কন্ট্রাক্টরের সঙ্গে যোগাযোগ হয় তার । ইংরাজি ভাষায় তাঁর অসাধারণ দক্ষতা ছিল । লেখা ও কথা সবটাই ইংরাজিতে করতেন তিনি । এতেই মুগ্ধ হন ক্যান্টিন কন্ট্রাক্টর । আর্মি ক্যান্টিনে স্টান্ডুইচ স্টল বসানোর সুযোগ করে দেন । এই ভাবে ৫ হাজার টাকা জমান ইউসুফ ওরফে দিলীপ কুমার । সে সময় এই টাকার অনেক মূল্য । বাড়ি ফিরে যান ওই টাকা নিয়ে ।
এরপর ১৯৪২-এ তার বাবার সহকারী ডঃ মাসানি দিলীপকে নিয়ে যান বম্বে টকিজে। সেখানে দেবিকা রানির সঙ্গে পরিচয় করান তার । সে সময় বম্বে টকিজের মালকিন ছিলেন তিনি । ১২৫০ টাকায় কাজ শুরু করেন দিলীপ । উর্দু ভাষায় তার দক্ষতার জন্য চিত্রনাট্য লেখার বিভাগে কাজ দেওয়া হয় তাকে । দেবিকার পরামর্শেই রাতারাতি ইউসুফ থেকে দিলীপ কুমার হয়ে যান তিনি । দেবিকা এরপর তাঁকে ১৯৪৪ সালে লিড রোলে চান্স দেন । ছবির নাম ছিল ‘জোয়ার ভাঁটা’ ।
নিজের আত্মজীবনীতে এই বিষয় নিয়ে লিখেছেন অভিনেতা। তিনি জানান, প্রথমে দেবিকা রানিই তাকে নাম বদলানোর পরামর্শ দেন। বলিউডে তার অভিষেকের আগে এমন একটি নাম তাকে নিতে বলেন যে নামে দর্শক তাকে চিনবে। স্ক্রিনে তার রোম্যান্টিক আন্দাজের সঙ্গে মিলিয়ে ‘দিলীপ কুমার’ নামটি তিনিই পছন্দ করেন।
তবে নাম পরিবর্তন করার পেছনে একটি প্রধান কারণ ছিল বাবার মারের হাত থেকে বাঁচা। দিলীপ কুমার নিজের আত্মজীবনীতে লেখেন, তার বাবা অভিনয় পেশার একেবারে বিরোধী ছিলেন। এসব ‘নাটক’ মনে হত তার। উপরন্তু বন্ধুপুত্র রাজ কাপুর অভিনয়ে পা রাখায় আরোই অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন তিনি।
বেশিরভাগ ট্র্যাজেডি ছবিতেই নায়ক ছিলেন দিলীপ । তার নামই হয়ে গিয়েছিল ‘ট্র্যাজিক কিং’ । এক সময় নিজেও অবসাদে ভুগতে শুরু করেন । এরপর মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শে একটু হালকা চালের চরিত্র শুরু করেন দিলীপ । যেমন, ‘আন’, ‘আজাদ’, ‘কহিনূর’ । তার কাছে ব্রিটিশ পরিচালক ডেভিড লিনের অফারও এসেছিল ।‘লরেন্স অব অ্যারাবিয়া’ ছবিতে শেরিফ আলির রোলের জন্য তাকে বেছেছিলেন ডেভিড । কিন্তু সেই অফার ফিরিয়ে দেন দিলীপ সাহাব । তখন অফার যায় ইজিপ্সিয়ান অভিনেতা ওমর শরিফের কাছে । একবার এলিজাবেথ টেলরের বিপরীতেও কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন কুমার । কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর তা হয়নি ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।